জাতিসংঘ মহাসচিবের চিঠির জবাব দিয়েছেন বেগম জিয়া

0

ban-ki-moon_70780ঢাকা : জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের দেয়া চিঠির জবাব দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সঙ্কট নিরসনে সংলাপে বসার কথা ব্যক্ত করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার চিঠিতে সরকারি দলের নেতিবাচক মন্তব্যের কথাও তুলে ধরেছেন। জানা গেছে, ‘কয়েকদিন আগে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির এক সদস্য, যিনি বিএনপির কূটনৈতিক বিষয়টি দেখছেন ওই নেতা বিএনপি চেয়ারপারসনের চিঠিটি বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির কার্যালয়ে পৌঁছে দেন। সেখান থেকে চিঠিটি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের মহাসচিবের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিঠি দেয়ার বিষয়টি প্রকাশ হয় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি। যদিও চিঠিটি জাতিসংঘ থেকে তার প্রায় দুই সপ্তাহ আগে পাঠানো হয়। চিঠিতে চলমান সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন সংলাপে বসার আহ্বান জানান বান কি মুন। তবে সংলাপের বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছে সরকার। বিএনপি সংলাপে বসার ব্যাপারে আন্তরিকতার কথা জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের মানবাধিকার সাব-কমিটির শুনানির পর বাংলাদেশ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জাতিসংঘে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। সূত্র বলছে, সেখানে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে করণীয় নিয়ে তাদের প্রস্তাব পাঠানো হয়। বিএনপির নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, ওসমান ফারুকের সাথে জাতিসংঘ কর্মকর্তার বৈঠকে বাংলাদেশে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অবস্থান, বিএনপির চিঠির জবাব এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশসমূহ এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের শুনানির বিষয়ে আলোচনা হয়। ওই সময় বিএনপি নেতা তার দলের সংলাপে বসার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, সংলাপে বসতে তাদের আপত্তি নেই। তারা মনে করেন, সংলাপের মাধ্যমে নতুন নির্বাচনই সঙ্কটের সমাধান করতে পারে। জানা গেছে, বান কি মুনের চিঠির পরও দুই দলের মধ্যে সমঝোতার আভাস না পাওয়া যাওয়ায়, জাতিসংঘের ওই কর্মকর্তা ঢাকা সফর করবেন। সফরে দুই নেত্রীসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে তার বৈঠক করার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাঠানো এক যুক্ত বিবৃতিতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এম ওসমান ফারুক বলেছেন, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের মুখে সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে। তা না করে কোন ছলচাতুরি কিংবা কূটকৌশলের আশ্রয় নিলে শেষ পর্যন্ত তাদের করুণ পরিণতি ডেকে আনবে। গণবিচ্ছিন্ন এই সরকারকে এক ভয়াবহ বিদায়ী দৃশ্যপটের মুখোমুখি করবে। বিবৃতিতে তারা বলেন, সরকারের বুকের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসা জুলুমবাজ স্বৈরশাসকের কবল থেকে দেশবাসীকে মুক্ত করতে বিএনপি চেয়ারপারসন নিজ অফিসের ছোট একটি কক্ষে কার্যত গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। তিনি যেভাবে সেখান থেকে নেতৃত্ব দিয়ে চলছেন, তাতে বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এক স্বর্ণজ্জল অধ্যায় হিসাবেই স্থান পাবে। আমরা অবিলম্বে খালেদা জিয়ার দায়ের হওয়া সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, দেশজুড়ে চলমান গণআন্দোলনের মুখে ‘অবৈধ’ সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আন্দোলন থেকে নিষ্ক্রিয় করার অপকৌশল হিসাবে সাজানো মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নগ্নভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে বর্বোরচিত কায়দায় বিরোধী নেতা-কর্মীদের গুলি চালিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ও নির্যাতনের পথ বেছে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এভাবে সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More