ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সভাপতি অমিত শাহের ফোনালাপ নিয়ে চলছে বিভ্রান্তি। কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম ও সরকারি দল আওয়ামী লীগ এটিকে মিথ্যা বলে দাবি করছে। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে আবারো এক বিবৃতির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, খালেদা ও অমিত শাহের মধ্যে ফোনালাপ হয়েছে।
শুক্রবার রাত ৮টার দিকে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল বলেন, ‘গত বুধবার রাতে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রেসিডেন্ট শ্রীযুক্ত অমিত শাহের টেলিফোনে কুশল বিনিময় সম্পর্কে কতিপয় সংবাদ-মাধ্যমের বিভ্রান্তিকর প্রচারণার দিকে আমাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে সকলকে আবারো জানাতে চাই, সংবাদ-মাধ্যমে গতকাল বৃহস্পতিবার দেয়া তথ্য সম্পূর্ণ সঠিক। বিজেপি প্রধান সরাসরি টেলিফোন আলাপে বেগম খালেদা জিয়ার কুশলাদি সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘অমিত শাহ কিংবা তার অধীনস্থ সংশ্লিষ্ট কারো কাছ থেকে এর সত্যতা নিরূপণ না করে অজ্ঞাতনামা কূটনীতিক বা অন্যান্য সূত্রের বরাত দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা খুবই অনভিপ্রেত। প্রতিবেশী দু’টি দেশের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলের প্রধানের মধ্যে টেলিফোন আলাপ একটি প্রত্যাশিত ও স্বাভাবিক ঘটনা এবং এ নিয়ে ভিত্তিহীন দাবির কোনো অবকাশ যেমন নেই, তেমনই এ সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টাও সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলক।’
এদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এক সংবাদ সম্মেলন করে জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সভাপতি অমিত শাহের মধ্যে ফোনালাপের বিষয়টি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর।
হানিফের কথা অনুযায়ী, আবার বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমও দাবি করছে, ভারতীয় কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, খালেদার সঙ্গে অমিত শাহের কোনো ফোনালাপ হয়নি। গুলশান কার্যালয় থেকে অমিত শাহের কাছে ফোন করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলেও দাবি করেন ভারতের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
এর আগে গতকাল বিএনপি দাবি করে, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ টেলিফোনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে বেগম জিয়ার গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থানরত সাংবাদিকদের হাতে এ বিজ্ঞপ্তি তুলে দেন খালেদার প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার।
এতে বলা হয়, গতকাল বুধবার রাত ১০টায় খালেদাকে টেলিফোন করে তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন বিজেপির প্রেসিডেন্ট অমিত শাহ। কথপোকথনে বেগম জিয়ার দ্রুত সুস্থতাও কামনা করেছেন তিনি।
নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বেগম জিয়া অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া এতে আরো বলা হয়, দেশ-বিদেশের আরো অনেকে টেলিফোনে বিএনপি চেয়ারপারসনের খোঁজ নিয়েছেন। উদ্বেগও জানিয়েছেন তারা।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বছরপূর্তির দিনটিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ৩ জানুয়ারি গভীর রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়। তখন থেকে কার্যত তিনি অবরুদ্ধ। সোমবার সমাবেশে যোগ দিতে কার্যালয় থেকে বের হতে চাইলেও পুলিশ তাকে বের হতে দেয়নি। এ সময় মহিলা দলের কয়েকজন ওই কার্যালয়ের গেট ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ পিপার স্প্রে করে। পরে তিনি কার্যালয়ের ভেতরে দাঁড়িয়েই গণমাধ্যমে বক্তব্য দেন। এ সময় তাকে কাশতে ও চোখ মুছতে দেখা যায়।