কোলগেট টোটাল টুথপেস্টে ব্যবহৃত উপাদান ক্যানসার তৈরি করতে পারে। এটি প্রাণিদেহের জন্যও এক বড় হুমকি। ব্লুমবার্গ নিউজের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল প্রকাশ করেছে এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন।
কোলগেটের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় টুথপেস্টে ব্যবহৃত ট্রাইক্লোসেন (triclosan) মাড়ির রোগ প্রতিরোধ করে। কোলগেটের এই দাবিকে সমর্থন করে ১৯৯৭ সালে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) থেকে ট্রাইক্লোসেন ব্যবহারের অনুমোদনও দেওয়া হয়। যদিও সম্প্রতি প্রকাশিত তাদের সেই অনুমোদনেই দেখা যায় ট্রাইক্লোসেন নিয়ে সংশয় ছিল খোদ এফডিএরই। তাছাড়া কোলগেটেরই এক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উপর ভিত্তি করে নিজেদের অনুমোদন দিয়েছিল এফডিএ। অবশ্য কোলগেটও জানতো অতিরিক্ত ট্রাইক্লোসেন ব্যবহারে রয়েছে ক্যান্সারের ঝুঁকি- এই কথা রয়েছে সেই অনুমোদন পত্রেই। তবে এতদিন সেটি প্রকাশ না হওয়ায় ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকার বিষয়টি অজানাই ছিল সাধারণ মানুষের কাছে। ফ্রিডম অব ইনফরমেশন অ্যাক্টের একটি মামলার পরপরই এফডিআইয়ের ওই অনুমোদন পত্র জনসম্মুখে আসে।
বর্তমানে স্বতন্ত্র এক গবেষণায় দেখা গেছে, এই ট্রাইক্লোসেন থেকে ক্যানসার কোষ বৃদ্ধি হতে পারে। গবেষণায় আরো বলা হয় হয়, কোলগেটের মধ্যে ব্যবহৃত উপাদান অপরিপক্ব শিশু জন্মের জন্য দায়ী এবং হাড়ের বৃদ্ধিতে সমস্যা করতে পারে।
বিজ্ঞানীরা বলেন, ‘এ কারণেই ১৭ বছর আগের দেওয়া অনুমোদনটি যথাযথ পরিমাণে পরীক্ষা করা হয়েছিল কি না এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।’
২০১০ সালের একটি গবেষণায় দেখা যায়, ট্রাইক্লোসেন ব্যাকটেরিয়ার দূষণকে মুক্ত রাখে, তবে এটি ইঁদুরের প্রজননক্ষমতাকে হ্রাস করে। ২০১৩ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়, এই উপাদানটি শুক্রাণুর উৎপাদন কমিয়ে দেয়।
২০০৩ সালের ক্যানসার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের একটি পরীক্ষায় দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ৭৫ শতাংশ মানুষের প্রস্রাবে ট্রাইক্লোসেন রয়েছে।
গবেষণার বিষয়টি অস্বীকার করে কোলগেট থেকে দাবি করা হয়, এই রাসায়নিক পদার্থ মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয়। ১৯ হাজার লোকের ওপর করা ৮০টি গবেষণার কথাও বলেন তারা।
এদিকে, এফডিএ তার ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, ট্রাইক্লোসেন মানুষের জন্য খুব ক্ষতিকর না হলেও, প্রাণিদেহের জন্য এটি অনেক ক্ষতির। তাই এর আরো পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।
২০১০ সালে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ট্রাইক্লোসেনকে খাবারে ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।