আগামী বেতনের সঙ্গে ছয় মাসের বকেয়াও পাচ্ছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত (বেতন বাবদ সরকারি অনুদান পাওয়া) শিক্ষক-কর্মচারীরা। নতুন জাতীয় স্কেলে বেতন হাতে পেতে যাচ্ছেন তারা। প্রথম দফায় ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বকেয়া টাকা আগামী বেতনের সঙ্গে হাতে পাবেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ বিষয়ে সোমবার অর্থ ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নতুন স্কেল অনুযায়ী আগামী বেতনের সঙ্গেই ছয় মাসের বকেয়া একসঙ্গে পাবেন শিক্ষকেরা। বাকি বকেয়াও শিগগির হাতে পাবেন।
সরকার আগেই প্রজ্ঞাপন জারি করে ঘোষণা করেছিল এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরাও গত বছরের জুলাই থেকে নতুন স্কেলে বেতন পাবেন। কিন্তু বাস্তবে নতুন স্কেলে টাকা হাতে পাচ্ছিলেন না শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ নিয়ে সারা দেশে এ ধরনের প্রায় ৪ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী দুশ্চিন্তায় পড়েন। পাশাপাশি আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
এ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কিছুদিন ধরেই অর্থ মন্ত্রণালয়ে গিয়ে ধরনা দিচ্ছিলেন। কিন্তু এ বিষয়ে আশা দিলেও কবে থেকে এই টাকা ছাড় করা হবে তা বলতে পারেননি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। ফলে শিক্ষক-কর্মচারীদের দুশ্চিন্তা আরো বাড়ে।
অবশেষে আজ এ বিষয়ে প্রায় দুই হাজার ৫৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা ছাড় করে অর্থ মন্ত্রণালয়।
নতুন স্কেল অনুযায়ী এমপিওভুক্ত কলেজের একজন প্রভাষকের মূল বেতন হচ্ছে ২২ হাজার টাকা (নবম গ্রেড)। এত দিন তারা ১১ হাজার টাকা পেয়েছেন। সহকারী অধ্যাপকেরা পাবেন ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা (ষষ্ঠ গ্রেড)। এত দিন পেয়েছেন ১৮ হাজার ৫০০ টাকা। আর অধ্যক্ষদের হবে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। এত দিন পেয়েছেন ২৫ হাজার ৭৫০ টাকা। আর বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের মূল বেতন হচ্ছে দশম গ্রেডে ১৬ হাজার টাকা। এত দিন পেয়েছেন আট হাজার টাকা। জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষকের বেতন হবে ২২ হাজার টাকা (নবম গ্রেড)। এত দিন পেয়েছেন ১১ হাজার টাকা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হিসাবে বর্তমানে সারা দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে প্রায় ৪ লাখ ৬৭ হাজার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) অধীন ও সাড়ে ১৩ হাজার কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন। তারা মূল বেতনের শত ভাগ সরকার থেকে পেয়ে থাকেন। এসব শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা বাবদ প্রতি মাসে রাষ্ট্রের ব্যয় হয় ৬০০ কোটির কিছু বেশি টাকা। নতুন স্কেলে বেতন দেয়া হলে প্রতি মাসে আরো প্রায় ৪০০ কোটি টাকা লাগবে।