নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের জন্য ঈদ বাজারেও খারাপ সময় পার করছেন মগবাজার-মৌচাক এলাকার বিভিন্ন বিপণী বিতানের বিক্রেতারা।
[ads1]তারা বলছেন, বেশিরভাগ সময় রাস্তা থাকে বন্ধ; খোলা থাকলে বাঁধে তীব্র যানজট। ফেলে রাখা নির্মাণ সামগ্রীর কারণে সরু হয়ে আসা রাস্তায় অগুণতি খানা-খন্দ আর জলকাদা পেরিয়ে ক্রেতারা আর ‘পারতপক্ষে’ ওই এলাকামুখী হন না।মগবাজার বিশাল সেন্টারে হাজী মো. তৈয়ব আলীর পোশাকের ব্যবসা দীর্ঘ দিনের। ক্রেতারা আসেন না বলে এবার তার কিংস ফ্যাশনওয়্যারে ‘মন্দা’ যাচ্ছে।“রাস্তার জন্যই মূল সমস্যা। আমাদের কাস্টমাররা মূলত পুরানা, বান্ধা কাস্টমার। তারাই বারবার রাস্তার কথা তোলে, আসতে চায় না। রাস্তায় অবস্থা এইরকম থাকলে কার আসতে মন চায় বলেন?”অসহনীয় এ পরিস্থিতির জন্য ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজকেই দুষলেন তিনি।“কাজতো চলতেই পারে। কিন্তু যে নিয়ম মাফিক চলার কথা সেটা হচ্ছে না। উচিত ছিল রাস্তা সচল রেখে কাজ চালানো। সেটাতো করেই না, উল্টা সব মালপত্র রাস্তায় এনে রাখে।”ব্যবসা না হওয়ায় দোকান ছাড়ার চিন্তাও ঘুরছে প্রবীণ এ ব্যবসায়ীর মাথায়।“এখানে ভর্তুকি দিয়ে দিয়ে দোকান চালাচ্ছি। আর কতদিন এভাবে চালাব জানি না। এখানে যদি পজিশন হোল্ডার না হতাম, কবেই চলে যেতাম।”একই আক্ষেপ এ মার্কেটের আরেক দোকানদার হোসাইন মোহাম্মদের।“মার্কেটতো প্রায় মরে গেছে। ঈদ শপিংতো আর দিনের বেলায় হয় না। সন্ধ্যায় মানুষ বের হয়, অধিকাংশ দিন তখন রাস্তাই বন্ধ করে দেয়।”হোসাইন জানান, বিশাল সেন্টারে যারা কেনাকাটা করতে আসেন, তাদের বড় একটি অংশ উচ্চবিত্ত। তার দোকানে পাঁচ হাজার থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা দামের পাঞ্জাবি-শার্টও রয়েছে। “তারা গাড়ি নিয়ে আসেন। মার্কেটে এসে যদি গাড়ি নিয়ে অশান্তিতে থাকতে হয়, তাহলে আর এমুখো হবেন কেন?”এ অবস্থায় ক্ষতি পোষাতে ‘টার্গেট সেলিং’ করতে হচ্ছে বলে জানালেন এই বিক্রেতা।তিনি বলেন, “পরিচিত পুরান কাস্টমারদের ফোন করে করে নিয়ে আসি।”হোসাইনের দোকানে কথা হল আবদুল রহিমের সঙ্গে, তাকেও ‘দাওয়াত’ দিয়ে আনা হয়েছে কেনাকাটা করতে। “পথের কষ্টের কথা ভেবে এখানে শপিংয়ের আসতে মন চায় না। তারপরও উনি ফোন দিলেন, তাই এলাম।”পথের বিড়ম্বনায় শপিংয়ের আনন্দ ‘নষ্ট হয়ে যায়’ বলেও মন্তব্য এ ক্রেতার।এ অবস্থায় দোকানদারদের ‘পথে বসা ছাড়া গতি নেই’ মন্তব্য করে হোসাইন বলেন, “আগে যেখানে তিন লাখ টাকার সেল হত, এখন ৫০ হাজার টাকা তুলতেই ঘাম ছুটে যায়।“রোজার মাসে ভাবছিলাম ৫০ লাখ টাকার বিক্রি হবে; কপাল মন্দ, এখন তো ৮-১০ লাখ টাকার বিক্রি নিয়েও সন্দেহ থাকছে।”দোকানদাররা ‘ব্যবসা করতে না পারায়’ সমস্যায় পড়েছেন কর্মচারীরাও।বাদল হোসেন নামের এক বিক্রয়কর্মী জানালেন, তিন বছরে তাদের বেতন বাড়েনি।“মালিক বলে, ফ্লাইওভারের কাজ শেষ হোক, তারপর। এভাবে আর কয়দিন?”[ads1]