চলমান রাজনৈতিক সংকটের টেকসই সমাধানে শিগগিরই জাতীয় রুপরেখা ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিশিষ্ট নাগরিকরা। এর মাধ্যমে মূলত সর্বপক্ষীয় আলোচনার সূচনা করে সবাইকে এককাতারে আনাই তাদের মূল উদ্দেশ্য। এমন উদ্যোগের অংশ হিসেবে সোমবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইন এ বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন নাগরিক সমাজের আট ব্যক্তিত্ব। সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন ডেকে জাতির সামনে জাতীয় রুপরেখা তুলে ধরা হবে। সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বে সোমবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের চেয়ারম্যান স্যার ফজলে হাসান আবেদ, সাবেক নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা গীতি আরা সাফিয়া চৌধুরী, রাশেদা কে চৌধুরী, এম হাফিজ উদ্দিন খান ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সাধারণ সম্পদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। ওই বৈঠকে উপস্থিত খ্যাতনামা আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রুপরেখাটি দেশবাসীকে জানানো হবে। আড়াই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকটিকে ঘরোয়া আলোচনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি আলোচনার সূচনা করতে চাই। আমাদের পক্ষে তো সংকট সমাধান করা সম্ভব না। যারা এই সংকট সৃষ্টি করেছেন, সেই রাজনৈতিক দলগুলোই এর সমাধান করবে। তবে আমরা চাই একটি টেকসই সমাধান আসুক। বারবার এদেশে সংকট তৈরি হয়েছে, আবার তার সমাধানও হয়েছে। ১৯৯৬, ২০০৭ সালেও সংকট তৈরি হয়েছিলো। মিটেও গিয়েছিলো। কিন্তু ২০১৪ সালে আবার এসেছে। এটা যেন আর না হয়, সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।’ এছাড়া আমাদের রাষ্ট্রপতির পক্ষে এ ধরনের সংকট সমাধানে কোনো ভূমিকা নেওয়ার সুযোগ সংবিধানে নেই। তাই আমার এটাও চাই, সংবিধান সংশোধন করে রাষ্ট্রপতির হাতে কিছু ক্ষমতা যদি দেওয়া যায়, কোনো সংকট এলে তিনি তা সমাধান করতে পারবেন। শাহদীন মালিক আরো বলেন, এর আগেও আমরা বেশ কয়েকবার বৈঠকে বসেছিলাম। তবে এগুলো কোনো প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নয়। তাদের এই রূপরেখা নিয়ে কোনো দলের কাছে যাবেন কি না বা প্রধানমন্ত্রী অথবা বিরোধী দলের নেতার কাছে কাছে কোনো আবেদন থাকবে কি না জানতে চাইলে এই আইনজীবী বলেন, এমন কোনো পরিকল্পনা নেই। এটা আমরা প্রেসের মাধ্যমেই বলবো। একটা আলোচনা তৈরিই আমাদের লক্ষ্য। দেশের সব নাগরিকের পক্ষ থেকেই নাগরিকদের মাঝেই আমরা আলোচনার সূচনা করতে চাই। বৈঠকে উপস্থিত অন্য কোনো সদস্য এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মুখ খোলেননি। এটিএম শামসুল হুদা, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ও ড. বদিউল আলম মজুমদারকে বেশ কয়েকবার ফোন করলেও কেউই রিসিভ করেননি। অন্যদিকে রাশেদা কে চৌধুরী বৈঠকের কোনো সিদ্ধান্ত জানেন না বলে জানিয়েছেন।
Next Post