বিএনপি জোটের লাগাতার অবরোধ-হরতালের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কোনো মূল্যে ক্লাস-পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
এছাড়া হরতাল-অবরোধের মধ্যে শিক্ষাখাতের ক্ষতি পোষাতে প্রয়োজনে শুক্র-শনিবার ছাড়াও অন্য সরকারি ছুটির দিনে শিক্ষা কার্যাক্রম চালাতে বলেছে বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তদারককারী এই প্রতিষ্ঠান।গত ৫ জানুয়ারি থেকে লাগাতার অবরোধ এবং এরপর প্রায় লাগাতার হরতালের মধ্যে রোববার সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে এক সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী এ নির্দেশনা দেন।
বিরোধী জোটের হরতাল-অবরোধের প্রেক্ষাপটে নৈরাজ্য বন্ধ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সরকারকে অন্তবর্তীকালীন আদেশ দিয়ে রুল জারি করে হাই কোর্ট।
ওই রুলের আলোকে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে হরতাল-অবরোধের মধ্যে ক্লাস-পরীক্ষা চালানোর নির্দেশনা এল।
এর আগে শনিবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি হরতাল-অবরোধের মধ্যে ১ মার্চ থেকে ক্লাস-পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ায় ঘোষণা দেয়।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কোনোটিতে ক্লাস-পরীক্ষা চললেও কোনোটিতে সেভাবে চলছে না।
ইউজিসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা মতপার্থক্য ভুলে স্ব স্ব উদ্যোগে হরতাল-অবরোধের সময় বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখা এবং ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছেন।
তবে হরতালের দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চালু রাখা যায় না জানিয়ে কয়েকজন উপাচার্য ক্লাসের সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
অবরোধকারীদের হুমকিতে গ্রন্থাগারে তালার এই চিত্র শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে আজাদ চৌধুরী বলেন, “যদি পেট্রোল বোমা মেরে শিক্ষা কার্যক্রম ধ্বংস করা যায় তাহলে বাংলাদেশ আফগানিস্তান, সিরিয়া বা ইরাকের মতো হবে।”
সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক জানান, হরতাল-অবরোধেও তার বিশ্ববিদ্যালয়ে শতভাগ ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক খালেদা একরাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল হক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ সভায় বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আমিনুল হক ভূঁইয়া, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রুহুল আমিন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ কে এম নুর উন নবী, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. হারুনর রশীদ খান, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহিত উল আলম সভায় উপস্থিত ছিলেন।
ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরীও এই সভায় ছিলেন।
এছাড়া ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক আবুল হাশেম, ইউজিসির সচিব মো, খালেদ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, ডীন এবং ইউজিসর কর্মকর্তারা এই সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এস.কে এম