উদ্ধার ১০ লাশ বিকৃত হয়ে গেছে, ছয়টির হাত-পা বাঁধা ছিল

0

ট্রলারটি থেকে উদ্ধার ১০টি লাশ পচে বিকৃত হয়ে গেছে। এর মধ্যে ছয়টি লাশের হাত-পা বাঁধা ছিল। লাশগুলো পচে বিকৃত হয়ে যাওয়ায় গণনা করতে সমস্যা হচ্ছিল বলে জানান কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম।

বঙ্গোপসাগর থেকে কক্সবাজার শহর সংলগ্ন ১নং ওয়ার্ডস্থ সাগরের নাজিরারটেক পয়েন্টে নিয়ে আসা ধরার ট্রলার থেকে ১০টি লাশ উদ্ধার করা হয়। ট্রলারের ভেতরে আরও মৃতদেহ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকতার কামাল বলেন, কক্সবাজারের স্থানীয় জেলেরা বঙ্গোপসাগরের গভীর এলাকায় ওই ফিশিং বোটটি দেখতে পায়। তারা শনিবার ঈদের দিন রাতে ফিশিং ট্রলারটি টেনে নাজিরা টেক পয়েন্টে নিয়ে আসে। সেখানে এনে ট্রলারের ভেতর তারা গলিত বেশ কয়েকটি মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।

তবে স্থানীয় স্থানীয় লোকজন জানান, গভীর সাগরে ডুবিয়ে দেওয়া ট্রলারটি আরেকটি মাছ ধরার ট্রলারে আটকে পড়েছিল। ওই ট্রলারের জেলেরা রশি দিয়ে ডুবন্ত ট্রলারটি টেনে মহেশখালীর সোনাদিয়া চ্যানেলে নিয়ে আসেন। রোববার দুপুর দেড়টার দিকে ডুবন্ত ট্রলারটি কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক (বিমানবন্দরের পশ্চিমে) চ্যানেলে পৌঁছালে মৃত ব্যক্তির হাত-পা ভেসে উঠতে দেখা যায়। তাতে ভয় পেয়ে টেনে আনা ট্রলারের জেলেরা সটকে পড়েন। পরে পুলিশকে জানান স্থানীয় লোকজন।

ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, জেলেদের থেকে খবর পেয়ে শনিবার রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে বোটটি দেখেন এবং সেখানে কয়েকটি মরদেহ শনাক্ত করেন। রবিবার সকালের দিকে ফায়ার সার্ভিসের দলকে সঙ্গে নিয়ে এসব মরদেহ উদ্ধারে যায় পুলিশ। সকাল থেকে চেষ্টা করে মরদেহবাহী ফিশিং ট্রলারটি উপকূলের কাছে এনে দুপুরের পর থেকে মৃতদেহগুলো উদ্ধার শুরু করে।

তিনি বলেন, উদ্ধার হওয়া লাশগুলোর সবকটি বিকৃত হয়ে গেছে ও পচে গেছে। এ জন্য গণনা করতে সমস্যা হচ্ছিল। প্রথমে ১১ জনের মরদেহ মনে হলেও উদ্ধারের পরে ১০ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ছয়টি মরদেহ হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গেছে। মরদেহগুলো থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।

ওসি আরও জানান, মাছ ধরার ট্রলারের কোল্ডস্টোরেজের ভিতরে থাকা মৃতদেহগুলোর মধ্যে এখন পর্যন্ত ১০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিগুলো উদ্ধারে কাজ করছে পুলিশ উপায় সার্ভিস।

কী কারণে এ ঘটনা, তা বিস্তারিত জানাতে পারেনি ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের এই কর্মকর্তা। তবে তিনি বলছেন, মৃতদেহগুলো উদ্ধার করার পর বিস্তারিত জানানো হবে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, ১৫-১৬ দিন আগে বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া পয়েন্টে ডাকাতি করতে গিয়ে একদল জলদস্যু জেলেদের হামলার শিকার হয়েছিল বলে জানা গিয়েছিল। হামলায় জলদস্যুরা মারা পড়েছিল বলে খবর বেরিয়েছিল। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত ওই দস্যুবাহিনীর ট্রলারটির হদিস পাওয়া যায়নি। সেসব জলদস্যুবাহিনীর সদস্যরা মহেশখালী চকরিয়া ও বাঁশখালীর বলেও জানা গিয়েছিল।

ধারণা করা হচ্ছে, নাজিরটেক পয়েন্টে ভেসে আসা ট্রলারটি সেই বোট হতে পারে। তাই নাজিরটেক ট্রলার আসার খবর পেয়ে নিখোঁজদের স্বজনরা সকাল থেকে নাজিরটেক এসে ভিড় করছে। ওই ট্রলারের ভেতর ১৪-১৫টি পর্যন্ত মরদেহ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Jugantor

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More