বাড়ছে সরকারি চাকরির বয়সসীমা !

0

government-jobs-age-limitচাকরির বয়সের সময়সীমা নির্ধারণ নিয়ে অনেকের মনেই অসন্তোষ ছিল । এর আগে সরকারি চাকরিতে যোগদানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ছিল ৩০ বছর । অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেটিকে পর্যাপ্ত সময় বলে মনে করতেন না চাকরিপ্রার্থীরা । অবশেষে বাংলাদেশ সরকার দেশের প্রচলিত বাস্তবতার কথা বিবেচনা করে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে। সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বর্তমানে থাকা ৩০ বছরের বয়সসীমা কে ৩২ বছর করার চিন্তা করছেন নীতিনির্ধারকরা।এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে এই বয়সসীমা করা হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৪। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, সরকারি চাকরিতে অবসরের বয়সসীমা ৬১ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর করার একটি প্রস্তাব আগামী সোমবার মন্ত্রিসভার ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। আর চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকে ৩২ এবং মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ থেকে ৩৪ করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয় বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে। এ লক্ষ্যে সরকারি চাকরি বিধিমালায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

সূত্রটি আরো জানায়, এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা পর্যালোচনা, সংসদ, সংসদীয় কমিটি, জেলা প্রশাসকদের বিভিন্ন প্রস্তাব বিবেচনায় নিচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৪০, বিভিন্ন প্রদেশে বয়সসীমা ৩৮ থেকে ৪০, শ্রীলংকায় ৪৫, ইন্দোনেশিয়ায় ৩৫, ইতালিতে ৩৫ বছর কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৩৮, ফ্রান্সে ৪০, ফিলিপাইন, তুরস্ক ও সুইডেনে যথাক্রমে সর্বনিম্ন ১৮, ১৮ ও ১৬ এবং সর্বোচ্চ অবসরের আগের দিন পর্যন্ত। আফ্রিকায় চাকরি প্রার্থীদের বয়স বাংলাদেশের সরকারি চাকরির মতো সীমাবদ্ধ নেই। অর্থাৎ চাকরি প্রার্থীদের বয়স ২১ হলে এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে যেকোনো বয়সে আবেদন করা যায়।

এর আগে গত বছর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ২১তম বৈঠকে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর করার সুপারিশ করা হয়। পরবর্তীতে নবম জাতীয় সংসদেও শেষ দিকে মহাজোট সরকারের চমক হিসেবে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর ইতিবাচক নির্দেশনা দেয়া হয়।

২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ছিল। ২০১৪ ও ২০১৫ সালের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে এ প্রস্তাবের পক্ষে বিভিন্ন জেলা-প্রশাসকরা সমর্থন দিয়েছিলেন।

প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২০১১ সালের ২৬ ডিসেম্বর তারিখে ২০১১ অধ্যাদেশ মোতাবেক সরকারি কর্মচারীদের অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হয়েছে। কিন্তু চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বয়সসীমা ৩০ বছর রয়েছে। চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্য রেখে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তাছাড়া একজন প্রার্থী ৩০ বছর বয়সে চাকরির জন্য আবেদন করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে অনেক সময় ২ বছরের বেশি সময় চলে যায়, সে ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করা উচিত।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More