নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বেতন না দেওয়ায় ময়মনসিংহের গৌরীপুরের কলতাপাড়ায় তাল্লু স্পিনিং মিলে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। আজ সোমবার ভোর থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে মিল গেইটে বিক্ষোভ করে রাস্তা অবরোধ করে রাখে। পরে যাত্রীদের অনুরোধে প্রায় এক ঘন্টা পর রাস্তা অবরোধ প্রত্যাহার করে শ্রমিকরা কর্মবিরতীর ডাক দিয়ে মিল গেইটে অবস্থান নেন। চার ঘন্টা পর মালিক পক্ষের প্রতিনিধি জনৈক আবুল কাশেমের সাথে দীর্ঘ আলোচনায় দুইদিনের মধ্যে শ্রমিকরা বেতন পরিশোধের আশ্বাসে পেয়ে কর্মে যোগদান করেন।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, প্রতিমাসে নির্ধারিত তারিখে বেতন প্রদান, টাইমস্কেল, চিকিৎসা, মাতৃত্বকালীন ছুটি, বার্ষিক ছুটি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন, বিশুদ্ধ পানি ও পরিচ্ছন্ন ডাইনিংসহ শ্রম আইন বাস্তবায়নের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছিল। মিলের শ্রমিক নয়ন মিয়া, আশরাফুল আলম, সিদ্দিক মিয়া জানান, তাদের বেতন প্রতি মাসের ৫ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে দেয়া কথা থাকলেও ২০ থেকে ২৫ তারিখের আগে তারা বেতন পান না। ফলে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম দুর্ভোগে দিনাতিপাত করছেন। এদিকে মিলের কয়েকজন শিশু শ্রমিক কাটিং সেকশনের রিতু (১৪), রিং সেকশনের মুশির্দা (১৫), নার্গিস (১৪), জহিরুল (১২) ও সানি (১৩) জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে ওই মিলে শ্রমিকের কাজ করছেন।
কিন্তু তারা মাত্র ২ হাজার ২শ’ টাকা বেতন পান। মালিক পক্ষ বারবার বেতন বৃদ্ধির আশ্বাস দিলেও স্থানীয় দালাল সিন্ডিকেটের কারণে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। শ্রমিকরা যে পরিমাণ বেতন-ভাতা পান তাতে তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মিলের একাধিক শ্রমিক জানান, মিলে প্রায় সাড়ে ১১শ’ শ্রমিক কাজ করেন। জনৈক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আত্মীয় আবুল কাশেম মিলের কোনো পদে চাকরি না করলেও তার নির্দেশেই চলতে হচ্ছে অন্যন্যা কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের। এ প্রতিষ্ঠানে চুন থেকে পান খসলেই শ্রমিক ছাঁটাই এবং নির্যাতনের ঘটনাগুলো ঘটে তার নেতৃত্বেই। আবার কখনো শ্রমিকদের স্থানীয় সন্ত্রাসীদের ভয় দেখানো হয়।
তিনি মিলের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী নন বলে স্বীকার করে আবুল কাশের বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। তিনি শুধু মালিকের নির্দেশে মিলের ভালোমন্দ দেখভাল করেন। ওই দিন মিলের জেনারেল ম্যানেজার উপস্থিত ছিলেন না