তিন বছর পেরিয়ে গেলেও সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হয়নি। আদালতের কাছ থেকে ৩২ বার সময় নেয়ার পরও তদন্তের কাজ কবে শেষ হবে তা বলতে পারছেন না তদন্তকারী কর্মকর্তা।
নিহতদের পরিবারের দাবি- র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) মামলাটির কোনো তদন্তই করছে না। তাই হত্যার তিন বছরেও তারা কোনো প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব হেডকোয়াটারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ওয়ারেস আলী মিয়া বলেন, খুব গুরুত্ব সহকারে সাগর-রুনি হত্যা মামলাটির তদন্ত কাজ চলছে। তবে মামলার তদন্ত কবে শেষ হবে তা এখনো বলা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, মামলার তদন্তের বিষয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক হয়। তারা যখনি মামলার তদন্ত শেষ করার প্রয়োজন মনে করবেন, তখনি মামলার তদন্তের কাজ শেষ করব।
মামলার বাদী ও মেহেরুন রুনির ভাই নওশের আলম রোমেন বলেন, র্যাব মামলাটির কোনো তদন্তই করছে না। মামলার তদন্তের বিষয় র্যাব আমাদের জানায় না। আমাদের পরিবারের দাবি- মামলাটি সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করুক।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক গোলাম মোস্তফা সারোয়ার ওরফে সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন নাহার রুনা ওরফে মেহেরুন রুনি দম্পতি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের নিজ বাসায় খুন হন।
ঘটনার পরদিনই সাগর-রুনির বাসায় গিয়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনীদের বের করা হবে। এর একদিন পরে তৎকালীন র্যাবের প্রধান হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেছিলেন তদন্ত প্রনিধানযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
কিন্তু ঘটনার পর তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এর কোন কুল-কিনারা করতে পারে নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সরকারও এ বিষয়ে রহস্যজনক নিরবতা পালন করছে।
সাগর-রুনি খুন হওয়ার পর রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
প্রথমে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন ওই থানার এক উপ-পরিদর্শক (এসআই)। চার দিন পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওপর ন্যস্ত করা হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে ডিবি রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হয়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র্যাবের কাছে দেয়া হয়।