অবস্থা থমথমে, অভিযোগের আঙুল যুক্তরাষ্ট্রের দিকে

0

3a2eae3282f08e8009c1a43f721cc9bf-1-1-TURKEY-POLITICS-MILITARY-COUP-FUNERAL-131721[ads1]তুরস্কে সামরিক অভ্যুত্থানচেষ্টার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে দেশটি। তবে ওয়াশিংটন সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এভাবে দোষারোপ করা হলে তা দুই দেশের সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর হবে।
অভ্যুত্থানচেষ্টার দায় নিয়ে দুই দেশের মধ্যে এই ঠেলাঠেলি চললেও তুরস্কের ভেতরের অবস্থা এখনো বেশ থমথমে। রাস্তায় রয়েছে সেনাদের সশস্ত্র সতর্ক অবস্থান। অভ্যুত্থানচেষ্টার সঙ্গে যাঁদের যোগসাজশ ছিল, সেনাবাহিনী ও বিচার বিভাগ থেকে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া এবং গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গতকাল রোববার পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ছয় হাজার জনকে। এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সমর্থনে গতকাল রাস্তায় নামে হাজার হাজার মানুষ।
এদিকে, দেশের মধ্যাঞ্চলের কোনায়া শহরের একটি বিমানঘাঁটিতে গতকাল অভ্যুত্থানচেষ্টাকারীদের ধরতে গেলে নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর সঙ্গে তাদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। পরে সেখান থেকে ছয় সেনাসদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদুলিয়া।এরদোয়ান সরকারকে উৎখাত করতে গত শুক্রবার রাতে ট্যাংক-সাঁজোয়া যান আর জঙ্গিবিমান নিয়ে ব্যারাক থেকে বেরিয়ে পড়েছে সেনাবাহিনীর একাংশ। তবে সকাল নাগাদ পরিস্থিতি মোটামুটি সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এতে ১০৪ সেনাসদস্যসহ ২৬৫ জনের প্রাণ যায়।অভ্যুত্থানচেষ্টা ব্যর্থ করার পরপরই এতে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী তুর্কি ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লা গুলেনের যোগসাজশের অভিযোগ তোলেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তিনি এ অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করে হিজমত নামের একটি আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত গুলেনকে তুরস্কে ফেরত পাঠানোর দাবি করেন। এরপর এরদোয়ান সরকারের একজন মন্ত্রী অভিযোগ করেন, সেনাবাহিনীর একটি অংশের বিদ্রোহের নেপথ্যে আছে যুক্তরাষ্ট্র।এ পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি সেনা অভ্যুত্থানচেষ্টায় গুলেনের জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে ‘যথাযথ অনুসন্ধানের মাধ্যমে উপযুক্ত প্রমাণ দিতে’ বলেন তুরস্ককে। আর তুরস্কের অভ্যুত্থানে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত থাকার অভিযোগও ‘সর্বৈব মিথ্যা’ বলে আখ্যায়িত করেন কেরি। পরে লুক্সেমবার্গে সাংবাদিকদের সামনে কেরি বলেন, গুলেনকে ফিরিয়ে দিতে কোনো আনুষ্ঠানিক অনুরোধ তুরস্কের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।গুলেনও এ অভিযোগ শুরুতেই অস্বীকার করেন। অভ্যুত্থানে জড়িত ব্যক্তিরা গুলেনের অনুসারী—তুরস্ক সরকারের এমন অভিযোগে তিনি বলেছেন, ‘তুরস্কে আমার অনুসারী কারা, তাদের আমি সত্যিই চিনি না।’বিদ্রোহ প্রশমনের পর থেকেই তুরস্কজুড়ে শুরু হয় ব্যাপক ধরপাকড়। গতকাল পর্যন্ত এ সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে জানান দেশটির বিচারমন্ত্রী বেকির বোজদাগ। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘এই শুদ্ধি অভিযান চলতেই থাকবে। তাই গ্রেপ্তারের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ২ হজার ৭০০ পদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও বিচারক রয়েছেন। তুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ দেনিজলিতে ৫০-এর বেশি জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন থার্ড আর্মির কমান্ডার জেনারেল এরদাল ওজতুর্ক, সেকেন্ড আর্মির কমান্ডার জেনারেল আদেম হুদুতি ও তুরস্কের অন্যতম জ্যেষ্ঠ বিচারক আলপারস্লান আলতান। টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি বলেছে, জেনারেল পদমর্যাদার অন্তত ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।অভ্যুত্থানে জড়িত ব্যক্তিদের ‘কঠোর শাস্তির’ হুমকি দিয়ে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, দেশে মৃত্যুদণ্ড আবার চালু করার বিষয়ে আইন পাসের কথা বিবেচনা করতে পারে পার্লামেন্ট।আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শুরু থেকেই তুরস্কের অভ্যুত্থানের তীব্র নিন্দা জানায়। এ অভ্যুত্থানে নিন্দা জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, অভ্যুত্থানের পর সব পক্ষেরই আইনের শাসন মেনে চলা খুব জরুরি।[ads2]s

সূত্র ঃ Photom Alo

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More