ঢাকা: আইন করে হরতাল ও অবরোধ বন্ধ, চলমান রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রত্যাহার, হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের ব্যাংকের সকল প্রকার সুদ মওকুফের দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।
একই সঙ্গে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ৫শ’ কোটির উপরে ঋণ গ্রহিতাদের পুন:তফশিল করার যে সুযোগ দিয়েছে সব ক্ষেত্রের ব্যবসায়ীদের সে সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন নেতারা।
রোববার সারাদেশে একযোগে দুপুর ১২ টা থেকে সোয়া ১২ টা পর্যন্ত ১৫ মিনিটের কর্মসূচিতে সংগঠনের সভাপতি কাজী আকরাম আহমেদ এসব দাবি তুলে ধরেন সরকারের প্রতি।
এসময় সবার ‘উপরে দেশ, দেশ বাঁচাও অর্থনীতি বাঁচাও, ‘জানমালের নিরাপত্তা চাই, ব্যবসার পরিবেশ চাই’, ‘হরতাল অবরোধ আইন করে বন্ধ করো, করতে হবে’, এরকম নানা স্লোগান দিতে থাকেন ব্যবসায়ীরা।
কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেয়া এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দীন আহমদ বলেন, ৫ জানুয়ারির পর থেকে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে দেশে ৩৩ দিন ধরে টানা হরতাল ও অবরোধ চলছে। এ অবস্থায় দেশে সহিংসতা ও নাশকতা বেড়েই চলেছে। জাতীয় ও নাগরিক জীবনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সৃষ্টি হয়েছে। চলমান সহিংসতায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে ৮৭ জন নিরীহ মানুষ। পেট্রোল বোমায় আক্রান্ত হয়ে দুশোর বেশি মানুষ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এক হাজার গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও চার হাজার গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে।
বিরামহীন হরতাল ও অবরোধে দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দাবি করে আকরাম বলেন, বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, হরতাল-অবরোধে দিনে ২ হাজার ৭শ’ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, যার সিংহভাগ ব্যবসায়ীদের। এসব রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে দেশে বিভিন্ন খাতে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৭৫০০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে পরিবহন খাতে প্রায় ৯ হাজার ৫ শ’ কোটি টাকা, গার্মেন্ট খাতে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা, উৎপাদন খাতে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা, পর্যটন খাতে ৬ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা, কৃষি ও পোল্ট্রি খাতে ৯ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা, হিমায়িত পণ্যখাতে ২৫০ কোটি টাকা, আবাসন খাতে ৭ হাজার ৫০ টাকা, খুচরা ও পাইকারি ব্যবসা খাতে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। প্রকৃত পক্ষে এ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি।
দেশের শীর্ষ সংগঠনের এই নেতা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অপরদিকে উৎপাদন ব্যবস্থা বন্ধ থাকার পরও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যাংক ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে। বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ব্যাংকের শ্রেণীবিন্যাস ঋণের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাচ্ছে। আমরা ঋণের সুদ মওকুফ করার জন্য দাবি করছি।