আসরে শুরু থেকেই দারুণ খেলতে থাকা নেপালকে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবার সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে মেহেদী হাসান মিরাজের বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। নেপালের দেয়া ২১২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েও উইকেটরক্ষক জাকির হাসান ও অধিনায়ক মিরাজের ব্যাটে ভর করে ৬ উইকেটের বড় জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নেপালের দেয়া ২১২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের রান ১০০ পেরুনোর আগেই চার উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় জুনিয়র টাইগাররা। মন্থরগতিতে ব্যাট করতে থাকা দুই ওপেনারের ৬.৩ ওভারে ১৭ রানের জুটি ভাঙেন ধামালা। ২১ বলে ৫ রান করে ফিরে যান সাইফ হাসান। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪৬ রান তুলে বাংলাদেশকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেন পিনাক ঘোষ ও জয়রাজ শেখ। তাদের জুটি অবশ্য ভাঙে দুর্ভাগ্যজনক রানআউটের শিকার হয়ে। ৫৪ বলে ৩২ রান করে ফিরে যান পিনাক। এরপর জয়রাজ শেখ ও টুর্নামেন্টের সেরা ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত দ্রুত বিদায় নিলে বাংলাদেশের জয়ের আশায় জমে কালো মেঘ।
তবে সেখান থেকেই দলকে টেনে তোলেন জাকির হাসান ও অধিনায়ক মিরাজ। তাদের অবিচ্ছিন্ন ১১৭ রানের জুটিতে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। ১০ বল আর ৬ উইকেট হাতে রেখে প্রথমবার সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে বাংলাদেশের। ৭৭ বলে ৭৫ রানের অসাধারণ একটি ইনিংস উপহার দেন জাকির হাসান। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ৫টি চার ও ১টি ছয়ের মারে। আর মিরাজের ব্যাট থেকে আসে ৫৫ রান। ৬৫ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৩টি চারের মার। ১০ ওভারে ৩৩ রানে ২ উইকেট নিয়ে নেপালের সফলতম বোলার সুনীল ধামালা।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা নেপাল অধিনায়ক রাজু রিজালের সর্বোচ্চ ৭২ রানের সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেটে ২১১ রান তোলে। দলীয় ১৭ রানে সন্দ্বীপকে (৭) বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান টাইগার বোলার সাইফউদ্দিন। এরপর যুগেন্দ্র সিংকে (১) সাইফের তালুবন্দি করে সাজঘরে ফেরান রানা।
এরপর ধামালাকে সঙ্গে নিয়ে ৪৪ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন দলের অধিনায়ক রাজু রিজাল। ব্যক্তিগত ২৫ রানে করে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান সুনীল। এরপর আরিফকে সঙ্গে নিয়ে ৫১ রানের জুটি গড়েন রাজু। দলীয় শত রানের সঙ্গে নিজের অর্ধশত তুলে নেন রাজু।
একপ্রান্ত আগলে ব্যাট করতে থাকা নেপাল দলের অধিনায়ক রাজু রিজাল (৭২) রান আউটের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফিরে যান। রাজভির সিংও দ্রুত সাজঘরে ফিরিয়ে খেলার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে তুলে নেয় স্বাগতিক বাংলাদেশ। এরপর নিয়মিত বিরতেতে উইকেট হারাতে থাকলে ২১১ রানেই শেষ হয় নেপালের ইনিংস। বাংলাদেশের পক্ষে সাইফউদ্দিন নেন ২ উইকেট।
টুর্নামেন্টের ইতিহাসে নেপালের এটাই সেরা অর্জন। এর আগে ২০০০ সালে একার তারা শেষ আটে খেলেছিল। শ্রীলঙ্কার মাটিতে অনুষ্ঠিত সে আসরে অষ্টম হয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করে তারা।
Prev Post
Next Post