যশোরে সুইডেন ও বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিকের কাছ থেকে ৩ হাজার ইউএস ডলার ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত এস আই এজাজুর রহমানসহ ৫ পুলিশকে শুক্রবার সকালে যশোর পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।
পুলিশ লাইনে ক্লোজড হওয়া অপর ৪ কনস্টেবল হলেন আজিজুর রহমান, মামুন হোসেন, বাবর আলী ও জিয়াউল হাসান।
বৃহস্পতিবার ঘটনার শিকার সুইডিশ নাগরিক খুকমনি পারভীনের স্বামী মিজানুর রহমান জানিয়েছেন ছিনিয়ে নেয়া ৩ হাজার মার্কিন ডলার অজ্ঞাত যুবকের মাধ্যমে শুক্রবার সকালে ফেরত পাঠিয়েছে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা।
তবে অভিযুক্ত ঝিকরগাছা থানার উপপরিদর্শক এজাজুর রহমান দাবি করেছেন, ‘পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ ও হয়রানি করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। ডলার ছিনতাই কিংবা ফেরত দেয়ার সঙ্গে কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।’
অভিযোগে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে ভারত থেকে দেশে ফেরার পথে যশোরের ঝিকরগাছা থানার দারোগা এস আই এজাজসহ সঙ্গীয় ফোর্সরা সুইডিশ নাগরিক খুকুমনি পারভীনের ব্যাগ তল্লাশির নামে জোরপূর্বক ৩ হাজার ইউএস ডলার ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার পর সন্ধ্যারাতে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান খুকুমনি পারভীন ও তার স্বামী মিজানুর রহমান। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
শুক্রবার বিকেলে সুইডিশ নাগরিক মিজানুর রহমান টেলিফোনে জানান, সকালে অজ্ঞাত এক যুবক মোটরসাইকেলে তার বাড়িতে পৌঁছে একটি খামে করে তিন হাজার ডলার ফেরত দেন।
যুবকটি জানান, দারোগা স্যার এই ডলার আপনার কাছে দিতে বলেছেন। এর পরপরই যুবকটি একটি সাদা কাগজ বের করে বলেন, এখানে একটু লিখে দেন যে, “আপনাদের ডলার পুলিশ নেয়নি। ব্যাগের ভেতরেই ছিল। খোঁজাখুঁজির পর আপনারা ব্যাগের ভেতরেই ডলারগুলো পেয়েছেন। পুলিশের বিরুদ্ধে আপনাদের কোন অভিযোগ নেই।” কিন্তু মিজানুর রহমান এসব কথা লিখতে অস্বীকার করে যুবকটিকে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
কিছুক্ষণ পর কনস্টবল আজিজুর রহমানের গ্রামের বাড়ি লোহাগড়া থেকে ২ জন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ মিজানুরের বাড়ি কালিয়া শহরে যান এবং একই রকমের আব্দার করেন।
তারা জানান, আপনারা এই লিখিত না দিলে দারোগা এজাজসহ তার সঙ্গীয় ফোর্সদের চাকরি থাকবে না। তারা লিখিত দেয়ার জন্য অনুনয় বিনয় করেন। কিন্তু মিজানুর বা তার স্ত্রী খুকুমনি পারভীন লিখিত দিতে অস্বীকার করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, বিনা অনুমতিতে তল্লাশি চৌকি বসিয়ে যাত্রীদের তল্লাশির নামে হয়রানী করার অভিযোগে দারোগা এজাজসহ ৫ কনেস্টবলকে লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হচ্ছে। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।