হঠাৎ করেই ক্ষেপেছে পুলিশ। এর আগে লুকোচুরিতে ছিল পুলিশ ও জামায়াত। সারা বছর ধরেই জামায়াত নিরবে- কখনও সরবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। তবে এবার আরো শক্ত অবস্থানে পুলিশ ও গোয়েন্দারা। তবে অনেকেই বলছেন এটা তাদের পাতানো খেলা হতে পারে। না হয় এতো সুযোগ দিয়েও এখন কেন হঠাৎ ক্ষেপেছে জামায়াতের ব্যাপারে। এবার জামায়াতের কেন্দ্রীয় আমীর ডা শফিকুর রহমানের ছেলেকে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) বোম ডিসপোজাল ইউনিট। এনিয়ে নানান আলোচনা ও সমালোচনা চলছে।
জানাগেছে বুধবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে সিলেট থেকে ডা. রাফাত চৌধুরী নামে ওই আমীর পত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিটিটিসির দাবি, গ্রেপ্তার ডা. রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করছিল। ওই দিন রাতে ডা. রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ডিএমপির সিটিটিসি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত ১ নভেম্বর রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সেজাদুল ইসলাম সাহাব তানিম ওরফে ইসা ওরফে আরাফাত ওরফে আনোয়ার ওরফে আনবির (২৪), মো. জাহিদ হাসান ভূঁইয়া (২১) ও সৈয়দ রিয়াজ আহমদ (২২) নামে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ডা. রাফাত চৌধুরীর নাম আসে।
গ্রেপ্তারকৃত তিনজন জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, আনসার আল ইসলাম সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করছিলেন ডা. রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহ। পরে তারা গত ৬ নভেম্বর ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন। এর ভিত্তিতে আজ দুপুরে সিলেট থেকে ডা. রাফাত চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই তিনজন বলেন, ডা. রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহর পরিবার, বাবা-মার রাজনৈতিক কোনো পরিচয় জানি না। তার বাবা জামায়াত আমির কি না নিশ্চিত নয়। জিজ্ঞাসাবাদে স্পষ্ট হবে।
এদিকে সিটিটিসি জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই ডা. রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহ ধর্মভীরু তরুণদের জিহাদি চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। ২০২১ সালে আরাকানে রোহিঙ্গাদের পক্ষে জিহাদ করার জন্য আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) উভয় সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে হিজরত করেন।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ‘আরএসও’ নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন ডা. রাফাত। ২০২১ সালের জুলাই মাসে রাফাতের নেতৃত্বে সিলেট থেকে ১১ জন একসঙ্গে আরাকানে যাওয়ার জন্য হিজরত করেন বলেও পুলিশ জানিয়েছে। তবে ডা. রাফাতের পরিবারের দাবী এটা পুলিশের সাজানো নাটক। ডা. রাফাত কখনই এ ধরনের কোন উগ্রপন্থী সংগঠনেরসাথে জড়িত নয়। তাকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সিটিটিসি সূত্র জানিয়েছে, ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেট সিলেটের আওয়ামী লীগ নেতা রঞ্জিত সরকারকে হত্যার পরিকল্পনাও করেন তিনি। সিলেটের একটি মসজিদে এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকও করেন। সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যেসব তরুণ নিখোঁজ হয়েছে রাফাত তাদের বাড়ি ছাড়তে ভূমিকা রেখেছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও কিছু তথ্য পাওয়া যাবে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।’
ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম