গোলাম মাওলা রনি
ইদানীংকালে জামায়াত-শিবির নিয়ে দেশবাসীর কৌতূহলের শেষ নেই। শত-সহস্র কৌতূহলের মধ্যে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা কেমন আছেন, কোথায় আছেন এবং কী করছেন তা নিয়ে যেমন আলোচনা করা যায় তেমনি আলোচনা করা যায় শিরোনাম নিয়ে। মূলত আকর্ষণ সৃষ্টির জন্যই শিরোনামের ভাষাটি অমন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমি মূলত আলোচনা করতে চাচ্ছি কেন জামায়াত-শিবিরের হাল বেহাল হয়ে পড়ল!
আমার আজকের লেখার বিষয়বস্তু দেখে দলটির কট্টরপন্থি নেতা-কর্মীরা হয়তো বলতে পারেন আপনি কে? বা আপনি আমাদের সম্পর্কে কতটা জানেন? অথবা কেনইবা আপনি আমাদের ব্যাপারে উপযাজক হয়ে পণ্ডিতি দেখাবেন? যারা এমন প্রশ্ন করবেন তাদের উদ্দেশে আমার বক্তব্য হলো- আমি জামায়াত-শিবিরের সবাইকে রাজাকার-আলবদর বা আলশামস মনে করি না। আওয়ামী লীগের মতো তাদের সমূলে বিনাশ করার নীতিতে বিশ্বাসী নই। অন্যদিকে বিএনপির মতো কেবল স্বার্থের তাগিদে তাদের ব্যবহারের পক্ষপাতী নই। অন্যদিকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সমর্থকদের মতো তাদের কাফের বা মুরতাদ মনে করি না। তরিকাপন্থিদের মতো শত্রু মনে করি না। আবার তাবলিগারদের মতো তাদের বাতেল ফেরকাহর লোক বলে ফতোয়া দিই না। অন্যদিকে দলটির অন্ধ সমর্থকদের মতো তাদের দুনিয়াতে জান্নাতি মেহমান মনে করি না। আমি মনে করি তারা একটি সংঘবদ্ধ রাজনৈতিক শক্তি, যাদের সারা দেশে গড়ে ১০ ভাগ কর্মী-সমর্থক রয়েছে। এই হিসাবে দেশের ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ কম-বেশি জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত অথবা দলটিকে সাহায্য ও সমর্থন করে।
১৯৪১ সালের ২৬ আগস্ট লাহোরের ইসলামিয়া পার্ক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে দলটি বর্তমান সময়ের মতো এতটা মুসিবতে পড়েনি। অন্যদিকে সুদীর্ঘকালের ইতিহাসে তারা বর্তমান সময়ের মতো এত মজবুত, সুসংগঠিত এবং সবল-সচ্ছলও কোনোকালে ছিল না। তাদের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ আবুল আলা মওদুদী যদি জীবিত থাকতেন তবে নিশ্চয়ই তিনি বাংলাদেশে তার দলটির ব্যাপ্তি দেখে আনন্দিত হতেন। অন্যদিকে বর্তমান দুরবস্থার জন্য ব্যথিত না হয়ে প্রথমত এর কারণ খুঁজতেন। দ্বিতীয়ত, সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর নবম পার্লামেন্ট গঠিত হলে যুদ্ধাপরাধের বিচার, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল এবং জামায়াতকে একঘরে করে রাখার কথা শাসক মহলে আলোচিত হলেও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব বুঝে-শুনে ধীরগতিতে এগোনোর পরিকল্পনা নিয়েছিল। কিন্তু একদিনের হঠাৎ একটি ঘটনা রাতারাতি পুরো পরিস্থিতি পাল্টে দেয়। ঘটনার দিন সংসদে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আরও অনেক সংসদ সদস্যের মতো আমিও উপস্থিত ছিলাম। দিনটি ছিল ২৯ জানুয়ারি ২০০৯ সালের। আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী মাগরিবের নামাজের বিরতির পর সংসদে এই মর্মে প্রস্তাব পেশ করেন যে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য একটি ট্রাইব্যুনাল গঠিত হোক। জনাব চৌধুরী আমার সারিতেই বসতেন এবং ব্যক্তিগতভাবে আমরা একে অপরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। প্রস্তাবটি ছিল একটি সাধারণ প্রস্তাব। এটির জন্য কোনো পূর্বপরিকল্পনা বা গ্রাউন্ড ওয়ার্ক ছিল না। নিয়ম মতে- প্রস্তাবক প্রস্তাবটি সংসদে উত্থাপন করবেন এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী প্রথামতো বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দেবেন। সেদিন আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষে প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। তিনি ওঠে দাঁড়ালেন এবং যথারীতি বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে বসে পড়লেন। এরপর ঘটল অপ্রত্যাশিত ঘটনা। ২৫-৩০ জন এমপি প্রথমে দাঁড়িয়ে হৈচৈ শুরু করলেন। তাদের দেখাদেখি সরকারদলীয় সবাই দাঁড়িয়ে গেলেন। (কেবল মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীরা ছাড়া)। সবার দাবি, আশ্বাস নয়- সিদ্ধান্ত চাই। স্পিকার আবদুল হামিদ প্রতিমন্ত্রীকে দাঁড়িয়ে ট্রাইব্যুনালের ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলতে বললেন। বেচারা সবে নতুন মন্ত্রী হয়েছেন- অন্যদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে তার বক্তব্য কিরূপ হওয়া উচিত সে ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় তিনি আমতা আমতা করতে লাগলেন এবং পূর্বেকার মতো বললেন- আচ্ছা বিবেচনা করা হবে। হাউস আরও উত্তেজিত হয়ে পড়ল। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এবং সিনিয়র মন্ত্রীরা পরামর্শ তো দূরের কথা একে অপরের সঙ্গে দৃষ্টি বিনিময়ের সময় পেলেন না। স্পিকার নিজেও খানিকটা উত্তেজিত হয়ে পড়লেন এবং রুলিং দিলেন- কোনো বিবেচনা নয়। প্রস্তাবটি এখনই পাস হবে। তিনি কণ্ঠভোটে প্রস্তাবটি পাস করার জন্য ফ্লোরে দিলেন আর এক মিনিটের মাথায় বিপুল করতালিতে সেটি পাস হয়ে গেল।
প্রস্তাবক মাহমুদুস সামাদ এমপি আকস্মিক ঘটনায় হতবিহ্বল হয়ে পড়লেন। আমি তার হাত ধরে সান্ত্বনা দিলাম। এরপর আরও অনেকে এসে তাকে সমর্থন জানালেন। এর পরের কাহিনী সবার জানা। সরকার খুবই সতর্কতার সঙ্গে ধীরে ধীরে এগোলো এবং আরও সতর্কতার সঙ্গে কথাবার্তা বলল। এ ঘটনার ১৪ মাসের মাথায় অর্থাৎ ২০১০ সালের মার্চ মাসে ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলো। জামায়াতের প্রায় একডজন নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলো। সরকারের সিনিয়র মন্ত্রীরা বললেন- এটা হবে মূলত প্রতীকী বিচার। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টিকে আরও একটু সহজ করার জন্য বললেন- বিচার তো ওদের হয়েই গেছে। আওয়ামী লীগ যে ক্ষমতায় এসেছে এটাই যুদ্ধাপরাধীদের সবচেয়ে বড় বিচার।
জামায়াত-শিবিরের লোকজন যদি উপরের ঘটনা মূল্যায়ন করেন এবং ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর তাদের দলের শীর্ষ নেতাদের বক্তৃতা, বিবৃতি, টিভি সাক্ষাৎকার ইত্যাদি পর্যালোচনা করেন তাহলে সহজেই মূল্যায়ন করতে পারবেন বর্তমান দুর্ভোগটা কীভাবে শুরু হয়েছিল এবং সেই দুর্ভোগের জন্য তারা নিজেরা কতটা দায়ী কিংবা অন্যরা কতটুকু।
আমার প্রথমেই মনে হয় এই দলের নেতা-কর্মীরা বড়ই আত্দকেন্দ্রিক। তারা নিজের দলের বাইরে অন্য কারও সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা, সম্পর্ক তৈরি এবং সম্পর্ক রক্ষার চেষ্টা করে না। তারা এ কথাও চিন্তা করে না যে দেশের অন্যসব মানুষ তাদের সম্পর্কে কীরকম চিন্তাভাবনা করে। অথবা তারা প্রয়োজন মনে করে না যে, তাদের সঙ্গে অন্য রাজনৈতিক মত ও পথের লোকদের শখ্য বা পারিবারিক সম্পর্ক থাকার দরকার রয়েছে। বরং তারা এক ধরনের আত্দতৃপ্তিতে ভোগে। তারা তাদের যাবতীয় কর্মকে শ্রেষ্ঠ ভাবে এবং সব কাজের জন্য দুনিয়ার সাফল্য এবং আখেরাতের কল্যাণ আশা করে। তারা প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলোকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করে এবং ওই সব রাজনৈতিক দলের লোকজনকে নিকৃষ্ট মানুষ বলে মনে করে। তারা কেবল কৌশলগত কারণে বা নেহায়েত প্রয়োজনের বশে রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে এবং ক্ষণ গুনতে থাকে কখন তাদের চূড়ান্ত বিজয় আসবে যেদিন তাদের কৌশলগত রাজনৈতিক মিত্ররা নিজেদের মত ও পথের ভুল বুঝতে পারবে এবং দলে দলে জামায়াত-শিবিরে যোগদান করে দুনিয়া এবং আখেরাতের অশেষ নেকি হাসিল করবে। ফলে তাদের সঙ্গে ভিন্ন মতের কারোর বন্ধুত্বপূর্ণ সৌহার্দ্য হয় না।
কথাগুলো বললাম আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে। আওয়ামী লীগের মধ্যে আমি একজন নেতাকেও দেখিনি যার সঙ্গে জামায়াত নেতাদের ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব আছে। আবার বিএনপির মধ্যেও কাউকে দেখিনি যিনি সগর্বে বলবেন ওমুক জামায়াত নেতা আমার বন্ধু। এর বাইরে অন্যান্য ছোট-বড় রাজনৈতিক দলের পরিচিত ও জনপ্রিয় মুখগুলো, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী নেতা, অধ্যাপক, সাংস্কৃতিক কর্মী, এনজিও ব্যক্তিত্ব, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব কিংবা কূটনীতিবিদ বা সাবেক আমলাদের মধ্যে কাউকে দেখিনি যে বুক ফুলিয়ে সামনে জামায়াত-শিবিরের পক্ষে দুকথা বলা তো দূরের কথা গোপনে কারও কাছে সুপারিশ করবে বা করতে সাহস পাবে। ১৯৮০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জামায়াতের জন্য স্বর্ণ সময় ছিল। সব দরজা তাদের জন্য খোলা ছিল। তারা যেমন কোনো দরজা দিয়ে ঢুকেনি তেমনি নিজেদের দরজা এমনভাবে বন্ধ করে রেখেছিল যাতে কেউ আবার তাদের ঘরে ঢুকে তাদের পবিত্রতা বা সতীত্ব নষ্ট করতে না পারে। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। তারা একা ছিল, একাই রয়ে গেছে। আজ বিএনপি-আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টি এবং বাম দলের নেতাদের সঙ্গে যে সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে তার সামান্যতম যদি জামায়াত নেতাদের সঙ্গে থাকত তবে দলটিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না।
জামায়াত-শিবিরের রয়েছে চমৎকার একটি সংগঠন। নেতা-কর্মীদের প্রায় সবাই শিক্ষিত এবং সচ্ছল। কারও কারও শিক্ষা-দীক্ষা এতটাই ঊর্ধ্বস্তরের যে তারা ইচ্ছা করলে প্রচলিত সেক্যুলার রাজনীতির অনেক বড় বড় নেতাকে পড়াতে পারবেন। বিদ্যাবুদ্ধির একটি বড় পরিচয় হলো- বিদ্বান প্রশ্ন করে যুক্তি খোঁজে এবং নিজেদের ত্রুটিগুলো অনুসন্ধান করে। বিদ্বানের প্রজ্ঞা তাকে ভবিষ্যতের কর্মপন্থা এবং বিপদ-আপদ সম্পর্কে সচেতন রাখে। আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে স্বাধীনতার এত বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও কোনো জামায়াত-শিবিরের শিক্ষিত জনেরা মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের দায়কে স্বীকার করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে গেল না? আজ দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ তাদের ভালোভাবে গ্রহণ করছে না- তাদের পরিহার করছে এবং বিরাট একটি অংশ তাদের শত্রু মনে করছে। এ অবস্থায় সংগঠনটি কি ৯০ ভাগ মানুষের মনোভাবকে আমলে নিচ্ছে নাকি ভাবছে সময়ের বিবর্তনে সবাই জামায়াত-শিবিরের ছায়াতলে আশ্রয় নেবে?
বাংলাদেশের প্রচলিত এবং জনপ্রিয় দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলেরই কৌশলগত একাধিক মিত্র রয়েছে। দল দুটো যখন যে অবস্থায় থাকুক না কেন বা যাই করুক না কেন, তাদের কৌশলগত মিত্ররা সব সময় তাদের সমর্থন জানান। এ যাবৎকালে জামায়াত-শিবির না পেরেছে নিজেদের কৌশলগত মিত্র তৈরি করতে কিংবা না পেরেছে কারও কৌশলগত মিত্র হতে। রাজনীতির সূত্র মতে, বিএনপি বা আওয়ামী লীগ কোনো দলের সঙ্গেই ধর্মাশ্রয়ী কোনো দলের স্থায়ী মিত্রতা হতে পারে না। জামায়াত-শিবিরের মিত্র হতে পারে কেবল ইসলামপন্থি দলগুলো, ধর্মীয় গোষ্ঠী, সম্প্রদায় এবং পীর মাশায়েখরা। অথচ অতি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কারণের জন্য তারা সবার সঙ্গেই বিবাদ-বিসম্বাদ লাগিয়ে রেখেছে। কাদিয়ানিদের কথা না হয় বাদই দিলাম- কিন্তু তরিকাপন্থি পীর মাশায়েখ, আলেম-ওলামা, তাদের ভক্ত-সমর্থক, তাবলিগ জামাত, আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত, হেফাজতপন্থি কওমি গোষ্ঠী, সুফিবাদে বিশ্বাসী মুসলমান পীর ফকির এবং আহলে হাদিসের অনুসারীদের সঙ্গে পথ ও মতের পার্থক্য কি বেনামাজি, ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, জেনাকার, লোভী এবং খোদাদ্রোহী রাজনীতিবিদদের তুলনায় বেশি না কম?
যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হওয়ার পর এযাবৎকালে যত হরতাল-অবরোধ, হত্যাকাণ্ড, সন্ত্রাস, অগি্নসংযোগ, জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার পুরো দায় কি সংগঠনটি সরকারের ওপর দেবে নাকি দর্পণে নিজেদের আত্দপ্রকৃতি দেখবে তা ভাবার সময় এসে গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্ররা জামায়াত-শিবির সম্পর্কে ইদানীংকালে কতটা কঠোর অবস্থানে চলে গেছে তা রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা খুব ভালো করেই জানে। সরকার অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গ্রিন সিগন্যালের জন্য। এই জন্য তারা নানা কূটকৌশল, লবিস্ট নিয়োগ থেকে শুরু করে সব কিছুই করেছে। সরকারের মধ্যে প্রথম থেকেই ২-৩টি বিষয়ে প্রচণ্ড চাপ ছিল। একটি হলো জামায়াত-শিবিরের অর্থায়নের উৎস বন্ধ করা। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, সরকার জানে না জামায়াতের অর্থের উৎস কী?
জামায়াতের নিবন্ধন ইতিমধ্যেই বাতিল হয়েছে। দলটিকে আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আজকের এই দুঃসহ অবস্থায় পৌঁছানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সব মহল প্রায় সাত বছর সময় নিয়েছে। এক পক্ষ সর্বশক্তি দিয়ে আক্রমণ করেছে আর অন্যপক্ষ বলেছে ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই গল্পের মতো- দেখি না শালায় কী করে? মাঝখান থেকে হঠাৎ হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হয়েছে তাতে আখেরে কার লাভ হয়েছে বা হবে তা দেখার সময় হয়তো জামায়াত-শিবিরকে দেওয়া হবে না। এ অবস্থায় দলটির করণীয় সম্পর্কে কিছু বলার স্পর্ধা বা জ্ঞান আমার নেই। তবে একথা বুঝতে পারি সরকার জামায়াত-শিবিরকে যতটা আঘাত করেছে সেখান থেকে ফিরে আসা অসম্ভব। কাজেই জামায়াত নির্মূলে শতভাগ সফলতা অর্জন না করে তারা ঘরে ফিরবে না। সরকারের আত্দবিশ্বাস এখন তুঙ্গে। তারা গ্রামীণ ব্যাংক এবং ড. ইউনূসের তুলনায় জামায়াত এবং ইসলামী ব্যাংককে অনেক ক্ষুদ্র মনে করে। অন্যদিকে সিটি নির্বাচনে জামায়াতের ভূমিকার কারণে বিএনপি তাদের পুনরায় ধারণ করবে এমন বিশ্বাসের ভিত্তি অতীব দুর্বল। কাজেই তাদের ভাবতে হবে- কিয়্যা হুয়া! ক্যাইসে হুয়া।
লেখক : কলামিস্ট