নারী যখন যৌন মিলনে আগ্রহে হয়ে ওঠে, তখন ঠোঁট হয়ে ওঠে রক্তিম!

0

LIPডেস্ক : আজকাল লাল লিপস্টিকে ঠোঁট রাঙানো নতুন ফ্যাশন ট্রেন্ড। কম বয়স্ক মেয়েরা থেকে শুরু করে মধ্য বয়সী অনেক নারীই ঠোঁট রাঙাচ্ছেন লাল রঙে। বলাই বাহুল্য যে এই রঙটার ফ্যাশন আমাদের দেশে প্রবেশ করেছে হিন্দি সিনেমা ও সিরিয়ালের কল্যাণে। এবং স্বভাবতই কিছু না বুঝে শুনেই আমাদের নারীরা অনুসরণ করছেন সেটা।আপনি কি জানেন,লাল লিপস্টিকের কি অর্থ? যদি জানতে পারেন যে লাল লিপস্টিক আপনাকে একজন কামার্ত মানুষ হিসাবে উপস্থাপন করছে,তবুও কি আপনি তা ব্যবহার করবেন? হ্যাঁ, লাল লিপস্টিকে ঠোঁট রাঙানোর অর্থ হচ্ছে- ” আমি কামনায় কাতর ও মিলনে আগ্রহী ” … না, এটা আমার কথা নয়। বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানিত ও বহুকাল যাবত প্রতিষ্ঠিত ঠোঁটে লাল রঙের এই অর্থ।

কীভাবে? আসুন, বিস্তারিত বলি।

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অনুসারে, নারী যখন যৌন মিলনের আগ্রহে অধীর হয়ে ওঠে, তখন তাঁর ঠোঁটে রক্ত জমা হয় ও ফলে ঠোঁট হয়ে ওঠে রক্তিম। কেননা নারীর ঠোঁটের সাথে যৌনাঙ্গের অনুভূতির সরাসরি যোগাযোগ আছে। নারীর যৌন উত্তেজনার বাহ্যিক লক্ষণগুলোর মাঝে অন্যতম হচ্ছে ঠোঁট লাল হয়ে ওঠা।

অনেক প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ এটা জানত, এটা জানার জন্য বিশাল বিজ্ঞানী হতে হয় না। একান্ত মুহূর্তে এক ঝলক আয়না দেখলেই জেনে যাবেন এর সত্যতা। কৃত্রিম ভাবে ঠোঁটে এই লালচে আভা ফুটিয়ে তোলার জন্যই মূলত লিপস্টিক নামক প্রসাধনের আবিষ্কার। প্রাচীন নারীরা নানান রকম ফল, পান, ফুলের রস দিয়ে ঠোঁটকে রক্তিম করে তুলতেন পুরুষকে যৌন মিলনে আগ্রহী করে তুলতে আর নিজেকে যৌনতায় সক্ষম বোঝাতে। এখানে একটা বাংলা বহুল প্রচলিত গানের কথাও উল্লেখ করা যায়-”পান খাইয়া ঠোঁট লাল করিলাম, বন্ধু ভাগ্য হইল না।” … স্বভাবতই দেখা যাচ্ছে যে লাল ঠোঁটের সাথে প্রেম ও নারী পুরুষের সম্পর্কের যোগাযোগের ব্যাপারটা বহুল প্রচলিত!

অনেক সমাজ বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে ঠোঁট রাঙানোর বিষয়টা মূলত পতিতাবৃত্তি থেকে এসেছে। বিশেষ করে লাল রঙে ঠোঁট রাঙানোর বিষয়টি। পতিতারা ঠোঁট লাল রঙে রক্তিম করে তুলতেন আর সেটাই ছিল তাদের বিজ্ঞাপন। পুরুষকে বোঝানো যে- ” আই এম সেক্সুয়ালি এভেইলেবল ” … মনে করে দেখুন প্রাচীন জাপানিজ যৌন কর্মীদের কথা, যাদেরকে আমরা “গেইসা ” নামে জানি। তাদের ধবধবে সাদা মুখ আর টকটকে লাল রঙে ঠোঁট রাঙানোর দৃশ্য মনে করুন।

কালের বিবর্তনে লিপস্টিকে ঠোঁট রাঙানোর বিষয়টি সমাজে স্বীকৃতি পায়, বলাই বাহুল্য যে কিছু কোম্পানির ব্যবসায়িক ফন্দির কৌশলে। এবং খুব দ্রুত এই লিপস্টিক হয়ে ওঠে সৌন্দর্য চর্চায় অত্যাবশ্যকীয় একটি উপাদান। নানান রকমের ও বর্ণের লিপস্টিক চলে আসে বাজারে, আর নারীরা সেসব ব্যবহার করেন নিজেকে সাজাবার জন্য। তবে এত সব রঙের ভিড়েও লাল রঙের লিপস্টিক সর্বদাই বিবেচিত হয়ে এসেছে যৌন আবেদনের প্রতীক হিসাবে।

কি, এখনো মানতে কষ্ট হচ্ছে?
কি আছে,একটু মনে করে দেখুন। টকটকে লাল লিপস্টিক আপনারা কাদের ঠোঁটে দেখতে পান? প্রথমেই চোখে ভাসবে হলিউডের সেই সেক্স সিম্বল নায়িকা মেরিলিন মনরোর কথা। এবং একটু ভাবলেই বুঝতে পারবেন সে সেসব মডেল ও অভিনেত্রীদের ঠোঁটেই কেবল লাল রঙের লিপস্টিক দেখা যায়, যারা যৌনতার প্রতীক হিসাবে পৃথিবী বিখ্যাত।

যদি ভারতীয় সিনেমা সিরিয়ালে উদাহরণ খোঁজেন, তবে সেটাও আছে ভুরি ভুরি। সাধারণত আইটেম গানে যারা যৌন উত্তেজক নৃত্য করেন, কিংবা খল নায়িকা চরিত্রে যারা অভিনয় করছেন তাদের ঠোঁটে দেখা যাবে এই লাল রঙ। নায়িকা চরিত্রটি যদি একজন ভদ্র সাধারণ নারীর হয়ে থাকে, তাদের ঠোঁটে কখনো এই রঙ দেখতে পাবেন না। কারণ? ওই একটাই! লাল লিপস্টিক যৌন আবেদন ও আকর্ষণের প্রতীক। লাল লিপস্টিকের অর্থ এই যে আপনি যৌন উত্তেজনা বোধ করছেন বা যৌন মিলনে আগ্রহী।

ভারতীয় সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণে আমাদের নারীরা যে বয়স নির্বিশেষে লাল লিপস্টিক ব্যবহার করেই যাচ্ছেন, সেটা আসলে কতটুকু শালীন বা আমাদের সমাজের প্রেক্ষাপটে কতটুকুন যৌক্তিক? বেশিরভাগ নারীই একে ফ্যাশনের ট্রেন্ড মেনে নিয়ে ব্যবহার করছেন, নিজেকে প্রমাণ করছেন ফ্যাশন সচেতন। অথচ জানতেও পারছেন না যে নিজের অজান্তেই আপনি নিজেকে উপস্থাপন করছেন একজন কামার্ত মানুষ হিসাবে!

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More