[ads1]সালমান খানের ‘বজরঙ্গি ভাইজানের’ মতোই নানা চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে অবশেষে নিজের দেশে মায়ের কোলে ফিরেছে ভারতের সনু। সে ছয় বছর আগে পাচার হয়ে বাংলাদেশে এসেছিল।
বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে দিল্লি পৌঁছে ১২ বছর বয়সের সনু। পরে তাকে তার মা-বাবার কাছে তুলে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার বিমানবন্দরে সনুকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তার মা-বাবা। পরে তিনজনে দেখা করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে। এ সময় শিশুটিকে আদর করে বুকে জড়িয়ে ধরেন সুষমা স্বরাজ।
মূলত ‘বাংলাদেশের বজরঙ্গি ভাইজান’ খ্যাত জামাল ইবনে মুসার ঐকান্তিক প্রচেষ্টাতেই শিশুটি ফিরে পেয়েছে তার মা-বাবাকে। ৫২ বছর বয়সি জামাল ইবনে মুসার বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার গেরামর্দন গ্রামে।
শিশুটিকে ভারতে পৌঁছে দিতে মুসাকে অনেক খেসারত দিতে হয়েছে। দুটি মিথ্যা মামলায় জেল খেটেছেন ১ মাস ২৪ দিন। হারাতে হয়েছে জীবিকার একমাত্র অবলম্বন ঢাকার একটি বেসরকারি কোম্পানির চাকরি। তবু তিনি হাল ছাড়েননি। নিজের পয়সা খরচ করে দিল্লি গেছেন এবং ১৫ দিন দিল্লির পথে পথে ঘুরে খুঁজে বের করেছেন সনুর মা-বাবাকে।[ads1]
[ads2]এর আগে ২০১০ সালে সনুকে ভারতের নয়াদিল্লি থেকে পাচার করে বরগুনার বেতাগী উপজেলার গেরামর্দন গ্রামের হাসি বেগমের হাতে তুলে দেয় পাচারকারীরা। সনুর ওপর হাসি বেগম অত্যাচার চালাতেন। এর প্রতিবাদ করেন একই গ্রামের বাসিন্দা জামাল ইবনে মুসা। তিনি উদ্যোগ নেন সনুকে তার মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার। তবে এজন্য তাকে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শিশুটিকে ভারতে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ায় এই ‘বজরঙ্গি ভাইজানের’ বিরুদ্ধে একে একে চারটি মামলা করেন হাসি বেগম।
নির্যাতনের শিকার সনু একপর্যায়ে হাসি বেগমের বাড়ি থেকে পালায়। পরে জামাল তাকে খুঁজে বের করে আদালতের হাতে তুলে দেন। আদালত সনুকে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠান। পরে জামাল গত ১৪ মে দিল্লিতে গিয়ে সনুর মা–বাবার সন্ধান পান। এরপর তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে দেখা করে বিস্তারিত জানান।ভারত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সনুকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর মধ্যে ভারতীয় হাইকমিশনের উদ্যোগে পরীক্ষা করা হলে সনুর সঙ্গে তার মা–বাবার ডিএনএ মিলে যায়। মঙ্গলবার বিকেলে আদালত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সনুকে গ্রহণ করেন ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মকর্তা রমাকান্ত গুপ্ত।সনুকে মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য জামালের ওই উদ্যোগের কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।সনুকে বাবা-মার কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার পর জামাল ইবনে মুসা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার ও আমার পরিবারের ওপর দিয়ে গত কয়েক বছরে যে ঝড় গেছে, তাতে এখন আর আমার কোনো আক্ষেপ নেই। সনুর মা-বাবা ও প্রতিবেশীদের আনন্দ দেখে আমার সব দুঃখ-কষ্ট ধুয়ে গেছে।’[ads2]