যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বছরের এক মুসলিম বালককে নিয়ে তোলপাড়, স্বয়ং ওবামা তার সাথে দেখা করতে চান।

0

48-300x155 copyনাম তার আহমেদ মোহাম্মদ। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে বাবা-মার সাথে থাকে। বিজ্ঞানে ব্যাপক আগ্রহ। প্রায়ই বিভিন্ন যন্ত্র বানিয়ে মজা করে। এমনি একটি ইলেক্ট্রিক ঘড়ি বানিয়ে উত্তেজনা ধরে রাখতে পারেনি খুদে বিজ্ঞানী। গত সোমবার সে সেটি নিয়ে স্কুলে যায় স্যারকে দেখাবে বলে। কিন্তু বিধি বাম! বোমা বানিয়েছে অভিযোগে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেল!

এই ঘটনা নিয়ে মার্কিন মুলুকে এখন তোলপাড় চলছে। সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। শুধু মুসলিম বলে যাকে তাকে সন্ত্রাসী বানানোর বাতিকে পেয়ে বসেছে মার্কিনীদের?

স্বয়ং প্রেসিডেন্ট ওবামা এ নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। প্রতিবাদ দিয়েছেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ। শুধু তা-ই নয়, হিলারি ক্লিনটন, নাসার বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী সবাই আহমেদের পক্ষে সোচ্চার হয়েছেন।

আহমেদ ডালাসের কাছে আর্ভিংয়ে ম্যাক আর্থার স্কুলের ছাত্র। বুধবার পুলিশ জানিয়েছে, তারা সন্দেহজনক কোনো কিছুর প্রমাণ পাননি। সুতরাং আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হবে না।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে সুদানি বংশোদ্ভূত বাদামি চামড়ার মুসলিম বলেই কি আহমেদের সঙ্গে এই আচরণ করা হলো। ইসলাম ভীতি আমেরিকাকে কোথায় নামিয়ে ফেলছে!

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আহমেদ বলে, গত সোমাবার সে ঘড়িটা নিয়ে তার স্কুলের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষকের কাছে যায়। একটি খুব সস্তা বাক্সে পুরে ডিজিটাল ডিসপ্লে যুক্ত ঘড়িটি আনে সে। স্যার তাকে বলেন, খুব সুন্দর হয়েছে। কিন্তু তিনি এটি অন্য শিক্ষকদের দেখাতে নিষেধ করেন।

ইংরেজি ক্লাসের সময় বাধে বিপত্তি। হঠাৎ ঘড়িটি বিপ দিতে শুরু করে। তখন আহমেদ তার উদ্ভাবনটি দেখাতে বাধ্য হয়। ওই শিক্ষক দেখে কপাল কুঁচকে বলেন, ‘এটা ঠিক একটা বোমার মতো দেখতে।’

এরপর কীভাবে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তার বর্ণনায় আহমেদ বলে, তাকে একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে পাঁচজন পুলিশ কর্মকর্তা তাকে ঘিরে নানা প্রশ্ন করে। সব কিছু তল্লাশি করে তার ট্যাবলেট কম্পিউটার এবং ঘড়িটি তারা জব্দ করে।

তার টিপসই নিয়ে একটি কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে নেয়া হয়। তাকে বাবা-মার সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেয়া হয়নি। অবশ্য পরে তারা জানতে পেরে সেখানে এসে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান।

এদিকে বুধবার আভিং পুলিশ প্রধান ল্যারি লয়েড এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তাকে আটক করা পুলিশের ভুল ছিল না। কারণ পুলিশ যেসব তথ্য পেয়েছে তার ভিত্তিতেই আহমেদকে আটক করেছে।

ছেলেটি বাদামি না হয়ে সাদা চামড়ার হলেও কি পুলিশ এমন আচরণ করতো- এমন প্রশ্নে পুলিশ প্রধান বলেন, ‘অবশ্যই আমরা একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতাম।’

এদিকে এই ন্যক্কারজনক ঘটনার পর টুইটারে #IStandWithAhmed এই হ্যাশট্যাগে মন্তব্যের ঝড় বয়ে যাচ্ছে। স্বয়ং প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও টুইটারে এই ট্যাগে আহমেদের পক্ষে লিখেছেন। অনেকে পাশাপাশি অন্যান্য মার্কিন শিশুর ছবি দিয়ে যারা অস্ত্র উদ্ভাবন করে পোজ দিয়েছে তাদের সঙ্গে আহমেদের উদ্ভাবনটি তুলনা করে ক্ষোভ ঝেরেছেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More