ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমানের উগ্র সাম্প্রদায়িকতার শিকার হয়েছেন বোরকা পরা এক ছাত্রী। ধর্মীয় কারণে ওই ছাত্রী বোরকা পরলেও সাম্প্রদায়িকতাদুষ্ট আজিজুর বাংলাদেশের সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগের ১২ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করে ওই ছাত্রীর ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের অপচেষ্টা চালায় এবং তাকে সাম্প্রদায়িক নিপীড়ন করে ক্লাস থেকে বের করে দেয়। সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, “ধর্ম নিরপেক্ষতা নীতি বাস্তবায়নের জন্য (ক) সর্ব প্রকার সাম্প্রদায়িকতা, (খ) রাষ্ট্র কর্তৃক কোন ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদা দান, (গ) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মীয় অপব্যবহার, (ঘ) কোন বিশেষ ধর্ম পালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তাহার উপর নিপীড়ন, বিলোপ করা হইবে।” বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার কলাভবনে বেলা ১১টা থেকে ১২ টায় মনোবিজ্ঞানের তৃতীয় বর্ষের ৩০৪৪ নম্বর কোর্সের ক্লাসে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, সাম্প্রদায়িকতা আক্রান্ত ওই ছাত্রী ক্লাস করতে আসলে হঠাৎ আজিজার রহমান তাকে দাড় করান। বলেন, তুমি বোরকা পড়েছ কেন? বোরকা তো জঙ্গিরা পরে। বোরকা পড়ে বোমা সরবরাহ করে। বোরকা গায়ে জড়ায়ে আর ক্লাসে আসবা না। এসব বলে ওই ছাত্রীকে শ্রেণী কক্ষ থেকে থেকে বের করে দেয়া হয়। এ সময় ওই ছাত্রী কাঁদতে কাঁদতে ক্লাস থেকে বের হয়ে যান। জানা গেছে, আজিজার রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির অন্যতম সিনেট মেম্বার। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সংবিধানে আগে আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস ছিল সংবিধানের অন্যতম মৌলভিত্তি। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি পুনস্থাপন করে। ধর্মনিরপেক্ষতা পুনঃস্থাপনের পরপরই দেশের সংখ্যাগুরু মুসলিম নারীদের বিশেষ করে ছাত্রীরা বোরকা পরার কারণে সাম্প্রদায়িক আক্রমণের শিকার হচ্ছে। যদিও সেক্যুলারিজমের নীতি অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের ধর্মপালনের অধিকার থাকবে এবং কারো ধর্মকে কটাক্ষ করলে তা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে শাস্তিযোগ্য হবে। কিন্তু বাংলাদেশে সেক্যুলারিজমের এই নীতি খুবই কম অনুসরণ করা হয়। বরং সেক্যুলার দাবিদার অনেকেই মুসলমানদের বিশ্বাস ও সংস্কৃতির ব্যাপারে শুধু সাম্প্রদায়িক আচরণই করেন না, তারা রীতিমত উগ্র মৌলবাদী দুষ্কৃতির ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন। এখন দেখার পালা সংবিধান লঙ্ঘনকারী অধ্যাপক ড. আজিজার রহমানের সাম্প্রদায়িকতার কী বিচার হয়।