নবম-দশম শ্রেণীতে দু’বছর চারু ও কারুকলা বিষয়ে পড়া লেখা করে এসএসসি পরীক্ষা দিতে হবে কৃষি শিক্ষা বিষয়ে! এটি অবাক ও কাল্পনিক মনে হলেও চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কক্সবাজার মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬২টি এসসিসি পরীক্ষার্থীর কাছে এটিই সত্য ও বাস্তব। তাদের প্রবেশপত্রে এমনটি লেখা আছে। এসব পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা প্রবেশপত্র হাতে পেয়ে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন।
চট্টগ্রাম বোর্ড ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভুলে খেসারত দিতে হচ্ছে খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২২জন এবং কক্সবাজার মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪০জন শিক্ষার্থীকে। তারা চারু ও কারুকলা বিষয়ে দুই বছর পড়েছেন। যথারীতি টেস্ট পরীক্ষায়ও অংশ নিয়েছিল। কিন্তু এসএসসি পরীক্ষার সময়সসূচি প্রকাশের পর দেখা গেল সূচিতে নেই এ বিষয়টি। শিক্ষা বোর্ড ও বিদ্যালয় থেকে তাদের বলা হচ্ছে চারু ও কারুকলা বিষয়ে পরীক্ষা দেয়া যাবে না। এর পরিবর্তে কৃষি শিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে!
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষা। ৮ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে কৃষি শিক্ষা, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ও গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ের পরীক্ষা। ওই দিন এ দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীনের আরো ৯৯৮টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতো কৃষি শিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। অর্থাৎ পরীক্ষাকালীন সময়ের মধ্যে কোনো ক্লাস ছাড়াই এ ৬২ জন শিক্ষার্থীকে কৃষি শিক্ষা বিষয়ের ওপর ১০০ নম্বরের প্রস্তুতি নিতে হবে।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড বলেছে ভুলটা এ দুই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষেরই। কারণ চারু ও কারুকলা বিষয়টি পড়ানোর ব্যাপারে শিক্ষাবোর্ডের কোনো অনুমোদন নেই। ওই স্কুল দু’টি বোর্ডের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নিজ উদ্যোগে এ বিষয়টি শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছে। এটা স্কুল কর্তৃপক্ষের ভুল।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেছেন, খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আমরা ঠিক করে দিয়েছি। ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদের যারা চারু ও কারুকলা নিয়েছে তারা কৃষি শিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা দিবে। কক্সবাজার মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের বিষয়েও একই সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। তবে এ ভুলের জন্য শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষকেও দায়ী করছেন বিড়ম্বনার শিকার শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। তাদের যুক্তি এ দু’টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সময় চারু ও কারুকলার বিষয়টির ভুল কোর্ড নম্বর ব্যবহার করলে তা শিক্ষাবোর্ডের ডাটা এন্ট্রিতে ধরা পড়ার কথা। পরীক্ষা শুরুর পূর্ব মূহুর্তে এসে কেন এ বিষয়টি ধরা পড়ল এমন প্রশ্ন ৬২ এসএসসি পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের।
Prev Post
Next Post