প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সংশোধনী প্রস্তাব: সরকারের সাড়া মেলেনি ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা

0

[ads1]আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পাস হতে আর মাত্র দুই দিন বাকি। কিন্তু বাজেট পাসের আগে বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীরা চান কিছু সংশোধনী। আর তাঁদের হয়ে সরকারের সঙ্গে এ দেনদরবার করার কথা বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই)। কিন্তু সংগঠনটি এখন পর্যন্ত শুধু এক চিঠির মাধ্যমে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) সংশোধনী প্রস্তাব পাঠিয়ে চুপচাপ রয়েছে।
ছোট, মাঝারি এবং পণ্যভিত্তিক বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারের বেশ কিছু কর প্রস্তাবে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই প্রস্তাবগুলো সংশোধন করা দরকার। কিন্তু অভিভাবক সংগঠন হিসেবে এফবিসিসিআইয়ের এ বিষয়ে যে ধরনের উদ্যোগ দরকার ছিল, তা এখনো দেখা যাচ্ছে না। ফলে প্রস্তাবগুলো আদৌ বিবেচনা করা হবে কি না, এ নিয়ে সন্দিহান তাঁরা।
একাধিক খাতের ব্যবসায়ী ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রীতি অনুযায়ী প্রতিবছর বাজেট ঘোষণার পর এফবিসিসিআই তা বিশ্লেষণ করে একটি প্রস্তাব তৈরি করে এনবিআরের কাছে পাঠায়। পরে এনবিআর সব সংগঠনের প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে একটি সারসংক্ষেপ অর্থমন্ত্রীর কাছে বিবেচনার জন্য জমা দেয়। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে নিজেদের দাবি পূরণের চেষ্টা করে এফবিসিসিআই। অনেক সময় প্রয়োজন হলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন ব্যবসায়ী নেতারা। কিন্তু এ বছর বাজেট নিয়ে এফবিসিসিআই ক্ষোভ প্রকাশ করলেও পরবর্তীকালে তাঁদের আর তেমন কোনো তৎপরতা নেই।
আগামী ৩০ জুন জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট পাস হবে। সেই হিসাবে বাকি মাত্র দুদিন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত—কারও সঙ্গেই এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক হয়নি এফবিসিসিআইয়ের। বাজেট প্রস্তাবের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সময় চেয়ে এফবিসিসিআই ৮ জুন চিঠি দিয়েছিল। [ads1]
এদিকে কয়েক দিন আগে এফবিসিসিআইয়ের একজন পরিচালক তাঁর নিজের খাতের দাবি নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে দেখা করতে যান। ওই সময় তিনি এফবিসিসিআইয়ের সংশোধনী প্রস্তাবগুলো অর্থমন্ত্রীর হাতে দিয়ে একটি বৈঠক করার অনুরোধ জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই পরিচালক বলেন, ‘আমার কথা শুনে অর্থমন্ত্রী বলেন, এখন আর বসে কী হবে, দেরি হয়ে গেছে।’
এফবিসিসিআইয়ের পরিচালকদের অনেকে মনে করছেন, জোরালোভাবে তুলে না ধরায় বাজেট পাস হওয়ার সময় তাঁদের দাবি পূরণ হওয়ার আশা কম। বিশেষ করে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) প্রস্তাব নিয়ে হতাশ তাঁরা।
জানতে চাইলে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অনেক কিছু বিবেচনা করা হবে, তবে কতটুকু বিবেচনায় নেওয়া হয়, তা বাজেট পাস হওয়ার পরেই বোঝা যাবে।
মাতলুব আহমাদ বলেন, এফবিসিসিআই ব্যবসায়ীদের প্রধান সংগঠন। এ সংগঠনকে সবকিছু আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মধ্যে করতে হয়। এটা কারও ব্যক্তিগত বিষয় নয় যে একজন গিয়ে করিয়ে নিয়ে এল। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের পরামর্শ আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকারের কাছে তুলে ধরেছি। আশা করি, বাজেট পাস হওয়ার দিন তার প্রতিফলন দেখা যাবে।’
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়নি কেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা চিঠি দিয়েছি। তাঁদের তো ডাকতে হবে।’
এফবিসিসিআইয়ের একজন পরিচালক বলেন, বাজেট ঘোষণার পর এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বেশির ভাগ সময় বিদেশে ছিলেন। একজন সহসভাপতি পরিবারের সদস্যকে চিকিৎসা করাতে এখন বিদেশে আছেন। আরেকজন চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী। এ বাস্তবতায় বাজেটের পর দাবিদাওয়া নিয়ে জোরালো কিছু করতে পারেনি সংগঠনটি।
জানতে চাইলে ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরামের সভাপতি আবু মোতালেব প্রথম আলোকে বলেন, বাজেটে আমাদের দাবিদাওয়া পূরণ হবে, এমন আশা করতে পারছি না। এর জন্য দায়ী এফবিসিসিআইয়ের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। তাঁরা ঠিকমতো দর-কষাকষি করেননি।
এদিকে বাজেট ঘোষণার পর প্রস্তাব নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছে ফরেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই) ও প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদকেরা। অন্যদিকে পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ উৎসে কর কমানোর দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছে।[ads2]

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More