৩ কোটি টাকা নিয়ে নির্মাণ শ্রমিকের হাত ধরে পালিয়েছেন প্রবাসীর স্ত্রী!

0

সন্তানের এমন অপকর্মের ঘটনায় রাস্তায় বের হতে পারি না, মানুষের নানান কথা শুনতে হয়, মাঝে মধ্যে ইচ্ছা করে বিষপান করে মরে যাই, শুধু দুটি নাবালক নাতির কথা চিন্তা করে মরতে পারছি না।

কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সোনাবালুয়া গ্রামের এক বাসিন্দা। তার মেয়ে দুই সন্তানের জননী, সৌদি প্রবাসী স্বামীর প্রায় তিন কোটি টাকা ও ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে বাড়ির নির্মাণ শ্রমিকের হাত ধরে পালিয়ে গেছেন।

সরেজমিন জানা যায়, ২০১০ সালে নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের কুলাসিন গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসীর সঙ্গে একই ইউনিয়নের একটি মেয়ের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর প্রবাসীর স্ত্রীর নামে বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামে একটি জমি ক্রয় করে টিনশেড ঘর তৈরি করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তাদের ঘরে আসে এক কন্যা ও পুত্র সন্তান।

সর্বশেষ গত ৬ বছর আগে ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন প্রবাসী। নিজের স্বপ্নের একটি বাড়ি করার জন্য স্ত্রীর নামে পাঠাতে থাকেন লাখ লাখ টাকা। তার পাঠানো টাকায় গত বছর ওই বাড়িতে একটি তিনতলা ভবন (বিল্ডিং) নির্মাণের কাজ শুরু করেন।

প্রবাসে থাকায় কাজের দেখাশোনা করেন প্রবাসীর স্ত্রী। বাড়ির নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজের দায়িত্ব নেন থোল্লাকান্দি গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার ছেলে নজরুল ইসলাম। স্বামীর অনুপস্থিতিতে বিল্ডিংয়ের নির্মাণ শ্রমিক নজরুল ইসলামের সঙ্গে প্রবাসীর স্ত্রীর পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

সন্তানের এমন অপকর্মের ঘটনায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন প্রবাসীর স্ত্রীর বাবা। তিনি বলেন, গত ২২ জানুয়ারি আমার মেয়ে তার নাবালক দুই সন্তান রেখে ব্যাংক থেকে টাকা তোলার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এ সময় ঘরে থাকা ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার, জমি বিক্রির নগদ ৪২ লাখ টাকা ও বাড়ির কাজের ২৮ লাখ মোট ৭০ লাখ নগদ টাকা এবং তার অ্যাকাউন্টে থাকা স্বামীর পাঠানো প্রায় দুই কোটি টাকা নিয়ে বাড়ির নির্মাণ শ্রমিক নজরুলের সঙ্গে পালিয়ে যায়। শ্যামগ্রাম সোনালী ব্যাংক থেকে নজরুলের নামে ২০ লাখ টাকা নরসিংদী ইসলামী ব্যাংকে ট্রান্সফার করার সত্যতা আমরা পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, প্রবাসী জামাই আমার মেয়েকে অনেক বিশ্বাস করত। এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে ওই প্রবাসী বিদেশে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার নাবালক দুই সন্তান দিনরাত কেঁদেই চলছে মায়ের জন্য। তার কোনো সন্ধান না পাওয়ার কারণে গত ২৯ জানুয়ারি নবীনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।

ওই প্রবাসী একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, আমি ২৪ বছর ধরে বিদেশ করছি। সংসার করতে গিয়ে আমার সারা জীবনের সঞ্চয় সরল বিশ্বাসে বউয়ের নামে দিয়ে আমি আজ প্রতারিত হয়েছি, আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি, আমার দুটি নাবালক সন্তানকে এতিম করেছে। মাকে ফিরে পেতে আহাজারি করছে অবুঝ দুই সন্তান। এ ঘটনায় আমি স্ত্রী ও নজরুলের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই; যাতে কোনো প্রবাসী আমার মতো আর প্রতারিত না হয়।

নজরুলের বাবা কুদ্দুস মিয়া জানান, তার ছেলে কাঠ ক্রয় করার কথা বলে ২২ জানুয়ারি বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেনি।

jugantor

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More