পথের ধারে কিংবা ভবনে ভবনে নানা রঙের ব্যানার ঝুললেও ভিতরটা যেন তার বিপরীত। শিক্ষার্থীদের জন্য ক্লাসরুমের স্বল্পতা ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ। মনিটর থাকলেও নেই কম্পিউটারের সিপিইউ। এ যেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর করুণ চিত্র। রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেহাল চিত্র পরির্দশন করতে গিয়ে রীতিমতো ‘থ’ হয়েছেন স্বয়ং শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান নিজেই। অপরিছন্ন ক্লাসরুম, নামেমাত্র ল্যাবরেটরি, হাতেগোনা শিক্ষক ও কর্মচারী, অপ্রতুল শিক্ষা উপকরণ, কম্পিটারের নামে শুধু মনিটর সাজিয়ে রাখা ইত্যাদি অব্যস্থাপনা দেখে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপকরণ, অবকাঠামো, ল্যাবরেটরি দ্রুত উন্নতি করার নির্দেশ দেন নইলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। গতকাল (মঙ্গলবার) রাজধানীর ভিক্টোরিয়া ও অতীশ দীপঙ্কর দুটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেন শিক্ষা সচিব। তার পরিদর্শনের সঙ্গী ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়েল মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) উপ-পরিচালক জেসমিন পারভীনসহ ডজনখানে কর্মকর্তা। পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, একটি ভালোমানের স্কুলে যে শিক্ষা উপকরণ, অবকাঠামো, ল্যাবরেটরি থাকা প্রয়োজন তা নেই রাজধানীর ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি ও অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ফলে শিক্ষার্থীরা কি শিখছে তা সহজেই অনুমেয়। আমরা এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে উপকরণ, অবকাঠামো, ল্যাবরেটরি দ্রুত উন্নতি চাই। নইলে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো। ইউজিসি উপ-পরিচালক (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) জেসমিন পারভীন বলেন, রাজধানীর দুটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সরজমিন পরিদর্শন করে রীতিমতো শিক্ষাসচিব ও আমরা ‘থ’ হয়ে গেছি। তিনি বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব সুযোগ-সুবিধা থাকার কথা তার ধারের কাছেও নেই তারা। বিশ্ববিদ্যালয় তো দূরের কথা, একটি স্কুলের সুযোগ সুবিধাও নেই তাদের। এসব অব্যস্থাপনা দেখে শিক্ষাসচিব তাৎক্ষণিক এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।পরিদর্শন অংশ হিসেবে সকালে সচিব যান পান্থপথের ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে তিনি প্রথমে একটি কক্ষে গিয়ে দেখেন ১২ থেকে ১৬টি কম্পিউটারের মনিটর সাজানো আছে, কিন্তু একটিরও সিপিইউ (সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট) নেই। একজন ছাত্র সেখানে বসা ছিলেন। তার কাছে কম্পিউটারের সহজ বিষয়গুলো জানতে চাইলে সে এ বিষয়ে কোন উত্তর দিতে পারেনি। বিবিএ বিভাগের এক শিক্ষক জানান, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ ৫শ’ শিক্ষার্থী রয়েছে। আর শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৫ জন। ক্লাসরুমগুলো অপরিচ্ছন্ন। একটি কক্ষে মাত্র ক্লাস চলছে। অন্যগুলো বন্ধ রয়েছে। নামেমাত্র একটি লাইব্রেরি রয়েছে। এ বিষয়ে সচিব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর এম আর খানের কক্ষে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেহাল দশা তুলে ধরলে ভিসি জানান, অচিরেই এগুলো ঠিক করা হবে। সচিব বলেন, মাধ্যমিক স্কুলেও মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার করে শিক্ষাদান হয়, অথচ ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও বোর্ড ব্যবহার করা হয়। এ সময় পরিদর্শন টিমে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসির) উপ-পরিচালক জেসমিন পারভিন বলেন, কুমিল্লøায় স্থায়ী ক্যাম্পাসে জন্য জায়গা কিনেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ফলে আগামী সেপ্টেম্বরের পর আর ঢাকা ক্যাম্পাসে পরিচালনা সুযোগ পাবে না বিশ্ববিদ্যালয়টি। অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয় : ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পর শিক্ষা সচিব পান্থপথের অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সচিবকে জানান, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার ন্যূনতম উপকরণ নেই। ফার্মেসি ও টেক্সটাইলের কোন ল্যাবর
েটরি নেই। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে আমরা ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছি। আসল সার্টিফিকেট আদৌ পাবো কি না এ নিয়ে সন্দেহ আছে। সচিব পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফ্লোরে গিয়ে দেখতে পান বন্ধ ক্লাসরুম। কোন আলো-বাতাস প্রবেশের সুযোগ নেই। কোন কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। ফার্মেসি ও টেক্সটাইল বিভাগের ল্যাব দেখাতে পারেনি কর্মচারীরা
Prev Post
Next Post