নায়ক হেলাল খানকে গ্রেপ্তারের পর বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। কেউ বলছেন, বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় মামলার খড়গ নেমেছে তার ওপর। আবার কেউ খুঁজছেন এর পেছনে আর কী কারণ থাকতে পারে? পেছনে আর কী কারণ আছে, সে প্রশ্নের উত্তর না মিললেও হেলাল খান সম্পর্কে চমকে দেয়ার মতো তথ্য বেরিয়ে এসেছে সন্ধানে।
দেড়-দুই বছর আগের কথা। সুনামগঞ্জে সরকার দলীয় একজন সংসদ সদস্য ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) লাইসেন্স নেন। এর পেছনে মূল উদ্যোক্তা ছিলেন দেশের স্বনামধন্য একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে বেশ যোগাযোগ-সম্পর্ক ছিল হেলাল খানের। আর ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল (ভিওআইপি) সম্পর্কেও ভাল জানতেন হেলাল খান। যে কারণে ভিওআইপি ব্যবসার পুরো দায়িত্ব ছেড়ে দেয়া হয় তার ওপর। ঘটনার শুরু এখানেই।
নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানায়, সুযোগ পেয়ে মোটেও হাত ছাড়া করেননি হেলাল খান। একজন সৎ মানুষের আড়ালে থাকা অর্থলোভী চেহারাও ফুটে ওঠে সহজেই। নানাভাবে ছয়নয় করেন ব্যবসার টাকা। কৌশলে ভ্যাট, ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে লোপাট করেন মোটা অংকের টাকা। দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ করে আসছিলেন তিনি। কিন্তু ধরা খেয়ে যান বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (বিটিআরসি) আওতায় এসে। একের পর এক ফাঁস হতে থাকে হেলাল খানের অর্থ লোপাটের চিত্র। এসব ঘটনা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হলে হেলাল খানকে ভিওআইপি ব্যবসার দায়িত্ব থেকে বের করে দেন ওই ব্যবসায়ী। কেলেঙ্কারির বিচার এড়াতে দেশ ছাড়েন হেলাল খান। পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। দীর্ঘদিন সেখানেই ছিলেন তিনি। সম্প্রতি ফিরেছিলেন দেশে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শোবিজ মিডিয়ার সঙ্গে জড়িত একজন অভিনেতা বলেন, ‘উপরের হেলাল খানের সঙ্গে ভেতরের হেলাল খানের কোনো মিল নেই। তিনি আপাদমস্তক একজন সুবিধাভোগী ও সুযোগ সন্ধানী মানুষ। আসলে তার সম্পর্কে এমন অনেক অজানা তথ্য আছে, যা শুনলে তার ভক্তকূলের মনেই প্রশ্ন উঠবে, তিনি নায়ক, না খলনায়ক?’
সোমবার রাজধানীর জজকোর্ট এলাকা থেকে হেলাল খানকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে মঙ্গলবার রাজধানীর বাড্ডা থানার একটি নাশকতার মামলায় পুলিশ রিমান্ড আবেদন করলে আদালত দুইদিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। বর্তমানে তিনি ডিবি কার্যালয়ে আছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি বর্তমানে হেলাল খান জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) এর সঙ্গে যুক্ত আছেন।