[ads2]গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারি রেস্টুরেন্টের হামলার ঘটনায় জিম্মিদের মধ্যে জীবিত উদ্ধার হয়ে আসা একজনকে সন্দেহ করা হচ্ছে। এই সন্দেহের তৈরি করেছে এক দক্ষিণ কোরীয় নাগরিকের করা মোবাইল ভিডিও ফুটেজ। ডিকে হোয়াং নামে ওই কোরীয় জিম্মি সঙ্কট এবং যৌথ অভিযানের পাঁচটি ফুটেজ তার ফেসবুক পাতায় প্রকাশ করেছেন। এসব ফুটেজে হাসনাত করিম নামের ওই জিম্মির সন্দেহজনক আচরণ লক্ষ্য করা গেছে।
সন্ত্রাসীদের হাতে ওই রেস্টুরেন্টে বিদেশিসহ মোট ৩৩ জন জিম্মি হন। এসময় পাশের একটি ভবন থেকে ওই কোরীয় জিম্মিকালীন পরিস্থিতি এবং যৌথ অভিযানের কিছু দৃশ্য ভিডিও করেন।
শনিবার সকালে সেনাকমান্ডোর নেতৃত্বে পরিচালিত যৌথ অভিযানে যে ১৩ জন জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার করা হয় তাদের মধ্যে আছেন এই হাসনাত করিম এবং তার স্ত্রী ও দুই সন্তান। [ads1]
যৌথ অভিযানে জিম্মিরা মুক্তি পাওয়ার পর হাসনাত করিমের বাবা রেজাউল করিম বাংলামেইলকে বলেন, ‘ছেলের সাথে কথা হয়েছে। সে বলেছে সন্ত্রাসীরা তাদের সাথে কোনো প্রকার খারাপ আচরণ করেনি। ছেলের বউ শারমিন পারভিনের মাথায় হিজাব থাকায় তাকেও তারা খুব সমাদর করেছে। রাতে খেতেও দিয়েছে।’ তবে অন্য জিম্মিরা বলছেন, কাউকেই খাবার দেয়া হয়নি। সবাইকে টয়লেটে আটকে রাখা হয়েছে।
ছেলে উদ্ধার হয়ে আসার পর তার বরাত দিয়ে মা মিসেস করিম বলেন, ‘ওরা (সন্ত্রাসীরা) শুধু বিদেশিদেরই মেরেছে। বাংলাদেশিদের মারেনি। ২০ জনকেই রাত ১০টার পরে জবাই করেছে। সন্ত্রাসীরা ছিল ৫ জন।’ ছেলের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত সাক্ষাতের পরই এসব তথ্য জানান তিনি। এরপরই হাসনাতকে স্ত্রী-সন্তানসহ নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ।
কোরীয় নাগরিক ডি কে হোয়াং এর প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে, ন্যাড়া মাথার চেক গেঞ্জি ও জিন্স পরা এক ব্যক্তিকে একাধিক স্থানে সন্ত্রাসীদের সহযোগিতার করার মতো সন্দেহজনক আচরণ করতে দেখা যায়। হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টের কাচের তৈরি মূল ফটকটিতে তাকে বেশ কয়েকবার এসে ঘুরে যেতে দেখা যায়। দুই অস্ত্রধারীর সঙ্গে ছাদেও দেখা গেছে তাকে।
এই লোকটি সাথে হাসনাত করিমের চেহারার অনেক মিল পাওয়া যাচ্ছে। পরিবার থেকে জানানো হয়, তিনি সেদিন ছেলে রাইয়ানের জন্মদিন উদযাপনে সপরিবারের হলি আর্টিসান বেকারিতে গিয়েছিলেন। [ads1]
ছেলের বিষয়ে জানতে চাইলে রোববার রাত ১১টার দিকে বাবা রেজাউল করিম বাংলামেইলকে বলেন, ‘এখনও সে (হাসনাত করিম) বাসায় ফেরেনি। স্ত্রী, ছেলেমেয়েও রয়েছে ডিবি অফিসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ছেলের সাথে দেখা করতে ডিবি অফিসে যাইনি। তবে আমার ছোট ভাই গিয়েছিল। ডিবি অফিস থেকে তাকে বলা হয়েছে, রাতে নাতি ও নাতনিকে পাঠিয়ে দেয়া হবে। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারবো না। নিষেধ আছে।’ বলেই ফোনের লাইন কেটে দেন তিনি।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেন কি না জানতে চাইলে রেজাউল করিম বলেন, এখন নয়, অনেক আগে সেখানে শিক্ষকতা করতো।
তিনি আরো জানান, হাসনাত দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার আগে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতেন।
এদিকে অভিযানে নিহত সন্ত্রাসীদের মধ্যে একজন নিবরাস ইসলামও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক ছাত্র। তার ফেসবুক আইডি থেকে জানা যায়, তিনি ঢাকার ইংরেজি মিডিয়ামের স্কুল টার্কিস হোপে পড়েছেন। অনার্স শেষ করেছেন নর্থসাউথ ভার্সিটি থেকে। এরপর মালয়েশিয়াতেও কিছুদিন পড়ালেখা করেন।[ads2]
তবে হাসনাম ও নিরবাসের মধ্যে কোনোভাবে যোগাযোগ ছিল কি না সে ব্যাপারে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
হাসনাত করিম এখনো সপরিবারে গোয়েন্দা হেফাজতে আছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ কাউকেই সন্দেহের উর্ধ্বে বিবেচনা করছে না।
হাসনাতকে সন্দেহ করা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখার ডিসি মাসুদুর রহমান বলেন, ‘হাসনাত করিমকে অন্য একটি গ্রুপ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তাই এ বিষয়ে আমি ততটা অবগত নই।’
উদ্ধারের পর হাসনাতকে সপরিবারে ডিবি হেফাজতে নেয়া হলেও এখন তিনি কোন গোয়েন্দা সংস্থা হেফাজতে আছেন সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।[ads2]
[ads1]