কদিন ধরেই গুঞ্জন উঠেছে, বাবা হচ্ছেন রেলপথমন্ত্রী মজিবুল হক। আসলেই কি বাবা হচ্ছেন সত্তর ছুঁই ছুঁই মন্ত্রী? জানতে চাইলে স্পষ্ট বলেন, ‘না..রে ভাই, এগুলো গুজব। বাবা হওয়ার খুশির খবর গোপন করার কী আছে?’
শুনেছি আপনার স্ত্রী হনুফা আক্তার সিঙ্গাপুরে আছেন? বললেন, ‘কে বলেছে এসব? এই তো, ওতো আমার সামনেই। নিন কথা বলেন তার সঙ্গে।’ বলেই ফোনটি তুলে দেন স্ত্রীর হাতে। কুশল বিনিময় শেষে তিনিও বললেন, ‘অনেকেই ফোন করে জানতে চেয়েছেন। আসলে এমন কিছুই হয়নি। কদিন আগে তিনি (রেলমন্ত্রী) অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, তখন তার সঙ্গে সিঙ্গাপুর গিয়েছিলাম। ফিরেছি তো একসাথেই।’ এবার পাশে বসা মন্ত্রী বলে উঠলেন, ‘এখন সুখবর না থাকলেও সুখবরের অপেক্ষায় আছি। দোয়া করবেন।’ হাসি আটকে রাখতে পারেননি মন্ত্রীস্ত্রী। দোয়া চাইলেন তিনিও।
গেল বছরের ৩১ অক্টোবর ৫ লাখ ১ টাকা দেনমোহরে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মীরাখোলা গ্রামের মেয়ে হনুফা আক্তার রিক্তার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন মুজিবুল হক। বর বার্ধক্যে এসে ঠেকলেও কনে তরুণী। যে কারণে সংসার জীবনের সুখ-সাচ্ছন্দ্য নিয়ে খুতখুতে ভাব ছিল অনেকের মনে। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে বেশ ভালোই আছেন মুজিবুল-হনুফা দম্পতি। জানালেন তারা নিজেই। মন্ত্রী বললেন, ‘খুব ভাল আছি আমরা। হনুফা আমাকে যথেষ্ট বোঝে।’ এবার হনুফার পালা। ‘স্বামী হিসেবে তিনি খুবই ভাল একজন মানুষ। বাইরে অনেকে অনেক কথা বলতে পারে, কিন্তু আমরা তো ভালই আছি।’
‘অসময়ে’ বিয়ে করলেও রেলমন্ত্রীর বিয়েতে গায়ে হলুদ, কনের বাড়িতে বিয়ের আয়োজন, বৌভাত কোনটারই কমতি ছিল না। তিনদিন ব্যাপী আয়োজনে মহাধুমধামেই হয়েছিল বিয়ে। রেলমন্ত্রী নিজেও সেদিন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘ঠিক সময়ে বিয়ে করলে যে উৎসাহ, উদ্দীপনা বোধ করতাম এখন তার কমতি হচ্ছে না। বরং বেশি উৎসাহ বোধ করছি।’
গত বছরের ২৯ অক্টোবর রাজধানীর ফার্মগেটে খামারবাড়ি কৃষি ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে রেলপথমন্ত্রীর গায়েহলুদের অনুষ্ঠান হয়। একই জায়গা কনে হনুফা আক্তারেরও গায়েহলুদ হয়। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও বাড়তি আনন্দ যোগ করেছে সবার মনে। এর দুদিন বাদে ৩১ অক্টোবর কুমিল্লায় কনের বাড়িতে বিয়ে হয়। পরে দু’দফায় কুমিল্লা এবং ঢাকায় বৌ ভাত অনুষ্ঠিত হয়। সরকারদলীয় সংসদ সদস্য, বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা, দলীয় নেতা-কর্মী, মন্ত্রী ও কনের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রীর বিয়েতে।
১৯৪৭ সালের ৩১ মে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের বসুয়ারা গ্রামে মো. মুজিবুল হক জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে তিনি চৌদ্দগ্রাম থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০১২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি রেলপথমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।
অন্যদিকে ১৯৮৫ সালের ২০ মে হনুফা আক্তার ওরফে রিক্তা জন্মগ্রহণ করেন। ২০০১ সালে গল্লাই আবেদা নূর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে রিক্তা এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে এলএলবি পাস করেন। সূত্র: ঢাকা টাইমস
Next Post