বাংলাদেশের সঙ্গে পারল না চ্যাম্পিয়নরা

0

f72222d5da2aa52e89e37f3d3cec4961-Shaifuddinঅনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ম্যাচেই সেই চ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশের যুবারা। বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের ৪৩ রানে হারিয়ে শুভসূচনাই হলো বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ দলের। এই জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হলো। বড় কোনো অঘটন না ঘটলে কোয়ার্টার ফাইনালেও এক পা দিয়ে রাখল বাংলাদেশ দল।
এই বাংলাদেশ দলের লক্ষ্যটা অনেক বড়। অনেক দিন ধরেই এই মিশনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন মিরাজরা। সেই প্রস্তুতিতে বড় আত্মবিশ্বাস হয়ে এসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগের ১৪ ম্যাচের ১১টিতে জয়ের দেখা পাওয়া। সেই আত্মবিশ্বাসের ঝলকানি দেখা গেল আজ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। নাজমুল হোসেনের ৭৩, জয়রাজ শেখের ৪৬ আর পিনাক ঘোষের ৪৩ রানের সুবাদে প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২৪০ তুলেছিল বাংলাদেশ। শুরু থেকে ধুঁকতে ধুঁকতে দক্ষিণ আফ্রিকা ৮ বল বাকি থাকতে অলআউট হলো ১৯৭ রানে। বাংলাদেশের জন্য বড় তৃপ্তি হয়ে থাকল পেস-স্পিন মিলিয়েই প্রোটিয়াদের ধসিয়ে দেওয়া। অবশ্য বলা বাহুল্য, আসল কাজ স্পিনাররাই করেছেন। তবে সর্বোচ্চ তিনটি করে উইকেট একজন স্পিনার (মিরাজ‍) ও একজন পেসারের (সাইফুদ্দিন)।
ওপেনার লিয়াম স্মিথ একা চেষ্টা করেছেন। সেঞ্চুরিও এসেছে তাঁর ব্যাটে। কিন্তু বাকি ব্যাটসম্যানদের কেউ বাংলাদেশের বোলিংয়ের কোনো জবাব খুঁজে পায়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার সাতজন ব্যাটসম্যান মিলে স্কোরবোর্ডে যোগ করেছেন মাত্র ৩৪ রান!

স্মিথকে সেঞ্চুরির পূর্ণ করার পরের বলেই ফিরিয়ে দেন সালেহ আহমেদ শাওন। তবে এ ক্ষেত্রে শাওনের চেয়েও কৃতিত্বটা বেশি পাচ্ছেন মিরাজ। তাঁর অবিশ্বাস্য ক্যাচটিই নিভিয়ে দেয় প্রোটিয়াদের আশার শেষ প্রদীপ। তাঁর ১০০ রানের ইনিংসটির পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ডায়ান গালিয়েমের ২২। ফারহান সায়ানভালা করেছেন ১৭। শন হোয়াইটহেড ১৩—এই চারজনের বাইরে প্রোটিয়া ব্যাটিংয়ে দুই অঙ্কের সংগ্রহ নেই আর একটিও।
মিরাজ-সাইফ বেশি উইকেট পেলেও পুরো কৃতিত্ব ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন বোলাররা। সাঈদ সরকার আর সালেহ আহমেদও নিয়েছেন নিয়েছেন ২টি করে উইকেট।
সকালে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরীর ব্যাটিং বান্ধব পরিবেশে ব্যাটিংই বেছে নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক মেহেদী মিরাজ। পরপর তিনটি মেডেন দিয়ে শুরু হওয়া বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সেরা চরিত্র নাজমুল হোসেন। ব্যাটিংয়ে অনেকটা সময় জুড়েই ছিল নাজমুল-শো। ২০তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ব্যাট হাতে নেমেছেন। প্রায় ৩০ ওভার ধরে ব্যাটিং করে নাজমুল প্রায় একাই টেনে নিয়ে যান দলকে।
বড় জুটি গড়ায় ব্যর্থতাটা না থাকলে এই সংগ্রহটা আরও বড় গতেই পারত বাংলাদেশের। তবে ২৪০ রানের পুঁজিটাও যে মন্দ ছিল না, সেটা দিন শেষে দারুণভাবেই প্রমাণ করলেন বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটাররা। ৬০ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর আর হালে পানি পায়নি বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। শেষ পর্যন্ত করলেন অসহায় আত্মসমর্পণ।
ম্যাচ সেরা নাজমুল। তবে ব্যাটে ২৩, বল হাতে ৩.৮২ ইকোনমি রেটে ৩ উইকেট, বল হাতে প্রথম ওভারটি করা, প্রথম উইকেটটি তুলে নেওয়া, সঙ্গে সেঞ্চুরি করা স্মিথকে অবিশ্বাস্য ক্যাচে ফিরিয়ে ম্যাচ শেষ করে দেওয়া—এ যেন মিরাজময় এক ম্যাচ। এই না হলে অধিনায়ক!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯: ৫০ ওভারে ২৪০/৭ (সাইফ ৬, পিনাক ৪৩, জয়রাজ ৪৬, নাজমুল ৭৩, মেহেদী মিরাজ ২৩, জাকির ১৯, সাঈদ ৪, সাইফুদ্দিন ১৭*, সঞ্জিত ২*; মুল্ডার ৩/৪২, সিপামলা ১/৪৭, হোয়াইটহেড ১/৪৪, ডি জর্জি ১/৩৪)
দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯: ৪৮.৪ ওভারে ১৯৭/১০ (স্মিথ ১০০, গালিয়েম ২২, সায়ানভালা ১৭, হোয়াইটহেড ১৩; মেহেদী মিরাজ ৩/৩৭, সাইফুদ্দিন ৩/৩০, সাইদ ২/৩৯, সালেহ ২/৩৭)
ফল: বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ৪৩ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নাজমুল হোসেন

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More