জাতিসংঘের সামনে ‘মাতৃভাষা দিবসের ভাস্কর্য’

0

jatisongoনিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে স্থাপন করা হলো ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ভাস্কর্য’। ১ ফেব্রুয়ারি অপরাহ্নে বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের সমাবেশে এ ভাস্কর্যের উদ্বোধন করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন।
মহান একুশের সেই অমর সংগীত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ সমস্বরে পরিবেশনের মধ্যে মাতৃভাষা দিবসের ভাস্কর্য স্থাপনের এ অনুষ্ঠানে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য গভর্নরের প্রতিনিধি হার্শ কে পারেখ, নিউইয়র্ক সিটি কম্পট্রোলারের প্রতিনিধি আলেয়া লতিফও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল শামীম আহসান, একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্য ব্যক্তিত্ব জামালউদ্দিন হোসেন এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানও বক্তব্য রাখেন। তারা মহান ভাষা দিবসের চেতনায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে চলমান উন্নয়ন-অগ্রগতির সমর্থনে বিশ্বজনমত জোরদারে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান। একুশের চেতনায় সমস্ত অপশক্তিকে প্রতিহত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার কথাও বলেন নেতৃবৃন্দ।
দ্যাগ হ্যামার্সজোল্ড প্লাজা তথা ফার্স্ট এভিনিউ এবং ৪৭ স্ট্রিটের কর্নারে পুরো ফেব্রুয়ারি জুড়েই থাকবে এ ভাস্কর্যটি। এরপর তা সরিয়ে ফেলা হবে। এ প্রসঙ্গে স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘এর আগে আমি জাপানে দায়িত্ব পালনকালে সেখানকার প্রবাসীদের সহায়তায় টোকিওতে স্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপনে সক্ষম হয়েছি। সে আলোকে এই নিউইয়র্কেও স্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করতে আপনাদের সকলের আন্তরিক সহায়তা চাই।’ ‘বাঙালির রক্তদানের দিন ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পাওয়ায় জাতিসংঘের সামনে স্থায়ী একটি শহীদ মিনারের দাবি আজ সর্বজনীনতা পেয়েছে। তাই তা অপূর্ণ থাকবে বলে মনে করি না-প্রত্যাশা মোমেনের। জাতিসংঘে নয়া এ প্রতিনিধি আরো বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে বাঙালির জাতীয় জীবনে সংযোজিত হলো এক নতুন অধ্যায়। আন্তর্জাতিক গৌরব ও সাফল্যের এক নতুন সূচক।’
আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলেও বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার প্রতিনিধিত্বকারি বিপুলসংখ্যক প্রবাসী এবং ভাষাপ্রেমী ভিনদেশীদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখ করার মত। ছিমছাম অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেন নতুন প্রজন্মের সেমন্তী ওয়াহেদ। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট বাংলাদেশিদের মধ্যে আরো ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক ড. এম এ বাতেন, সোনালী এক্সচেঞ্জ ইনকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউর রহমান, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, সাহিত্য-সংস্কৃতির অন্যতম পৃষ্ঠপোষক মো. আনোয়ার হোসেন, মূলধারার রাজনীতিক মোহাম্মদ এন মজুমদার এবং খোরশেদ খন্দকার, সাংস্কৃতিক সংগঠক রানু ফেরদৌস, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি ফাহিম রেজা নূর প্রমুখ।
এবার ২০ ফেব্রুয়ারি দুপুর অর্থাৎ ঢাকায় যখন একুশের প্রথম প্রহর হবে, ঠিক একইসময়ে এই ভাস্কর্যে প্রবাসী বাঙালিরা শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করবেন প্রভাতফেরির আদলে নগ্ন পায়ে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More