বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা আয়াতুল্লাহ বুশরার মুক্তি চেয়ে সরকারের কাছে আকুতি জানিয়েছেন বাবা মঞ্জুরুল ইসলাম।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে এ আকুতি জানিয়েছেন তিনি। মেয়েকে নির্দোষ দাবি করে মঞ্জুরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার মেয়ে সম্পূর্ণ নির্দোষ। নির্দোষ মেয়েটাকে ফাঁসানো হয়েছে। ইতোমধ্যে র্যাব ও ডিবি তদন্তে ওই ঘটনায় আমার মেয়ের কোনও সম্পৃক্ততা পায়নি। সরকারের কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, আমার মেয়েটাকে মুক্তি দিন।’
আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় মেয়ের জামিন আবেদন করতে পারছি না উল্লেখ করে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিশেষ আদালতে জামিন আবেদনের চেষ্টা করছি। কিন্তু আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় আবেদন করতে পারছি না। আদালতে এখন সরকারি ছুটি চলছে।’
কয়েকদিন আগে বুশরার সঙ্গে তার মা দেখা করে এসেছে জানিয়ে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘দেখা করতে গেলে বুশরা তার মাকে বলেছে, “আমি তো মা কোনও দোষ করিনি। আমাকে কেন ফাঁসানো হয়েছে। কেন আমাকে কারাগারে থাকতে হচ্ছে”।’
এক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে গিয়ে ফারদিনের সঙ্গে বুশরার পরিচয় হয়েছিল উল্লেখ করে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘এর বাইরে তাদের মধ্যে অন্য কোনও সম্পর্ক ছিল না। বুশরার ভবিষ্যত নিয়ে আমরা অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। ফারদিনের মর্মান্তিক মৃত্যুতে সবার মতো আমরাও মর্মাহত।’
মেয়ের মুক্তি চেয়ে আকুল আবেদন জানিয়ে এই বাবা আরও বলেন, ‘সরকারের কাছে আমার আকুতি, মেয়েটাকে মুক্তি দিন, নির্দোষ মেয়েটাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সহায়তা করুন। মেয়েটার পড়াশোনা নষ্ট হচ্ছে, স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। দয়া করে তাকে মুক্তি দিন।’
গত ৪ নভেম্বর বিকাল ৩টার দিকে ঢাকার ডেমরা থানাধীন কোনাপাড়ার নিজ বাসা থেকে বুয়েটের আবাসিক হলের উদ্দেশ্যে বের হন ফারদিন। পরদিন থেকে তার খোঁজ মিলছিল না। ওই দিনই রাজধানীর রামপুরা থানায় এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার বাবা কাজী নূর উদ্দিন।
এরপর ৭ নভেম্বর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের লাশ উদ্ধার হয়। ১০ নভেম্বর ফারদিনের বাবা বাদী হয়ে রাজধানীর রামপুরা থানায় হত্যার ঘটনায় মামলা করেন। মামলায় ফারদিন নূরের বান্ধবীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়। সেদিন বুশরাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে ১৬ নভেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতাউল্লাহ।
ওই সময় পুলিশ জানিয়েছিল, ফারদিন বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বান্ধবী বুশরা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে পড়াশোনা করছেন। চার বছর ধরে ওই বান্ধবীর সঙ্গে ফারদিনের যোগাযোগ আছে।