ভারতে প্রতি ২২ মিনিটে একজন করে নারী ধর্ষণের শিকার হয়। যৌন নির্যাতনে হিন্দি সিনেমাগুলোতে তুলে ধরা চরিত্রগুলোর উৎসাহের অভিযোগ রয়েছে। যৌন নির্যাতনে বলিউডের সিনেমাগুলোর অবদান কতখানি? এ বিষয়টি নিয়ে এক বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে বিবিসি।
তবে এতে থামেনি ভারতের যৌন নির্যাতনের ঘটনা। একের পর এক অসংখ্য ধর্ষণের ঘটনা ঘটেই চলেছে ভারতে। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ২০ বছর বয়সী এক নারীকে স্থানীয় মুরুব্বিদের নির্দেশে ধর্ষণের শিকার হতে হয়।
এসব ঘটনার ফলে একটা প্রশ্ন উঠে এসেছে। ভারতে জনপ্রিয় বলিউডের সিনেমাগুলো কি ইন্ধন দিচ্ছে এমন সব ধর্ষণের ঘটনায়? ভারতের সিনেমায় নারীদের কী এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যে, দর্শকরা ধর্ষণে উৎসাহ পায়?
এ প্রসঙ্গে ‘শোলে’ নামে একটি সিনেমার কথা বলা যায়। সিনেমাটি সম্প্রতি থ্রিডিতে মুক্তি পেয়েছে। সিনেমাটিতে এক পুরুষের পদক্ষেপকে তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করে নারীটি। কিন্তু পরে ধীরে ধীরে তিনি সেই পুরুষের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে সেই নারীর ‘না’ মানে বাস্তবে ‘হ্যাঁ’-এমন ধারণাই সেখান থেকে উঠে আসে। এমন দৃশ্য ভারতীয় প্রচুর সিনেমায় দেখা যায় এবং পুরুষদের এ ধরনের আগ্রাসী চরিত্র বলিউডে খুবই গ্রহণযোগ্য।
সমালোচকরা অনেকেই পর্দায় পুরুষ ও নারীর ভূমিকাকে বাস্তব জীবনে যৌন নির্যাতনে ইন্ধনদাতা হিসেবে চিহ্নিত করছেন। তবে এ ক্ষেত্রে শাহরুখ খান কোনো সম্পর্ক দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘আপনারা হয়তো সিনেমায় ভায়োলেন্সের দৃশ্য দেখে তা রাস্তায় চলে আসছে এমন মনে করছেন। কিন্তু আমি কখনো হাসির সিনেমাকে রাস্তায় চলে আসতে দেখিনি সেগুলো হাসির বলে। এ কারণে আপনারা কীভাবে পর্দায় নারীর প্রতি আচরণ বাস্তবে চলে আসার জন্য বলিউডকে দোষ দেন? আমার এমনটা মনে করি না একেবারেই।’
এ ছাড়া আরো অভিযোগ রয়েছে বলিউডের সিনেমা ও বিভিন্ন টিভি প্রোগ্রামে বিলাসবহুল এক জগতের দৃশ্য তুলে ধরা হয়। তবে এ দৃশ্য বাস্তবতা থেকে ভিন্ন। এ ধরনের নারীরা শহুরে কর্মজীবনে প্রবেশের পর তা বহু পুরুষের মাঝে বঞ্চিতবোধ জাগিয়ে তোলে, যার পরিণতি হিসেবে চলে আসে যৌন অপরাধ।
ভারতীয় শীর্ষস্থানীয় পরিচালক মিরা নাইর বলেন, ‘যখন কোনো আধুনিক নারী সিনেমা থেকে বেরিয়ে এসে কোনো বাসে চড়ে তখন তরুণ পুরুষের চোখে ফুটে উঠে ঈর্ষা ও রাগ। তার মনোভাব হয়, এক কর্মজীবী নারী আমি না থাকতে এত দূরে যায় কিভাবে?’