শক্তির বিচারে এগিয়ে কারা?

0

BPLবাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) ২০১৫ আসরে অংশ নেয়া ৬ দলের মধ্যে শক্তির বিচারে কোনো দলই কারও চেয়ে কম নয়। ‘কোনো দলেরই খুব শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ নেই। সব দলই মোটামুটি এক রকমই হবে।’ সকালে প্লেয়ার ড্রাফট উদ্বোধনের সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান এমপি যে বক্তব্য দেন, দিনশেষে সেটা সত্য প্রমাণ করে সব দল।
আন্তর্জাতিক প্লেয়ারদের মধ্যে কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকার, তিলকারত্নে দিলশান, পাকিস্তানের বিস্ময়কর প্রতিভা কিন্তু ক্যারিয়ারে কলঙ্ক লেপন করা মোহাম্মদ আমির, অতিমানবীয় ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল, গতিময় ওয়াহাব রিয়াজ, বুমবুম শহীদ আফ্রিদি, শোয়েব মালিক, সুনীল নারিনের মতো প্লেয়াররা যেমন এবারের আসরকে বিশ্ব ক্রিকেটে আরও বর্ণিল করে উপস্থাপন করবে তেমনি প্রতিটি দলের মধ্যে জায়গা পাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রতিভাধর তারকারাও দলগুলোর মধ্যে রয়েছেন।
তবে শক্তিমত্তার সূক্ষ্ম বিশ্লেষণে গেলে প্রথমেই সাম্প্রতিক সময়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে থাকা বা ছোট সংস্করণে একাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার মতো প্লেয়াররা কে কোন দলে গেলো তার বিবেচনায় আনতে হবে। বিপিএলের তৃতীয় মৌসুমে এবারের আয়োজনে এরকম অসামান্য নৈপুণ্যের অধিকারী যে কয়েকজন প্লেয়ার রয়েছেন তাদের মধ্যে শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিধ্বংসি ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল, পাকিস্তানের শহিদ আফ্রিদিরা যেমন রয়েছেন তেমনি রয়েছেন বাংলাদেশের সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালরাতো রয়েছেনই।
ঢাকা ডাইনামাইটসের আইকন প্লেয়ার নাসির হোসেন, চিটাগং ভাইকিংসের তামিম ইকবাল, বরিশাল বুলসের মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, রংপুর রাইডার্সের সাকিব আল হাসান, সিলেট সুপারস্টার্সের মুশফিকুর রহিম এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের আইকন প্লেয়ার হলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। মাঠের পারফরম্যান্সে এই প্লেয়ারদের সমতার ব্যাপারে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং এবং অলরাউন্ডারদের কে কোন দলে গেলো তা এই ছয়টি দলের শক্তিমত্তার বিশ্লেষণে সাহায্য করবে।
ঢাকা ডাইনামাইটস
ঢাকার প্লেয়ারদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডারদের একজন নাসির হোসেন, বাংলাদেশের পেস বোলিংয়ের তরুণ সেনসেশন, কাটার স্পেশালিস্ট মুস্তাফিজুর রহমান। এছাড়াও প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরির মালিক ব্যাটিং বিস্ময় মোসাদ্দেক হোসেন, সদ্যই অবসরে যাওয়া কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারা ব্যাটিং সাইডকে শক্তিশালী করেছেন।
এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে রয়েছেন স্পিনার মোশাররফ হোসেন রুবেল, ব্যাটসম্যান শামসুর রহমান, মোহাম্মদ সৈকত আলি, নাবিল সামাদ, মোহাম্মদ আবুল হাসান রাজু, ইরফান শুক্কুর, নেদারল্যান্ডসের রায়ান টেন ডোয়েচকেট, পাকিস্তানের সোহেল খান ও শাহজাইব হাসান এবং ইংল্যান্ডের ডেভিড মালান।
অলরাউন্ডারদের মধ্যে রয়েছেন ফরহাদ রেজা ও রায়ান টেন ডোয়েচকেটট, বোলারদের মধ্যে অভিষেক টেস্টেই সেঞ্চুরি পাওয়া পেস বোলার আবুল হাসান, বাহাতি অর্থডক্স বোলার নাবিল সামাদ, পেস বোলার সোহেল খান এবং ব্যাটসম্যান রয়েছেন ইরফান শুক্কুর, ইংল্যান্ডের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের ঝড়ো ব্যাটসম্যান ডেভিড মালান ও শাহজাইব হাসান।
ঢাকা ডাইনামাইটসের প্লেয়ারদের বিবেচনায় দলটি সবদিক দিয়েই একটি শক্তিশালী দল গড়েছে বলা যায়। বোলার, ব্যাটসম্যান ও অলরাউন্ডারদের সম্মিলন ঘটেছে এই দলে।
চিটাগং ভাইকিংস
চিটাগং ভাইকিংসের আইকন প্লেয়ার তামিম ইকবাল ছাড়াও ব্যাটসম্যানদের মধ্যে রয়েছে এনামুল হক বিজয়, নাফিস ইকবাল খান রয়েছেন। এছাড়াও অলরাউন্ডার শ্রীলঙ্কার তিলকারত্মে দিলশান ও জীবন মেন্ডিস, জিয়াউর রহমান, নাইম ইসলাম আছেন। শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের দলটিতে রয়েছে বাংলাদেশের পেস সেনসেশন তাসকিন আহমেদ, পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমির। এছাড়াও স্পিন আক্রমণে রয়েছেন পাকিস্তানের সাঈদ আজমল, বাংলাদেশের ইলিয়াস সানি, স্পিনার এনামুল হক, সাউথ আফ্রিকার রবিন পিটারসন। শক্তিমত্তার বিচারে বোলিং আক্রমণে দলটিকে বেশিই ভয়ঙ্কর দেখালেও অন্যান্য সেকশনের প্লেয়াররাও কম শক্তিশালী নয়।
বরিশাল বুলস
আইকন প্লেয়ার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ছাড়াও রয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অতিমানবীয় ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল। এছাড়াও ব্যাটসম্যানদের মধ্যে রয়েছেন জিম্বাবুয়ের ব্রেন্ডন টেইলর, শাহরিয়ার নাফিস আহমেদ, রনি তালুকদার, মেহেদি মারুফ। অলরাউন্ডারদের মধ্যে রয়েছেন সাব্বির রহমান. মোহাম্মদ শরিফুল্লাহ, সাজেদুল ইসলাম, পাকিস্তানের ইমাদ ওয়াসিম। পেসারদের মধ্যে মো. আল-আমিন হোসেন, পাকিস্তানের মোহাম্মদ সামি। স্পিনার সোহাগ গাজী, তাইজুল ইসলামর, নাদিফ চৌধুরী ছাড়াও রয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেভিন কুপার ও এভিন লিউয়িস, শ্রীলঙ্কার সিকুগ প্রসান্না।
রংপুর রাইডার্স
আইকন প্লেয়ার সাকিব আল হাসান ছাড়াও সৌম্য সরকারকে দলে নিয়ে ভালো পজিশনে রয়েছে দলটি। এছাড়াও শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা ও সাচিত্রা সেনানায়েকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ড্যারেন স্যামি ও লেন্ডন সিমন্স, পাকিস্তানের পেস বোলার ওয়াহাব রিয়াজ, আরাফাত সানী, মোহাম্মদ মিঠুন, মুক্তার আলী, সাকলাইন সজীব, জহুরুল ইসলাম আবু জায়েদ চৌধুরী রাহি, মোহাম্মদ মুরাদ খান, রাসেল আল মামুন এবং আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবি রয়েছেন।
সিলেট সুপাস্টার্স
আইকন প্লেয়ার মুশফিকুর রহিম ছাড়াও দলটিতে রয়েছে রুবেল হোসেন এবং পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি। এছাড়াও রয়েছে মমিনুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, কাজী নুরুল হাসান সোহান, মোহাম্মদ শহিদ, নাজমুল হোসেইন অপু, জুনায়েদ সিদ্দিক, নাজমুল হোসেন মিলন, আবু সায়েম আলম চৌধুরী, ইংল্যান্ডের রবি বোপারা, ক্রিস জর্দান ও জশ কোব, অস্ট্রেলিয়ার ব্র্যাড হগ, পাকিস্তানের সোহেল তানভির।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস
আইকন প্লেয়ার বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওয়ানডে ও টি-২০ সংস্করণের ক্রিকেটের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ছাড়াও দলটিতে রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সুনীল নারিন।
এছাড়াও রয়েছেন উইকেট কিপার ও ব্যাটসম্যান লিটন কুমার দাস, ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস, শুভাগত হোম চৌধুরী, চলতি বছরের জাতীয় ক্রিকেট লীগের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী সাঞ্জামুল ইসলাম, উদীয়মান পেস বোলিং তারকা কামরুল ইসলাম রাব্বি, অলরাউন্ডার আরিফুল হক, মাহমুদুল হাসান লিমন, মোহাম্মদ নাঈম ইসলাম, আবু হায়দার রনি, ধীমান ঘোষ, পাকিস্তানের শোয়েব মালিক, ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার ড্যারেন স্টিভেন্স, শ্রীলঙ্কার নুয়ান কুলাসেকারা, লাহিরু থিরিমান্নে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে রাসেল ও মারলন স্যামুয়েলস।
মাশরাফি, সাঞ্জামুল, সুনীল নারিনকে নিয়ে দলটির বোলিং আক্রমণ শক্তিশালী। ইমরুল কায়েস, শোয়েব মালিক, লিটন কুমারদের নিয়ে ব্যাটিং আক্রমণও উল্লেখযোগ্য।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More