ঢাবিতে ফের সক্রিয় ভর্তি জালিয়াত চক্র!

0

uc0wtjwbঢাকা: ৫ সেপ্টেম্বর ব্যবসায় শিক্ষার অধীনে ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার মধ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৪-১৫ শিক্ষা বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এ বছর পাঁচটি ইউনিটে মোট ৬ হাজার ৫৮২টি আসনের জন্য মোট আবেদন করেছে ৩ লাখ ১ হাজার ১৪৮ জন শিক্ষার্থী।

ভর্তি আবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ বছর প্রতি আসনের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে ৪৬টি। যা গত বছরের চেয়ে আসন প্রতি সাতটি আবেদন বেশি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ‘চ’ ইউনিটের প্রতি সিটের বিপরীতে ১০৯ জন্য এবং সর্বনিম্ন ‘খ’ ইউনিটের অধীনে প্রতি সিটের অধীনে ২০ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছে।

এদিকে আসন প্রতি প্রতিযোগীর সংখ্যা যাই হোক থেমে নেই ঢাবির ভর্তি জালিয়াতি চক্র।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, কার্যকারী ও বাস্তবসম্মত ব্যবস্থার অভাবে কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে প্রতি বছর অভিনব কৌশল আবিষ্কার করে জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে ভর্তি করিয়ে দেয়ার শর্তে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জালিয়াত চক্র। এর ফলে একদিকে যেমন পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে তেমনি প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বরাবরের মত এবারও স্নাতক সম্মানে ভর্তি পরীক্ষায় ‘ডিজিটাল জালিয়াতি’ ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জালিয়াতি ঠেকাতে পরীক্ষার হলে শুধু ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিষিদ্ধকরণ ছাড়া আর কোনো পদক্ষেপ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের কেন্দ্রগুলিতে বেশি জালিয়াতি হওয়ায় সেই কেন্দ্রগুলোতে ঢাবির নিজস্ব ভিজিটর বাড়ানো হয়েছে বলে প্রোক্টর সূত্রে জানা গেছে।

সূত্রে জানা গেছে, জালিয়াত চক্রের সদস্যরা পরীক্ষা কেন্দ্রের কর্মকর্তা, শিক্ষক বা কর্মচারীর যোগসাজশে প্রশ্ন বের করে নিয়ে আসে। এরপর দক্ষ কিছু ব্যক্তি কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুরো প্রশ্নপত্র সমাধান করেন। এসব সমাধান মুঠোফোনে খুদে-বার্তার মাধ্যমে চুক্তিবদ্ধ পরীক্ষার্থীর কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তাই এ বছরও ভর্তি পরীক্ষায়ও মুঠোফোনে উত্তর সরবরাহ করতে জালিয়াত চক্রগুলো সক্রিয় রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এ সম্পর্কে প্রোক্টর জানিয়েছেন এবার যার হাতেই মোবাইল ফোন পাওয়া যাবে তাকেই বহিষ্কার করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও  জানান, ঘুরে ফিরে হাতে গোনা দুএকটা জালিয়াতি চক্রই প্রশ্ন জালিয়াতের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু বিভিন্ন সময় ধরা পড়লেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তি মূলক ব্যবস্থা না নেয়ায় বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।

গত তিন বছরের ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল পদ্ধতিতে জালিয়াতির দায়ে বহু শিক্ষার্থীকে আটক করা হলেও কোনো ধরনের শাস্তি না দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

ভর্তি পরীক্ষাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরীক্ষায় জালিয়াতি বন্ধ করতে ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় পরীক্ষার হলে মুঠোফোন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু জালিয়াত চক্রগুলো কেন্দ্রগুলোর শিক্ষক ও নিরাপত্তারক্ষীদের অর্থ দিয়ে তাদের চুক্তিবদ্ধ শিক্ষার্থীদের মুঠোফোন নেয়ার ব্যবস্থা করে দেয় বলে অভিযোগ আছে।

এ ছাড়া কিছু কেন্দ্রে উত্তরপত্র পূরণ করে তা শিক্ষকদের মাধ্যমে জমা দেয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল বডির একটি সূত্র জানায়, জালিয়াতির কারণে গত বছর আটক হওয়া একটি জালিয়াত চক্রের সবাই জামিনে বেরিয়ে এসেছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এবারও সক্রিয় আছে।

ভর্তি জালিয়াতি সম্পর্কে জানাতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর বাংলামেইলকে বলেন, ‘আমরা এবার আরও সর্তক হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরের যে কেন্দ্রগুলো আসে সেগুলোতে পরিদর্শক বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও পরীক্ষার হলে ক্যালকুলেটরসহ সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিষিদ্ধ।’

এমন কী কেউ বড় মাপের ঘড়ি নিয়েও পরীক্ষার হলে ঢুকতে পারবেন না। কোনো পরীক্ষার্থীর কাছে নিষিদ্ধ কিছু পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে বহিষ্কার করা হবে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, ‘যদি পরীক্ষার হলে কোনো কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More