জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় বর্ষ অনার্স পরীার ইংরেজি পত্রের প্রশ্নপত্র ফাঁস সম্পর্কে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ আপত্তি জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, সিকিউরিটি প্রেসে মুদ্রণ এবং প্রশাসনের মাধ্যমে বিতরণের কাজটি নিছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে সম্পন্ন করা হয়। এ ক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো সুযোগ নেই। মহল বিশেষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশন করছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ মনে করছে।
শুধু রাজধানী নয়, সারা দেশের পরীক্ষার্থীদের হাতে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। ফাঁস হওয়া প্রশ্ন রাজধানীর বাইরে অনেক জেলা শহরের ফটোকপির দোকানে এবং যাদের ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে, তারা নিজস্ব কম্পিউটারেই প্রশ্ন পেয়েছেন। তারা বলছেন, ইন্টারনেটে শুধু ইংরেজি নয়, সব বিষয়ের প্রশ্নই পাওয়া যাচ্ছে। একটু ঘাটাঘাটি করলেই যে কেউ প্রশ্ন পেতে পারেন। এ ছাড়া মোবাইলের এসএমএসের মাধ্যমেও ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র বন্ধু ও পরিচিতজনদের মধ্যে বিলি-বণ্টন হচ্ছে। কোনো ফটোকপির দোকানেও এখন যেতে হচ্ছে না। লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের একাধিক পরীক্ষার্থী গতকাল নয়া দিগন্তকে জানান, তারা ইংরেজি প্রশ্নটি ইন্টারনেটে দেখেছেন, তবে গুরুত্ব দেননি। পরে পরীক্ষার হলে গিয়ে দেখেন, ওই প্রশ্নের সাথে পরীক্ষার হলে বিতরণকৃত প্রশ্নপত্রের শতভাগ মিলে গেছে। তারা আরো জানান, অন্যান্য পরীক্ষার প্রশ্ন এখনই নেটে পাওয়া যাচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ জানিয়েছে, পরীার আগে কেউ প্রশ্নপত্র পেয়েছেন এমন তথ্য থাকলে ওই প্রশ্নপত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপরে কাছে পাঠিয়ে দিন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীার্থীকে কোনোরূপ প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হয়ে সুষ্ঠুভাবে পরীা দিতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ইংরেজি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের খবর শুধু নয়া দিগন্তে নয়; আরো একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে। রাজধানীতে হাতে লেখা প্রশ্ন ফটোকপির দোকানে চড়া মূল্যে বিক্রি হয়েছে।
এ দিকে বিশ্বদ্যিালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) বদরুজ্জামান গতকাল আলাদা করে নয়া দিগন্তে প্রকাশিত ‘ফাঁস হওয়া প্রশ্নে স্নাতক ইংরেজি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত’ শিরোনামে সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমার বরাতে প্রতিবেদনে প্রশ্নপত্র ফাঁস সম্পর্কে যে সব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ সঠিক নয়’।
প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি নিয়ে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক হারুন-আর-রশিদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। পরে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) বদরুজ্জামানের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি তৃতীয়বারে ফোন ধরেন। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করতেই তিনি স্বীকার করেন তিনিও প্রশ্ন ফাঁসের খবর শুনেছেন। তিনি প্রতিবাদপত্রে বলেছেন, সব তথ্য সম্পূর্ণ সঠিক নয়। তিনি নয়া দিগন্তের সাথে যে সব কথা বলেছেন, তাই তুলে ধরা হয়েছে গত পরশুর প্রতিবেদনে। এখানে অতিরিক্ত বা অতিরঞ্জিত একটি শব্দও লেখা হয়নি।
Prev Post
Next Post