[ads1]২৩ বছরের শিরোপা খরা ঘোচানোর শেষ ধাপে পৌঁছে গেছে আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসির রেকর্ডের দিনে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রকে ৪-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেছে লিওনেল মেসির দল।
বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে ম্যাচ শুরুর পর হিউস্টনের এনআরজি স্টেডিয়ামের প্রায় ৭১ হাজার দর্শকের বেশিরভাগকে হতাশ করে এগিয়ে যেতে সময় নেয়নি আর্জেন্টিনা। তৃতীয় মিনিটে লিওনেল মেসির উঁচিয়ে বাড়ানো বলে হেডে একটু এগিয়ে আসা গোলরক্ষক ব্র্যাড গুজানের উপর দিয়ে বল জালে পাঠান লাভেস্সি।
চতুর্দশ মিনিটে প্রায় মাঝ মাঠের কাছ থেকে বল নিয়ে এগিয়ে শট নেন মেসি। চার খেলোয়াড় মিলেও তাকে রুখতে পারেনি। বলটি অবশ্য ঠেকিয়ে দেন গুজান। তবে ৩২তম মিনিটে মেসির রেকর্ড গড়া আটকাতে পারেননি যুক্তরাষ্ট্র গোলরক্ষক।
যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে আর্জেন্টিনা ফেবারিট হিসেবেই মাঠে নেমেছিল। কিন্তু তাই বলে ম্যাচটা এমন একতরফা হবে! ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই মেসির আলতো বাতাসে ভাসানো বলে দারুণ হেড করে দলকে এগিয়ে দেন এজেকিয়েল লাভেজ্জি। ৩২ মিনিটে এল ইতিহাস গড়া সেই মুহূর্ত। বল নিয়ে ঝড়ের বেগে যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণে ঢুকছিলেন মেসি। তাঁকে থামাতে বিকল্প পথ বেছে নিতেই হলো। ফাউল করেই মেসিকে থামাল যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণ। আগের দিনই জেরার্ডো মার্টিনো বলেছিলেন, মেসিকে থামাতে ন্যায়-অন্যায় বহু উপায় নেয় দলগুলো, কিন্তু থামাতে পারে কি? আজও পারল না শেষ পর্যন্ত।[ads1]
নিজেই আদায় করে নেওয়া ফ্রি কিক থেকে মাঝারি দূরত্বের শটে ডান পোস্ট ঘেঁষে বল পাঠালেন জালে। আর এই গোল দিয়েই পেরিয়ে গেলেন গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে। আর্জেন্টিনার হয়ে মেসির গোল এখন ৫৫টি, বাতিগোলের ৫৪টি। আর কারও ৫০ গোলও নেই, এমনকি দ্য গ্রেট ডিয়েগো ম্যারাডোনারও।
ডি-বক্সের খানিকটা বাইরে মেসিকে ফাউল করে বিপদটা ডেকে আনেন ক্রিস ওন্ডোলোভস্কি। ফ্রি-কিক নেওয়ার আগে রূপালি বুটের ফিতা একটু সময় নিয়ে বাঁধেন মেসি; তারপর নেন বাঁ পায়ের এক শট। বল রক্ষণ-দেয়ালের উপর দিয়ে পার হয়ে একটু বাঁক খেয়ে ডান কোণের ক্রসবার ঘেঁষে জালে জড়ায়। এই আসরে আর্জেন্টিনা অধিনায়কের গোল হলো ৫টি।
জাতীয় দলের হয়ে মেসির গোল হলো ৫৫টি। গাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে ছাড়িয়ে বার্সেলোনার ফরোয়ার্ডই এখন দেশের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা।
১১২ ম্যাচ খেলে এই রেকর্ড গড়লেন মেসি। বাতিস্তুতা ৫৪ গোল করেছিলেন ৭৭ ম্যাচ খেলে।
বিরতির ঠিক আগে গুজানের মাথার উপর দিয়ে বল জালে পাঠিয়েছিলেন লাভেস্সি। তবে তার আগেই অফসাইডের সংকেত দিয়েছিলেন লাইন্সম্যান।
দ্বিতীয়ার্ধের পাঁচ মিনিটের মধ্যেই আর্জেন্টিনার ফাইনালে ওঠা নিশ্চিত করে দেন হিগুয়াইন। ডি-বক্সে বল ধরে প্রথম প্রচেষ্টায় তার নেওয়া শট ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন গুজান। ফিরতি বল জালে পাঠিয়ে দেন মার্তিনোর প্রথম পছন্দের স্ট্রাইকার।
৮৩তম মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর থেকে মেসির শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গুজান। তবে তিন মিনিট পরেই হিগুয়াইনকে দিয়ে গোল করিয়ে বড় জয় নিশ্চিত করেন মেসি।
ডি-বক্সে বল নিয়ে ঢুকে নিজে শট না নিয়ে আর্জেন্টিনা অধিনায়ক বল বাড়িয়েছিলেন হিগুয়াইনকে। কোনো ভুল করেননি নাপোলির এই তারকা ফরোয়ার্ড।
নিউ জার্সির ইস্ট রাদারফোর্ডে বাংলাদেশ সময় আগামী সোমবার সকালে ফাইনালে ১৪ বারের কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়নদের প্রতিপক্ষ চিলি ও কলম্বিয়ার মধ্যে বিজয়ী দল।
সেই ১৯৯৩ সালে কোপা আমেরিকায় সেরা হয়েছিল আর্জেন্টিনা। এরপর বড় কোনো আসরের শিরোপা জিততে পারনি দুই বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপ আর গত বছরের কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেও পারেনি তারা। যুক্তরাষ্ট্রে কোপা আমেরিকার শতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত এই আসরে সেই অপেক্ষা অবসানের শেষ ধাপে এখন মেসির দল।[ads2]