ভারতে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের অগ্রগতি আগ্রহের সাথে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ চায় এ অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে ভারতে একটি স্থিতিশীল সরকার আসুক। এমনটাই বলছে ভারতের দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে গত জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতায় বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। ভারতের মতো দেশ নির্বাচন-পূর্ব সহিংসতা কমিয়ে আনতে কীভাবে সফল হয়েছে, এ ব্যাপারে জানার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে একটা স্থিতিশীল সরকার এলে তা এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন আনবে। বাংলাদেশ এ থেকে সুফল পাবে। এ অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য ছোট দেশগুলো ভারতের দিকে তাকিয়ে আছে। যদি ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল হয়, কেবল তখনই এই দেশগুলো সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করতে পারবে। এছাড়া তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির মতো কয়েকটি বিষয় এখনো ঝুলে আছে। ভারতে একটি স্থিতিশীল সরকার এলেই কেবল এই বিষয়গুলোর সুরাহা সম্ভব।
তিস্তা চুক্তির বিষয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশের পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বাংলাদেশে এসে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। আমরা বিশ্বাস করি, দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে ভারতের সাথে চুক্তিতে উপনীত হতে পারব।”
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত গত নির্বাচনে বিরোধী দল অংশ না নেওয়ায় ভোট সুষ্ঠু হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। ভারতের সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কোরায়শির সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের বদলে নির্বাচন কমিশনকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।
গওহর রিজভী বলেছিলেন, “আমাদের দৃষ্টি দেওয়া উচিত ভারতের মতো একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠার দিকে।”
কোরায়শি মন্তব্য করেন, ভারতের নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাসীন দলের প্রতি ‘বাড়তি কঠোর’ থাকে। কারণ ক্ষমতাসীন দলের অধীনেই নির্বাচন হয়। এটা নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা ধরে রাখতে সহায়তা করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সফরের সময় অপর একটা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে নির্বাচনে ১৫৩ জন সংসদ সদস্যের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন কোরায়শি।
তিনি বলেন, “ভারতে কখনোই এমন ঘটনা ঘটেনি। কয়েকজন সাংসদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে পারেন, এটা ভুল কিছু নয়। কিন্তু যদি অধিক সংখ্যক সাংসদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন, সে ক্ষেত্রে কী করতে হবে, নির্বাচন কমিশনকে সেটা ভাবতে হবে।”