অভিযোগ প্রমাণিত হলে ১৫বছর জেল হবে দেবযানীর

0

devjani4.thumbnailডেস্কঃ নয়াদিল্লী: কূটনীতিক হেনস্থার ঘটনাকে নিয়ে ভারত-আমেরিকা দু’দেশই যখন আলোচনার পথে হাঁটতে চাইছে, সে সময় নতুন অভিযোগ জানালেন দেবযানীর বাবা। এক কালে নিজে আইএসএস অফিসার হিসাবে কাজ করেছিলেন উত্তম খোবরাগাড়ে। আজ তিনি বলেন, যাঁর জন্য এত হইচই, দেবযানীর সেই পরিচারিকা সঙ্গীতা রিচার্ড সিআইএ চর বলেই তাঁর সন্দেহ।

নিউ ইয়র্কের ডেপুটি কনসাল জেনারেল দেবযানী খোবরাগাড়ের বাড়িতে গত বছর নভেম্বরে পরিচারিকার কাজে যোগ দিয়েছিলেন সঙ্গীতা। তাঁর ভিসায় মজুরি সংক্রান্ত ভুল তথ্য দিয়েছেন এই অভিযোগে গত সপ্তাহে দেবযানীকে ভরা রাস্তায় হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যায় মার্কিন পুলিশ। নগ্ন করে দেহ তল্লাশি চলে বলেও অভিযোগ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত এক সপ্তাহ যাবৎ ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সাক্ষী থেকেছে নানা চড়াই-উতরাইয়ের। চলতি সপ্তাহের গোড়াতেই এ দেশে কর্মরত মার্কিন কূটনীতিকদের উপরে একগুচ্ছ বিধিনিষেধ আরোপ করে ভারত। রণংদেহি ভঙ্গি জিইয়ে রেখে বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শিন্দে, সকলেই বলেন নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে আমেরিকাকে। দেবযানী যাতে কূটনৈতিক রক্ষাকবচের সুবিধে পুরোমাত্রায় পান, তাই রাষ্ট্রপুঞ্জের স্থায়ী কমিশনে বদলি করা হয় তাঁকে।

কিন্তু নিজেদের সুর অনেকটাই নরম করে ভারত। আগের অবস্থান থেকে পিছিয়ে এসে খুরশিদ বলেন, আমেরিকার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খুবই মূল্যবান, তাই যে কোনও মূল্যে তা রক্ষা করবেন তাঁরা। এ দিকে দেবযানী নিয়ে দেশ জুড়ে যে হাওয়া উঠেছে তাকে অস্বীকার করারও উপায় নেই। বিদেশমন্ত্রী জানান, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার মাধ্যমে গোটা বিষয়টা মিটিয়ে নিতে আগ্রহী দু’দেশই।

তবে নতুন পদমর্যাদার সঙ্গে জড়িত সুযোগ-সুবিধে অভিযোগ দায়ের হওয়ার সময় থেকেই খাটবে কি না (রেট্রোঅ্যাকটিভ), তা নিয়ে অবশ্য মীমাংসা হয়নি এখনও। ভারত দেবযানীর রক্ষাকবচের জন্য সওয়াল করলেও আমেরিকা সেই যুক্তি মানতে নারাজ। শনিবার মার্কিন বিদেশ মন্ত্রক জানায়, রাষ্ট্রপুঞ্জে কাজ করার সুবাদে দেবযানী এখন পূর্ণ রক্ষাকবচ পেলেও তার মানে এই নয় যে আগের সব অভিযোগ থেকে তিনি মুক্তি পেলেন। বরং দোষ প্রমাণ হলে পনেরো বছর পর্যন্ত শাস্তি হতে পারে তাঁর।

দেবযানীর হেনস্থা নিয়ে যখন এত চাপানউতোর, তখন পরিচারিকাদের যোগ্য মর্যাদার দাবিতে নিউ ইয়র্কের ভারতীয় দূতাবাসের বাইরে শুক্রবার বিক্ষোভ দেখাল কিছু মানবাধিকার সংগঠন। তাদের সঙ্গে ছিল সে দেশের পরিচারিকাদের কয়েকটি সংগঠনও। প্রতিবাদীদের তরফে ইওমারা ভেলেজ জানান, নিজের রক্ষাকবচের দৌলতে কেউ যাতে অপরাধ করেও পার পেয়ে না যান সেই দাবিতে জড়ো হন তাঁরা।

বিজেপি কিন্তু নিজের অবস্থান পাল্টাতে নারাজ। কূটনীতিক হেনস্থার প্রতিবাদে ভারতে সফররত মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক আগেই বাতিল করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। রবিবার মুম্বইয়ে মোদীর সভায় তাঁদের আমন্ত্রণ অবশ্য এত দিন বজায় ছিল। তবে আজই বিজেপি জানিয়েছে, সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করে নিচ্ছে দল।

আমেরিকার উপর চাপ কমানোর রাস্তায় হাঁটতে রাজি নন আরও এক জন। তিনি দেবযানীর বাবা উত্তম খোবরাগাড়ে। শনিবার আরপিআই নেতা অটওয়ালের সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করে সঙ্গীতার বিরুদ্ধে চরবৃত্তির অভিযোগ এনেছেন তিনি। জানান, নিজের অসন্তোষ ব্যক্ত করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকেও ই-মেল পাঠিয়েছিলেন। তবে তার জবাব আসেনি এখনও।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More