বিএনপি জামায়াতকে খতম করতে চাই: মোহাম্মদ এ আরাফাত

0

114959_1মোহাম্মদ এ আরাফাত: 
জঙ্গিবাদ কারা করছে, কেন করছে তা আমাদের সকলের জানা। জঙ্গিবাদ দমনে আমরা সকলে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। গণতন্ত্রের নামে যারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছে, তা আমরা মেনে নিতে পারি না। শক্তভাবে সন্ত্রাসীদের দমন করা উচিত। একই সঙ্গে জনমত গঠনও করতে হবে। ক্ষেত্র বিশেষে আমরা দেখি নাগরিক সমাজের পক্ষের একাংশ সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি করে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করতে তারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। রাজনীতিতে সন্ত্রাসী এনে তারা সন্ত্রাসীদের ছড়িয়ে দিচ্ছে। সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে তারা রাজনীতি করছে। যারা নিজেদের জাতীয়তাবাদী বলে দাবি করছে, তারা জামায়াত-শিবির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বাংলাদেশে চালাচ্ছে। বিএনপি এখন তথাকথিত জাতীয়তাবাদী। তারা কোন জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করে, তা আমার জানা নেই। বাঙালি জাতীয়তাবাদী, না পাকিস্তানি জাতীয়তাবাদী- তা বাংলাদেশের মানুষের কাছে সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
দেশ যখন শান্তি ও উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন তারা দেশকে পিছিয়ে নিতে এ ধরনের কাজ করছে। পাকিস্তানের দালাল, যাদের চরিত্র আমরা একাত্তরে দেখেছি, তাদের সহ্য হচ্ছে না বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া। পাকিস্তানের মতো বাংলাদেশকে বানানোর জন্য তারা বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। ছোট একটি উদাহরণ দেই, আমার এক বন্ধুর পাকিস্তানি বন্ধু আছে। তারা ফোনে কথা বলছে। কথার একপর্যায়ে জিজ্ঞেস করছে, এ মুহূর্তে বাংলাদেশে যাওয়া সেফ কি না। তখন আমার বন্ধুটি পাকিস্তানের বন্ধুকে বললেন, তোমাদের দেশের চেয়ে আমাদের দেশ এখনো অনেক নিরাপদ।
বেগম খালেদা জিয়া কোন দিকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাচ্ছে যে একজন পাকিস্তানিও জিজ্ঞেস করছে, এ মুহূর্তে বাংলাদেশে যাওয়া সেফ কি না। আর একজন তো আছেন সুদূর লন্ডনে বসে মানুষকে পোড়ানোর হুকুম দেন। আমরা রাজনীতিতে হরতাল-অবরোধ দেখেছি, হরতাল-অবরোধের কারণে সংঘাত দেখেছি। কিন্তু সেগুলোর সীমাবদ্ধতা ছিল। যারা সাধারণ জনগণ, যারা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত না, তাদেরকে দিনের পর দিন পুড়িয়ে মারছে। পেট্রলবোমা দিয়ে পুড়িয়ে মেরে বার্ন ইউনিটে পাঠাচ্ছে।
আল-কায়েদা যা করছে, আইএস যা করছে, তাদের মতো করছে তথাকথিত জাতীয়তাবাদীরা এবং তাদের দোসর জামায়াত-শিবিররা, যারা এ দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। এ মুহূর্তে সংলাপ হবে কি হবে না, তা নির্ধারণ করবে রাজনৈতিক দলগুলো। সন্ত্রাস নামক যে দানব যার সঙ্গে পলিটিক্যাল পার্টিগুলোর সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। সন্ত্রাস, সন্ত্রাসই। জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসের সঙ্গে মাথা নত করে সংলাপ করা মানে বাংলাদেশকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া। সন্ত্রাসের কাছে একবার মাথা নত করলে, এরপর তাদের যত দাবিদাওয়া থাকবে, তারা বারবার মানুষ হত্যা করবে। তারা ধরেই নেবে, মানুষ হত্যা করলে বাঙালি সব অযৌক্তিক দাবি মেনে নেবে। সন্ত্রাস নামক দানবকে খতম করতে হবে। এর সঙ্গে কোনো আলোচনা নয়। গণমানুষেরা একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা সরকারকে সমর্থন দিতে চাই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সন্তানেরা মারা যায়নি। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়ব। একাত্তরে আমরা লড়েছিলাম, আবার আমরা লড়ব।
জামায়াত-শিবির সাধারণ জনগণকে পুড়িয়ে বার্ন ইউনিটে পাঠাচ্ছে। যারা মানুষকে পুড়িয়ে মারে তাদের আমরা রাজনীতিবিদ বলতে পারি না। তারা জঙ্গিবাদী। রাজনীতির নামে জঙ্গিবাদী আমরা সহ্য করতে পারি না। গোটা জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। যারা গণতন্ত্রের নামে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছে তাদের হাতে কি গণতন্ত্র নিরাপদ? তারা যদি ক্ষমতায় থাকে তখন জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে।
বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ জঙ্গিবাদে চ্যাম্পিয়ন হয়। তারা ক্ষমতায় থাকলে দিনদুপুরে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীকে হত্যা করে। তারা যখন ক্ষমতায় থাকে ১/১১ মতো ঘটনার জন্ম দেয়। তাদের হাতে গণতন্ত্র নিরাপদ নয়। তারা বলছে, গণতন্ত্রের জন্য এসব করছে। মানুষকে হত্যা করে কোন তন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় এরা? এটা কি তাদের তন্ত্র? তারা জঙ্গিবাদী তন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় বাংলাদেশে। আমরা কি বসে বসে দেখব? তা তো হতে পারে না। তারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য, তারা যে অপকর্ম করেছে তা থেকে অব্যহতি পাওয়ার জন্য সে এবং তার পুত্র লন্ডন থেকে বসে বসে সংলাপের কথা বলে। সংলাপ তো টক শো না, কথা বললাম উঠে চলে এলাম। সংলাপ মানে কিছু দেবেন, কিছু ছাড় দেবেন। সংলাপে বসেই যদি দাবি করা হয় আমার পুত্রকে ছাড়তে হবে, যুদ্ধাপরাধীদের ছাড়তে হবে। আমরা কি এই দাবি মেনে নিয়ে সলুøশনে যাব? তখন তারা ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করবে বাংলাদেশে। তখন তারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে, পেট্রলবোমা দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করবে। আমরা যারা শান্তিকামী, তাদেরকে বুঝতে হবে, শান্তি কখনো একা একা আসে না। লড়াই ছাড়া একা একা শান্তি আসবে না। ওদের দাবির কাছে মাথা নত করলে বাংলাদেশ আরও অশান্তিতে ভুগবে। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জঙ্গিবাদ নামক দানবের সঙ্গে আমরা সংলাপ করতে চাই না। এ দানবকে আমরা খতম করতে চাই।
লেখকঃ শিক্ষক, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More