সপ্তাহজুড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) উভয় শেয়ারবাজারের লেনদেনে স্বস্তিতে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। উভয় শেয়ারবাজারের লেনদেন উত্থান-পতন থাকলেও লেনদেনে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ লক্ষ করা গেছে। সপ্তাহের শেয়ারবাজার বিশ্লেষণ করে শেয়ারনিউজ২৪.কমের কাছে এমন অভিজ্ঞতার কথা জানান বিনিয়োগকারীরা।
তারা জানান, সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর লেনদেন ও সূচক কমলেও সিএসই্তে বেড়েছে। তবে এরপরও গত ৩ সপ্তাহের লেনদেনে বিনিয়োগকারীরা সন্তুষ্ট। ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজারের কারণে লেনদেনের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। লেনদেন ইতিবাচক ধারায় এগোচ্ছে বলে মনে করেন তারা। বিনিয়োগকারীরাএ ইতিবাচক লেনদেনের ধারাবাহিকতা চান বলে জানান।
তারা আরো জানান, আমরা অনেক হারিয়েছি। তাই হারানো পুঁজি সমন্বয় করতে চাই। আর হারাতে চাই না। তাই শেয়ারবাজারের ইতিবাচক রূপে দেখে বিনিয়োগের প্রতি প্রত্যাশা বাড়ছে তাদের।
কয়েকটি কোম্পানির পরিচালকরা জানান, কয়েক বছর ধরে শেয়ারবাজারে নিম্নমুখী লেনদেন হয়েছে। তবে বর্তমানের কয়েক সপ্তাহের শেয়ারবাজারে লেনদেনের ব্যতিক্রম। শেয়াবাজারে ঊর্ধ্বগতি ধারা স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে। ঊর্ধ্বগতির এ ধারা বিনিয়োগকারীরা ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছেন। নিষ্ক্রিয় বিনিয়োগকারীও শেয়ারবাজারে ফিরে আসছেন। এদের মধ্যে অনেকে পর্যবেক্ষণ করছেন।
পরিচালকরা বলেন, এ ধরনের ঊর্ধ্বগতি ধরে রাখতে হবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার। কারণ কয়েক বছর ধরেই একটি মহল শেয়ারবাজার থেকে ফায়দা লুটে নিচ্ছে। এদের ইশারায় শেয়ারবাজারে লেনদেন নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। তাই এ ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজারে যেন অটোসিস্টেমে লেনদেন হয়, সেদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থারনজর দিতে হবে। তারা বলেন, লেনদেন ইতিবাচক রূপে আনতে সবাইকে সক্রিয় হতে হবে। পাশাপাশি একটি মহল শেয়ারবাজার থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতে তৎপর রয়েছে। তারা বিভিন্ন গুজব ছড়াচ্ছে। তাই এ মহলকে নিয়ন্ত্রণে বিএসইসি ও ডিএসইকে সক্রিয় হতে হবে নতুবা শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা আসবে না। জানা গেছে, গত সপ্তাহে ডিএসইর গড় লেনদেন ছিল ৬৫৮ কোটি ১০ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহের গড় লেনদেন ছিল ৬৭২ কোটি ২১ লাখ টাকা। এরও আগের সপ্তাহের গড় লেনদেন হয়েছে ৫৪৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
গেল সপ্তাহে সিএসইর গড় লেনদেন ছিল ৫১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহের গড় লেনদেন ছিল ৫১ কোটি ৯ লাখ টাকা। এরও আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন ছিল ৩৯ কোটি ৬ লাখ টাকা।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহের ৪ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ৬৩২ কোটি ১৩ লাখ, বুধবার ৬৪২ কোটি, মঙ্গলবার ৭৪২ কোটি ৫৩ লাখ, সোমবার ৬১৫ কোটি ২১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।
আগের সপ্তাহের ৫ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ৬৩২ কোটি ৩২ লাখ, বুধবার ৪৯৩ কোটি ২১ লাখ, মঙ্গলবার ৬৮১ কোটি ৩৭ লাখ, সোমবার ৭৯০ কোটি ১৮ লাখ, রোববার ৭৬৩ কোটি ৯০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।
এরও আগের সপ্তাহের ৫ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ৫৮৮ কোটি ১ লাখ, বুধবার ৬৫১ কোটি ৮০ লাখ, মঙ্গলবার ৪৯১ কোটি ৮৬ লাখ, সোমবার ৫৬০ কোটি ৪৯ লাখ, রোববার ৪২৮ কোটি ৭০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।
রমজানের শেষ সপ্তাহে গড় লেনদেন ছিল ৩২১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এ সপ্তাহের ৫ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ৩৩৯ কোটি ৫৩ লাখ, বুধবার ৩১৮ কোটি ৮৬ লাখ, মঙ্গলবার ৩৭৫ কোটি ৬৪ লাখ, সোমবার ৩০৯ কোটি ২ লাখ, রোববার ২৬৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।
এর আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন ছিল ২০৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এ সপ্তাহের ৫ কার্যদিবসের লেনদেনের মধ্যে বৃহস্পতিবার ২৫৩ কোটি ২১ লাখ, বুধবার ২৫৬ কোটি ৪৫ লাখ, মঙ্গলবার ১৯৩ কোটি ২৭ লাখ, সোমবার ১৮৬ কোটি ১১ লাখ, রোববার ১৪৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।
এরও আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন ছিল ১৯২ কোটি ৩ লাখ টাকা। এ সপ্তাহের ৫ কার্যদিবস লেনদেনের মধ্যে বৃহস্পতিবার ১৭৭ কোটি ২১ লাখ, বুধবার ১৫৭ কোটি ৪৯ লাখ, মঙ্গলবার ২১৮ কোটি ৭৮ লাখ, সোমবার ১৯১ কোটি ৫০ লাখ, রোববার ২১৫ কোটি ১৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।
রমজানের প্রথম সপ্তাহে গড় লেনদেন ছিল ৩২১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এ সপ্তাহের ৪ কার্যদিবস লেনদেনের মধ্যে বৃহস্পতিবার ২৬১ কোটি ৮৫ লাখ, বুধবার ২৪৭ কোটি ৮৫ লাখ, সোমবার ৩৮৭ কোটি ২১ লাখ, রোববার ৩৯০ কোটি ১২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।
সিএসই সূত্রে জানা গেছে, গেল সপ্তাহের ৪ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ৪৮ কোটি ৬৮ লাখ, বুধবার ৪৯ কোটি ৩৯ লাখ, মঙ্গলবার ৫৪ কোটি ৭৪ লাখ, সোমবার ৫৪ কোটি ১৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।
আগের সপ্তাহের ৫ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ৪২ কোটি ৬৪ লাখ, বুধবার ৩৩ কোটি ৫১ লাখ, মঙ্গলবার ৪৬ কোটি ৭২ লাখ, সোমবার ৫৪ কোটি ৫ লাখ, রোববার ৭৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।
এরও আগের সপ্তাহে সিএসইতে গড় লেনদেন ছিল ৩৯ কোটি ৬ লাখ টাকা। সপ্তাহের ৫ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ৪০ কোটি ৯৮ লাখ, বুধবার ৪৪ কোটি ৮১ লাখ, মঙ্গলবার ৩৬ কোটি ৬০ লাখ, সোমবার ৪০ কোটি ৯৯ লাখ, রোববার ৩১ কোটি ৯২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।
রমজানের শেষ সপ্তাহে গড় লেনদেন ছিল ২৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা। সপ্তাহের ৫ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ৩৭ কোটি ৭২ লাখ, বুধবার ৩৪ কোটি ৭৮ লাখ, মঙ্গলবার ২৭ কোটি ৫২ লাখ, সোমবার ২৪ কোটি ২৭ লাখ, রোববার ২২ কোটি ১৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।
এর আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন ছিল ১৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা। সপ্তাহের ৫ কার্যদিবস লেনদেনের মধ্যে বৃহস্পতিবার ২২ কোটি ৬৫ লাখ, বুধবার ২২ কোটি ১৫ লাখ, মঙ্গলবার ২২ কোটি ৫ লাখ, সোমবার ১৪ কোটি ১৭ লাখ, রোববার ১৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।
এরও আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন ছিল ৮৮ কোটি ১০ লাখ টাকা। সপ্তাহের ৫ কার্যদিবস লেনদেনের মধ্যে বৃহস্পতিবার ১৩ কোটি ৫০ লাখ, বুধবার ১২ কোটি ৫৪ লাখ, মঙ্গলবার ২৩ কোটি ৩০ লাখ, সোমবার ১৯ কোটি ৪৮ লাখ, রোববার ১৯ কোটি ২৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।
রমজানের প্রথম সপ্তাহে গড় লেনদেন ছিল ২৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। সপ্তাহের ৪ কার্যদিবস লেনদেনের মধ্যে বৃহস্পতিবার ২৩ কোটি ৭০ লাখ, বুধবার ২০ কোটি ৩৮ লাখ, সোমবার ২৪ কোটি ৫৬ লাখ, রোববার ৩২ কোটি ৫৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।