পাসের হার বৃদ্ধিতে প্রধানমন্ত্রীর সন্তোষ
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে ভালো ফলাফলেও যারা সমালোচনা করেন তাদের কথায় দুঃখ না পেতে শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং ১০ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানগণ বুধবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফলাফলের অনুলিপি হস্তান্তরকালে শেখ হাসিনা এসব মন্তব্য করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে অনলাইনে পরীক্ষার ফলাফল উন্মুক্ত করেন এবং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দিনাজপুরে কয়েকজন শিক্ষার্থীদর সঙ্গে কথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পাসের হার আগামীতে আরো বাড়বে। আমরা প্রতিটি জেলায় বেসরকারি, না হয় সরকারি- একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় করে দেব।” পাশাপাশি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ওপরও গুরুত্ব দেন শেখ হাসিনা।
উল্লেখ্য, উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় এবার গড় পাসের হার ৭৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। সারাদেশে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭০ হাজার ৬০২ জন। এ ছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৯৪ দশমিক ০৮ এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮৫.০২ দশমিক।
এবার আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে এইচএসসি, মাদরাসা বোর্ডের অধীনে আলিম এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে মোট ১০ লাখ ১২ হাজার ৫৮১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।
পরীক্ষার ফলাফল পাবার পর এবার ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের নতুন দুশ্চিন্তা শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য তাদের পছন্দের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বা তাদের পছন্দের বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে পারবে তো?
রাজধানীর বেগম বদরুন্নেছা সরকারী মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে পাস করেছে নাতাশা জাহান। তার পরিবার চাচ্ছে সে মেডিকেলে পড়ুক,তবে তার নিজের আগ্রহ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া। আগ্রহ অনুযায়ী বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ না পেলে সেটা তার ও তার পরিবারের জন্য দুর্ভাগ্যজনক হবে বলে মনে করছে নাতাশা।
উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে এরকম অনিশ্চয়তার ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুন রশীদ রেডিও তেহরানকে বলেন, একরকম সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য প্রচুর ভালো ফলাফল দেখানো হলেও এটা বলা যাবে না ছাত্ররা মানসম্পন্ন জ্ঞান অর্জন করেছে। বরং আশাহত হবার ঘটনা বাড়ছে। তাছাড়া উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্র সুপরিকল্পনার অভাবের কারণে পরিকল্পিত সমাজও গড়ে ঊঠছে না।
ছাত্র-শিক্ষক এবং অভিভাবক সকলেই চান মানসম্মত শিক্ষা, শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ এবং মেধাবীদের জন্য উচ্চ শিক্ষার সুযোগ।
তাছাড়া শিক্ষা ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে বাণিজ্যকে প্রাধান্য না দিয়ে জ্ঞানার্জন ও ব্যবহার উপযোগিতাকে প্রাধান্য দেয়া হবে এটাও সমাজের সচেতন মানুষের দাবি।-রেডিও তেহরান