ডিবি পরিচয়ে তুলে নেয়ার পর ১৫ দিনেও খোঁজ নেই তরুণ ব্যবসায়ীর

0

তৌহিদ খান অংকন নামের এক তরুণকে গুম করা হয় ডিবি পরিচয়ে। এরপর থেকে ১৫ দিনেও তাঁর খোঁজ মিলছে না।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে তুলে নিয়ে গত ১৫ দিন ধরে গুম করে রাখা হয়েছে এক তরুণ ব্যবসায়ীকে। রাজধানীর হাজারীবাগ থানাধীন গণকটুলী এলাকার একটি মেস থেকে এই তরুণ ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ডিবি পরিচয়ে। এরপর থেকে ১৫ দিনেও তাঁর খোঁজ মিলছে না।

ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে গুম করা তরুণের নাম তৌহিদ খান অংকন (২৯)। রাজধানীর সাবেক একটি খ্যাতনামা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষে এখন ব্যবসায়ের সঙ্গে যুক্ত তিনি।

ধারণা করা হচ্ছে, ডিবি ও পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ( সিটিটিসি) এর সদস্যরা তৌহিদ খান অংকনকে তুলে নিয়ে গুম করেছে।

শেখ হাসিনার জঙ্গি নাটকের স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী এখন এই বাহিনী (সিটিটিসি) জঙ্গি তকমা দিয়ে অনেক তরুণকে গুম করছে।

জানা গেছে, গত ১৫ই নভেম্বর দুপুরে হাজারীবাগ থানাধীন গণকটুলী এলাকার একটি মেসে ডিবি পরিচয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় মেসটির মালিক তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করলে তারা নিজেদেরকে ডিবি পুলিশের সদস্য হিসেবে পরিচয়পত্র দেখায়। স্থানীয় লোকজনও এ সময় এগিয়ে এলে তাদেরকেও একই পরিচয় দেয় গুম করা ডিবি পুলিশের সদস্যরা।

পরে গুম হওয়া তরুণের বাবা জাকির হোসেন স্থানীয় হাজারীবাগ থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করতে গেলে ডিবির নাম শুনে পুলিশ জিডি নিতে অস্বীকার করে। এমনকি, জিডি না নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে খোঁজ নিতে বলে হাজারীবাগ পুলিশ।

গুম হওয়া তরুণের পরিবার একাধিকবার ডিবি কার্যালয়ে গেলে তাদেরকে সেখান থেকে কোনো সদুত্তর না দিয়ে ফিরে যেতে বলা হয়। এক পর্যায়ে ডিবি থেকে জানানো হয় যে তৌহিদ খান অংকন নামের কাউকে তারা তুলে আনেনি।

আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে ভিন্নমতের নাগরিকদের রাষ্ট্রীয় বাহিনী ধরে নিয়ে গুমের ঘটনা অহরহ ঘটছে। প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিবিদ এম ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, সাবেক সেনা কর্মকর্তা বিগ্রেডিয়ার আজমী, ব্যারিস্টার আরমানই শুধু নয়, অনেক রাজনৈতিক কর্মীকে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ধরে নিয়ে গুম করেছে।

২০১৩ সালের ডিসেম্বরে র্যাব-১ এর তৎকালীন সিও কিসমতের নেতৃত্বে ঢাকা থেকে এক রাতে ৮ জন বিএনপি ও ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর থেকে তাদের আর খোঁজ নেই। তাদের স্বজনদের মুখেই বর্ণনা রয়েছে কিভাবে বিএনপি ও ছাত্রদলের এই নেতা-কর্মীদের র্যাব ধরে নিয়ে গিয়েছিল ।

গত ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় গুম ও ক্রসফায়ারের নামে বিরোধী নেতাকর্মীদের হত্যা করছে। এই গুম ও ক্রসফায়ারে হত্যার প্রমাণিত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের ৭ জন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আমেরিকা।

র্যাব ও এর সাবেক ৭ কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর এখন গুমের সঙ্গে ব্যাপকভাবে জড়িয়ে পড়েছে পুলিশের বিশেষ শাখা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) এর সদস্যরা।

ভিন্নমতের তরুণদের তুলে নেয়ার পর মাসের পর মাস গুম করে রাখছে সিটিটিসি।

অতীতের মতোই গুমের পর শেখ হাসিনার নির্দেশে সিটিটিসি এখন নোংরা জঙ্গি কার্ড ব্যবহার করে শত শত ভিন্ন মতের তরুণকে গোপন কারাগারে নির্যাতন করা হচ্ছে।

আওয়ামী পন্থী গণমাধ্যম, তথাকথিত দালাল সুশীল সমাজ শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদকে সহায়তা করতে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত এসব ঘটনা নিয়ে মুখ খুলে না।

উৎসঃ আমার দে

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More