দর্শনা চেকপোস্টে লাগেজ ব্যবসা জমজমাট

0

dorsonaচুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা চেকপোস্ট সীমান্ত দিয়ে এক শ্রেণীর লাগেজ ব্যবসায়ী প্রতিনিয়ত কোটি কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য লাখ লাখ টাকার শুল্ক ফাঁকি দিয়ে নিয়ে আসছে। এদিকে চেকপোস্ট কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনের কতিপয় কর্মকর্তাদের কাছে বৈধ পথে যাতায়াতকারী সাধারণ পাসপোর্ট যাত্রীরা হয়রানী হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
জানা গেছে, লাগেজ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গোপন আঁতাতের মাধ্যমে ভারত থেকে আনা বিভিন্ন ধরণের পণ্যের মূল্য নির্ধারনে চলছে ঘাবলাবাজী। এসব লাগেজ ব্যবসায়ীদের প্রতি অবগত থাকা সত্ত্বেও কোন প্রকার তল্লাশি ছাড়াই এদেরকে ছেড়ে দিচ্ছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তাদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার ব্যবস্থা না নেয়ায় তারা এ ব্যবসার দিকে আরো উৎসাহী হচ্ছে। ভারত থেকে আনা পণ্যের দাম নিয়মমাফিক না ধরেই অল্প মূল্যের মাধ্যমে ছাড়পত্র প্রদান করছে। পূর্বের তুলনায় এসীমান্ত চেকপোস্ট কাস্টমসের মাধ্যমে লাগেজ পার্টির ব্যবসা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারত থেকে আনা এসব পণ্যের উপর থেকে নিয়ম অনুযায়ী রাজস্ব আদায় না করে এসব লাগেজ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার টাকার অর্থ আদায় করছে কতিপয় কর্মকর্তারা। ফলে প্রতিদিন সরকার বঞ্চিত হচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে। লাগেজ ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে যেসব পণ্য এনে থাকে তার হ্রাসকৃত মূল্যের উপর থেকে আদায় করা হয় রাজস্ব। বিজিবি সদস্যরা রোববার সন্ধ্যায় সীমান্ত থেকে সাড়ে ৬ লাখ টাকা ভারতীয় পণ্যসহ কয়েকদিনে ২৫ লাখ টাকার পণ্য আটক করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চাপের মুখে। গত শনিবার অবৈধ লাগেজের ভারতীয় পণ্য দর্শনা হণ্ট স্টেশন থেকে ট্রেনে তোলাকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, এতে ৫-৬ জন চোরাকারবারী আহত হয়। এদিকে সাধারণ পাসপোর্ট যাত্রীরা কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনের কর্মরত কর্মকর্তাদের হাতে হয়রানী হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এসব পাসপোর্ট যাত্রীদের কাছ থেকে অসাধূ কর্মকর্তারা পাসপোর্ট প্রতি জোরপূর্বক দেড়’শ থেকে দু’শ  টাকা হারে আবার কোন কোন সময় ৪-৫ শত টাকা করে আদায় করছে। যদি কোন যাত্রী ওই অর্থ প্রদান করতে ব্যর্থ হয় তাহলে তাদেরকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।
তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়, এই লাগেজ ঘাটের দায়-দায়িত্ব আছে চেক পোস্ট সংলগ্ন জয়নগর গ্রামের কুখ্যাত চোরাচালানী জামাই বাবলুর নেতৃত্বে শহিদুল ও তার লোকজন। এরা এই সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে লাগেজ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে স্থানীয় প্রশাসনের নাম করে বস্তা প্রতি ৭-৮ হাজার টাকা আদায় করে থাকে। এই ঘাট থেকে প্রায় প্রতিদিনই ২-৩ লাখ টাকা আয় হয়।
চোরাচালানীর সঙ্গে জড়িত বছর খানেক আগের দিন মুজুর এখনকার কোটিপতি জামাই বাবলুর কালো টাকার দাপটে সাধারণ মানুষ অসহায়বোধ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে যারা সাধারণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তাদের অভিযোগ দেশিয় পণ্যের বিপুল চাহিদা থাকা সত্ত্বেও চোরাচালানীরা ভারতীয় পণ্য অবাধে পাচার করে আনায় ক্রেতারা স্বাভাবিকভাবেই ভারতীয় পণ্যের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এব্যাপারে সাধারণ ব্যবসায়ীরা অবিলম্বে চোরাচালানের মাধ্যমে লাগেজ বন্ধের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ঊর্ধ্বতন মহলের তদন্তপূর্বক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া একান্ত প্রয়োজন বলে ভুক্তভোগী মহল দাবি জানিয়েছে।
দর্শনা চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ইনচার্জ মাহবুব রহমান যাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ আদায় এবং যাত্রী হয়রানীর ঘটনা অস্বীকার করেন।
দর্শনা কাস্টমস সহকারী কমিশনার বারীকুজ্জামান জানান, যাত্রীরা অতিরিক্ত ভারতীয় পণ্য আনলে শুল্ক আদায় করা হয়। কেউ যদি অবৈধ ভারতীয় পণ্য আনলে আমরাসহ বিজিবি আটক করে থাকি। পাসপোর্ট যাত্রীদের কাছ থেকে জোরপূর্ব অর্থ আদায় করার কথাও অস্বীকার করেন তিনি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More