শিক্ষাঙ্গন ডেস্কঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ম্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।
তাদের অভিযোগ, অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের মত মানবিক ও বিজ্ঞান ক্যাটাগরিতে বিবেচনা না করে তাদের জন্য ‘বাণিজ্য ও অন্যান্য’ অথবা ‘মাদ্রাসা, টেকনিক্যাল ও অন্যান্য’ এবং কিছুক্ষেত্রে শুধু ‘মাদ্রাসা’ এই তিন ক্যাটাগরিতে আলাদাভাবে আসন বরাদ্দ করা হয়েছে।
এতে করে এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় মাদ্রাসার আলিম পাস করে আসা শিক্ষার্থীরা অনেকক্ষেত্রে এইচএসসি সনদধারীদের চেয়ে বেশি নম্বর পেয়েও কাঙ্ক্ষিত বিভাগে ভর্তি হতে পারছেন না।
কলা ও মানবিক অনুষদের অধীন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ছেলেদের ‘বাণিজ্য, মাদ্রাসা ও অন্যান্য’ এই ক্যাটাগরিতে নবম স্থান অধিকারীর (ভর্তি পরীক্ষার রোল-৩০০১২৩০) প্রাপ্ত নম্বর ৭৭.৮০, যা মানবিক ক্যাটাগরিতে ষষ্ঠ স্থান অধিকারীর (রোল-৩০০৭৫৮৩) প্রাপ্ত নম্বরের ৭৭.৬০ চেয়ে বেশি।
কিন্তু ‘বাণিজ্য, মাদ্রাসা ও অন্যান্য’ ক্যাটাগরিতে ছেলেদের জন্য আসন সংখ্যা বরাদ্দ আছে মাত্র আটটি। ফলে ৭৫.২০ নম্বর পেয়েও মানবিক ক্যাটাগরিতে এইচএসসির শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবেন।
এই বিভাগের ভর্তি পরীক্ষায় ‘বাণিজ্য ও অন্যান্য’ ক্যাটাগরিতে মেধা তালিকার ৩৮তম স্থান অর্জনকারী মাদ্রাসা ছাত্র আহসান হাবীব বলেন, ‘আমার মোট প্রাপ্ত নম্বর ৭৪.২২। মানবিক ক্যাটাগরিতে ২৪তম স্থান অধিকারীর চেয়ে বেশি ৭৩.৬২। কিন্তু মাদ্রাসা ছাত্রদের জন্য আসন সংখ্যা কম হওয়ায় আমার ভর্তি অনিশ্চিত।’
আন্তর্জার্তিক সম্পর্ক বিভাগে ছাত্রদের জন্য মোট আসন সংখ্যা ৩৩ ও ছাত্রীদের জন্য ২২। অন্যদিকে ‘বাণিজ্য, মাদ্রাসা ও অন্যান্য’ এই ক্যাটাগরির ভর্তিচ্ছুদের জন্য আসন ছেলেদের জন্য আটটি ও মেয়েদের জন্য পাঁচটি।
একইভাবে এই অনুষদের অধীন প্রত্নতত্ত্ব, বাংলা, জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ, ইতিহাস দর্শন- এই পাঁচটি বিভাগে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের আলাদা ক্যাটাগরিতে রেখে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে এসব ক্ষেত্রেও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছে।
এছাড়া, ইংরেজি, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব এবং চারুকলা বিভাগে শুধু ছেলে ও মেয়ে- এই দুই ক্যাটাগরিতে ফলাফল প্রকাশ করা হলেও এসব ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকারের সময় মাদ্রাসা ছাত্রদের আলাদা ক্যাটাগরিতে রাখার সুযোগ থাকছে।
অনুষদগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুধুমাত্র কলা ও মানবিক অনুষদে এই ব্যতিক্রম নিয়ম অনুসরণ করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘কোন ক্যাটাগরিতে কতজন নেয়া হবে, এ ব্যাপারে বিভাগগুলো স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমরা শুধু মোট আসন সংখ্যা ও ছেলে-মেয়েদের জন্য আসনের অনুপাত ঠিক করে দেই।’