ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের প্রস্তুতির পর্ব শেষ হল কাল। প্রায় দেড় মাস অনুশীলনের পর দুটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছেন মুশফিকুর রহিমরা। বুধবার ওয়েস্ট ইন্ডিজে উড়াল দেবে টাইগাররা। সাকিব আল হাসানকে ছাড়াই বছরের প্রথম বিদেশ সফরে ভালো করার ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ জাতীয় দল। কাল মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সফরপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে সে কথাই জানালেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।
প্রশ্ন : কোচ সিরিজ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। আপনি কি মনে করেন সিরিজটা কঠিন হবে?
মুশফিক : কঠিন তো অবশ্যই। ক্রিকেট সহজ খেলা নয়। আমাদের লক্ষ্য প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলা। ভালো খেললে যে কোনো ফরম্যাটেই আপনি জিতবেন। আর এটাই আমাদের লক্ষ্য। ওখানে আমাদের সবকিছু যদি ভালো হয় তাহলে কয়েকটা ম্যাচ জেতার সুযোগ আছে। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে এই মুহূর্তে ভালো ফর্মে আছে তা নয়। সর্বশেষ সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তারাও হেরেছে। মানসিকভাবে ওরাও হতাশ। আমাদের লক্ষ্য নিজেদের সেরাটা খেলার।
প্রশ্ন : আগের সিরিজগুলোতে সাকিব না থাকলে সবার মধ্যে ভালো করার একটা প্রবণতা দেখা যেত। এবার তিনি নেই, এটা প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে কিনা?
মুশফিক : না। মোটিভেশন আমাদের সব সময় থাকে। কে আছে আর কে নেই সেটা বিষয় না। সাকিব আমাদের বড় পারফরমার। কিন্তু বিষয়টা এমন না যে সে থাকলে সবাই স্বস্তিতে থাকত বা সব কাজই ও একাই করবে। ক্রিকেট কিন্তু একজনের খেলা না। আমাদের মতো দলে তিন-চারজনকে পারফর্ম করতে হবে। আমাদের কয়েকজন খেলোয়াড় ফর্মে নেই। ফেরার জন্য গত এক-দেড় মাস তারা কঠোর পরিশ্রম করছে। তাদের জন্য এটা একটা সুযোগও। আমি দেখতে পাচ্ছি তাদের সবার মধ্যে এটা কাজ করছে। আমার মনে হয় তারা এবার সেরা পারফরম্যান্স করতে পারবে।
প্রশ্ন : ওদের কন্ডিশনে নিউজল্যান্ড তাদের হারিয়েছে। আপনারা অনেকদিন খেলার মধ্যে নেই। সেক্ষেত্রে এটা কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা?
মুশফিক : বিরতি তো অবশ্যই আমাদের একটু সাহায্য করবে। অনেকদিন আমরা লংগার ভার্সন খেলি না। যেহেতু আমরা ওখানে গিয়ে একটি ওয়ানডে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলব। তারপর টি ২০ খেলব। ওদের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার সুযোগ আছে। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজে এর আগেও আমরা খেলেছি। আমরা একটু হলেও জানি। সবকিছু নির্ভর করে ওখানে গিয়ে কেমন খেলব তার ওপর। আশা করছি, সবকিছুই আমাদের ভালো হবে।
প্রশ্ন : এ বছরটা আমাদের ভালো যায়নি। ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে কিনা?
মুশফিক : এখন আমরা চেষ্টা করছি। এ বছর এখনও অনেক খেলা বাকি রয়েছে। পেছনের দিকে না তাকিয়ে সামনের সুযোগগুলো কাজে লাগানোর চেষ্টা করব। সেদিকেই আমরা ফোকাস রাখার চেষ্টা করছি। আমাদের দুর্বলতাগুলো কাটানোর চেষ্টা করছি। ভালো খেলা এবার আমাদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
প্রশ্ন : এবারও ২০১০ সালের পুনরাবৃত্তি হতে পারে কি?
মুশফিক : ভালো স্মৃতি থাকলে সেটা অনেক কাজে দেয়। ওই সময়ে আমাদের মধ্যে গতি ছিল। এছাড়া আমরা ভালো ক্রিকেটও খেলেছিলাম। কিন্তু এবার ওদের দলটা আগের চেয়ে শক্তিশালী হবে। ভালো ক্রিকেট আপানি যেখানেই খেলেন না কেনো যেকোনো দলকে হারানো সম্ভব। গত এক-দেড় বছর আমরা যেমন খেলছিলাম তেমন এই বছর খেলতে পারছি না। যেন জয়ে ফিরতে পারি সেই আশা নিয়ে যাচ্ছি।
প্রশ্ন : উইকেট থেকে কোনো সুবিধা পাবেন কিনা?
মুশফিক : ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া বা দক্ষিণ আফ্রিকার মতো বাউন্সি উইকেটে হয়তো আমরা খেলতে যাচ্ছি না। তবে এখানেও সহজ হবে না। আমরা বাইরে খেলতে যাচ্ছি। আর বাইরে আমাদের অর্জন যে খুব ভালো সেটাও না। আমরা কিছু পরিকল্পনা করেছি ওদের বিপক্ষে খেলার জন্য। ওদের যেন হারানো যায়।
প্রশ্ন : দলে তরুণ কিছু ক্রিকেটার আছেন। কেউ এই প্রথম দেশের বাইরে যাচ্ছেন। তাদের উন্নতি কেমন মনে হচ্ছে?
মুশফিক : এবার অনেকেই দলে আছে যারা প্রথম সফরে যাচ্ছে। বিজয় (এনামুল হক), আল-আমিন, মুমিনুল (হক), তাসকিন (আহমেদ)- এরা নতুন। তাদের জন্য শুভ কামনা থাকবে। তারা যেভাবে উন্নতি করছে সেদিক থেকে ওখানে গিয়ে যেন ভালো করতে পারে এটাই আশা করছি। আমাদের অনেক খেলোয়াড় আছে যাদের ওরা (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) এখনও ফেস করেনি, সেটা আমাদের জন্য বাড়তি সুবিধা হতে পারে।
Next Post