‘যুগটা এখন অনেকটাই ফেসবুক কেন্দ্রিক’। তরুন যুবকদের মত প্রকাশের ‘অভয়াশ্রম’ এই ফেসবুকে ‘কেও নেই’, এমন সংখ্যা নেহায়েত অল্পই এখন। এতদিন সেলিব্রেটিরাতো ছিলেনই সেই ধারাবাহিকতায় এখন নিজেদের বিভিন্ন কর্মসুচির জানান দিতে ও নেতা-কর্মী শুভাকাংখীদের সাথে যোগাযোগ বাড়াতে রাজনীতিবিদরাও নিয়মিত থাকছেন ফেসবুকে। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের অনেক মন্ত্রীরাও আছেন এই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। এমন হাইভোল্টেজ অনেক নেতা-মন্ত্রীর ফেসবুক প্রোফাইলে নিয়মিত তাদের নানান একটিভিটি আর ফটোশেসানের আপডেট থাকলেও, শুভাকাংখীদের করা প্রশ্নের বা আবেদনে সাড়া দেবার ঘটনা দেখা যায়না খুব একটা। ক্ষুব্ধ হয়ে অনেকেই তাই মন্তব্য করেন, ‘এদের অনেকেই হয়তো মনে করেন, নিজের আপডেট দেয়াই যথেষ্ট, উত্তরের আবার কি দরকার !’তবে
এমন সব ঘটনা অনেককেই আশাহত করলেও, এবার ‘আশা জাগালেন’ ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। বুধবার রাতে তার ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজে এক অসহায় পঙ্গু যুবকের করুন আবেদনে সাড়া দিলেন তিনি । অসহায় ঐ যুবকের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার ‘প্রতিশ্রুতি’ দেয়া ছোট্ট এই উত্তর দেয়ার ঘটনাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন হাজারো ফেসবুক ব্যবহারকারী ।
আজ তার করা একটি পোস্টে একজন চাকরী প্রত্যাশী ঐ যুবক তার প্রতিবন্ধকতা ও অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে একটি কমেন্ট করেন। কমেন্টে সে নিজেকে প্রতিবন্ধী ও এতিম দাবী করেন। ডিগ্রি পাস ও পোস্ট অফিসের পোস্টাল অপারেটর পদে চাকরীর লিখিত পরীক্ষায় পাস করেছে জানিয়ে চাকরীর জন্য প্রতিমন্ত্রীর কাছে জোর অনুরোধ জানান।যুবক এও জানান, ‘চাকরিটা দিলে আমি বেঁচে যেতাম স্যার’
‘অবাক করার মতো’ বিষয় হলো হাজারো কমেন্টের ভীরে অসহায় ঐ ছেলেটির সকরুন আবেদন চোখ এড়ায়নি প্রতিমন্ত্রীর। তিনি তাৎক্ষনিক ভাবে তাতে সাড়া দিয়ে লিখেছেন যে, ‘তিনি তার এ বিষয়টি দেখবেন’।
ব্যাস, এতটুকুতেই কিন্তু খুশি ঐ অসহায় প্রতিবন্ধী যুবক সহ হাজারো মানুষ।
যেখানে ঘুষ ও তদবির ছাড়া চাকরী হয় না এমন প্রচলিত একটা ধারণা রয়েছে, সেখানে ‘অসহায়’ এক চাকরী প্রার্থীর ফেসবুকের আহ্বানে সাড়া দেওয়ার ঘটনা সত্যিই ব্যতিক্রমী এক আশা জাগায় এমনটাই বলছেন অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী ।
প্রতিমন্ত্রীর এমন আচরণে মুগ্ধ হয়ে , এম ইসমাঈল হোসেন নামে একজন মন্তব্য করেছেন “আলহামদুলিল্লাহ এমন মিনিস্টারই চাই।” পরশ খান নামে একজন লিখেছেন, ‘একেই বলে মন্ত্রী’। এমন শত শত মন্তব্য ।
উল্লেখ্য, এই অসহায় যুবকের করুন আকুতি নিয়ে সম্প্রতি সময়ের কণ্ঠস্বরে প্রকাশিত হয়েছিলো একটি মানবিক প্রতিবেদন। দয়া করে অসহায়, শিক্ষিত এই প্রতিবন্ধি যুবকটির স্বপ্নপুরনে এগিয়ে আসুন শিরোনামে । সেসময় অনেক মানুষ এগিয়ে আসার মানসিকতা নিয়ে মন্তব্যও করেছিলেন। পরে হয়তো তাদের নিজেদের ‘প্রতিবন্ধকতার’ কারনে আর সাহায্য করা হয়নি মশিউলকে।
অনেকেই তাদের মন্তব্যে বলছেন, এবার দেখার বিষয়, সংস্কৃতিমনা ও উদারচিত্তের মানসিকতাসম্পন্ন এই প্রতিমন্ত্রী তার দেয়া ‘ প্রতিশ্রুতি’ কিভাবে পালন করেন।
আমরা বিশ্বাস করি আর সবার চাইতে ব্যতিক্রমটাই করবেন প্রতিমন্ত্রী । সময়ের কণ্ঠস্বর পরিবার ও লাখো পাঠকের পক্ষ থেকেও আলোচিত এই প্রিয়মুখ মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর কাছে সবিনয় অনুরোধ থাকছে, এভাবে অন্তত একজনের করে হলেও অন্ধকার জীবনে আশার আলো জাগাতে সচেস্ট হবেন তিনি । সেই ধারাবাহিকতা শুরু হোক অসহায় প্রতিবন্ধী মশিউল আযম নামের ঐ যুবককে দিয়েই।
প্রসঙ্গত, প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম তার ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজে টেলিযোগাযোগ খাতের আপডেট নানা বিষয় তুলে ধরেন। সেখানে আসা মন্তব্যেও তাকে রিপ্লাই করতে দেখা যায়।