চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ঃ সবুজ ক্যাম্পাসে ১৭৬ প্রজাতির পাখি

0

20131010015543_CU ঝুলন্ত সেতু  pic 09.10.13পাখির অভয়ারণ্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। সবুজ এ ক্যাম্পাসে সংসার পেতেছে প্রায় ১৭৬ প্রজাতির পাখি। পাখি প্রজাতির এ সংখ্যাই জানিয়ে দেয় এ ক্যাম্পাসে  পাখির জনপ্রিয়তা কত!

বাংলাদেশে পাখি প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৭০০। এর মাঝে ৩৬০টি স্থায়ী এবং ৩৪০টি পরিযায়ী। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে  প্রায় ১৭৬ প্রজাতির পাখির দেখা মেলে।
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের এক জরিপে দেখা যায়, এই ক্যাম্পাসে মোট একশত ৫০ প্রজাতির পাখির বসতি। যার অন্তত আশি প্রজাতি দেশীয়।
পাখির নিরাপদ আবাসস্থল হয়ে উঠতে পারেনি এই ক্যাম্পাস। তবে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না থাকা আর  অসচেতনতার অভাবে বিদেশি গাছ রোপণের ফলে ক্যাম্পাস এলাকা পাখি বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দুই বছর আগেও ক্যাম্পাসের কাটা পাহাড়ে ছিল ৫০ প্রজাতির পাখি। সবুজ পাহাড়ের গায়ে ছোট ছোট খোপ করে বাসা বুনতো”সাদামাটানাকুটি”। আর”সুঁইচোরার” ঝাঁক চোখে পড়তো ক্যাম্পাসের শহীদমিনারের পেছনের এলাকা, উদ্ভিদ উদ্যান ও ফরেস্ট্রি ইনস্টিটিউট এলাকায়। সারা ক্যাম্পাস জুড়ে ছিল মথুরা, মাছরাঙ্গা, জংলি মুরগী, চড়ই, শালিক আর ময়নার কলকাকলি। কিন্তু এখন এই পাখিগুলো খুব একটা চোখে পড়ে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখি ক্যাম্পাসের কাটাপাহাড়, ফরেস্টি ইনস্টিটিউটের সংরক্ষিত এলাকা, ছাত্র হলসংলগ্ন এলাকায় গত কয়েক বছর ধরে লাগানো হয়েছে। এ্যাকাশিয়া আর ইউকেলিপটাস প্রজাতির গাছ। দ্রুত বর্ধনশীল হলেও এসব গাছ অধিক পানি শোষণ করে। ফলে অন্য কোন গাছ এর পাশে বেড়ে উঠতে পারে না। দেশীয় পাখিরাও এসব গাছে বাসা বাধে না।
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আসমত এর মতে,ক্যাম্পাস ইন্দো বার্মা হট স্পট এলাকায় হওয়ায় প্রাণীবৈচিত্র্যের সম্ভাবনা বেশি । কিন্তু বিদেশি প্রজাতির গাছের কারণে পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে । বেশি করে দেশি গাছ লাগানোর মাধ্যমে পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল গড়ে তুলতে হবে। পাখি সপ্তাহ এবং পাখি উৎসব করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রাণিবিদ্যা বিভাগকে দায়িত্ব দিলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তা আন্তরিকতার সাথেই পালন করবে বলে মনে করেন তিনি।

তবে পাখি গবেষক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. গাজী সৈয়দ আসমতের দেওয়া তথ্যমতে, ১৭৬ প্রজাতির পাখির অভয়ারণ্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। দেশীয় পাখিদের নিয়ে কোন জরিপ না হওয়ায় সংখ্যাটা বলা মুশকিল। তবে পাখির সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক কমেছে। ক্যাম্পাসের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্ট না হলে এই সংখ্যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More