গত বছরের ২৪শে ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে টানা লড়াই চলছে। গত এক বছরে ইউক্রেনের বিশাল অংশ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। ইউক্রেনের পাশাপাশি এ যুদ্ধের কারণে নানা সংকটে পড়েছে গোটা বিশ্বও। ফলে কবে নাগাদ যুদ্ধ শেষ হবে তা জানতে মরিয়া বিশ্ববাসী। সেই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে হাজির হয়েছেন রাশিয়ার ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন।
তিনি বলেন, আরও অন্তত তিন বছর ধরে চলবে এ যুদ্ধ। তবে মস্কোর গোল বা উদ্দেশ্য যদি বদলায় সেক্ষেত্রে আরও সময় লাগতে পারে। প্রিগোজিন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ। ২০১৪ সালে তিনি প্রাইভেট মিলিটারি কোম্পানি ওয়াগনার চালু করেন। এর সদর দপ্তর রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে অবস্থিত।
চুক্তিতে রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে যোদ্ধারা ওয়াগনারের হয়ে যুদ্ধ করে। তারা রুশ সামরিক বাহিনীর অধিনস্ত নয়।
এই ওয়াগনারকেই ইউক্রেনে যুদ্ধের কয়েকটি ফ্রন্টের দায়িত্ব দিয়েছে রাশিয়া। একের পর এক সফলতায় দিন দিন ওয়াগনারের নাম পরিচিত হয়ে উঠেছে। গত মাসে সোলেদার শহর দখল করে ওয়াগনারের যোদ্ধারা। আরেক গুরুত্বপূর্ণ শহর বাখমুতকে ঘিরে ফেলেছে রাশিয়া। বাখমুতের যুদ্ধেও প্রধান ভূমিকা রাখছে ওয়াগনার। প্রায়ই ফ্রন্টলাইন সফরে যাচ্ছেন ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। যুদ্ধ নিয়ে প্রায়ই কথা বলেন তিনি।
তারই অংশ হিসেবে শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক সিমিওন পেগোভের মুখোমুখি হন তিনি। এতে প্রিগোজিন বলেন, আমরা যদি শুধু দনেতস্ক এবং লুহানস্কের পুরোটা নিয়ন্ত্রণে নিতে চাই তাহলে আমাদের আরও এক বা দেড় বছর লাগতে পারে। তবে রাশিয়া যদি এরপর দনিপার নদীর ওপাড়েও এগিয়ে যেতে চায় তাহলে এই সংঘাত আরও বহুদিন চলবে। এই দনিপার নদী ইউক্রেনকে একদম সমান সমান দুইভাগে ভাগ করেছে। রাশিয়া যদি দনিপারের পূর্বাঞ্চলের বিশাল ভূখণ্ড দখলে নেয় তাহলে তা হবে ইউক্রেনের অর্ধেক। রাশিয়ার সরকার যদিও বিতর্কিত গণভোটের মাধ্যমে যুক্ত করা নতুন চার অঞ্চলের বাইরে অভিযানের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে। তবে ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের বক্তব্য ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ভবিষ্যতে হয়ত রাশিয়া ইউক্রেনের আরও গভীরে প্রবেশ করতে পারে।
প্রিগোজিন বলেন, দনিপার পাড় হয়ে যুদ্ধ চালিয়ে গেলে তাতে অন্তত তিন বছর সময় লাগবে। তবে এখন আপাতত নতুন নতুন অঞ্চল নিয়ন্ত্রণের থেকে শত্রুদের সামরিক সক্ষমতা হ্রাস করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। এসময় প্রিগোজিন মজা করে বলেন, মস্কো চাইলে গোটা ইউরোপ পাড় হয়ে ইংলিশ চ্যানেল পর্যন্ত চলে যেতে পারে। এ নিয়ে তার একটি সুন্দর পরিকল্পনাও রয়েছে।