আলেমদের তীব্র নিন্দা

0

alem[ads1]শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল। শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় কেটেছে বাংলাদেশ। আতঙ্ক আর ভয়ের ছাপ বিরাজ করেছে সর্বত্র। সাধারণ মানুষকে জিম্মী করে এ ধরনের হামলা কখনো কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন আলেম বিশ্লেষকরা। আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোরক ডটকমকে টেলিফোনের মাধ্যমে তারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। বলেছেন, এ ধরনের ঘটনার মাধ্যমে দেশ স্বাধীনতা ও ইসলামের সৌন্দর‌্য বিলীন হবে। বিষয়টি নিয়ে ৬ জন আলেম বিশ্লেষকের মতামত তুলে ধরা হলো।

এ হামলা লাখ আলেমের ফতোয়ার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া বলেই মনে হয়
মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ
চেয়ারম্যান, জমিয়তুল উলামা বাংলাদেশ

11_45027গুলশানে ভয়াবহ এ হামলায় সন্ত্রাসীরা রমজানের পবিত্রতা লঙ্ঘন করেছে। বিদেশিরা আমাদের দেশে মেহমান হিসেবে এসেছে, তাদের এভাবে হত্যা করা ন্যাক্কারজনক।আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।
কদিন আগেই আমরা জঙ্গিবাদ বিরোধী ১ লাখ আলেমের ফতোয়া প্রকাশ করেছি। আমি মনে করি জঙ্গিদের এ হামলা সেই ফতোয়ারই একটা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া। এটি জঘন্য মানসিকতা এর মাধ্যমে ইসলাম কলুষিত হচ্ছে। দেশের বদনাম হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সবাইকে সার্বিকভাবে প্রতিরোধ করার অনুরোধ জানাই।

.
এর পেছনে ইমলামবিদ্বেষী চক্র কাজ করতে পারে
মুফতি মাহফুজুল হক
মহাসচিব, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস

mahfuzul haqগুলশানে ভয়াবহরকম হামলা হয়ে গেল। যাতে সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রথম কথা হচ্ছে এভাবে হামলার দ্বারা দেশকে বড় ধরনের হুমকির মুখে ফেলা হচ্ছে। যারা এভাবে হামলা করে মানুষ হত্যা করছে তারা ইসলামের প্রকৃত কল্যাণকামী নয়। আরো একটি বিষয় হতে পারে তা হলো এই ঘটনার পেছনে ইমলামবিদ্বেষী কোনো চক্র কাজ করতে পারে। যারা মূলত মানুষকে ইসলামবিদ্বেষী করে তোলার জন্য কাজ করছে।

.

আল্লাহু আকবার বলে শূকর জবাই করলেই সেটা হালাল হবে না
মাওলানা ইমতিয়াজ আলম
কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

imtiaj alamআল্লাহু আকবার বলে কোন কিছু হালাল করতে চাইলেই তা হালাল হয়ে যাবে না। আল্লাহু আকবার বলে শূকর জবাই করলে যেমন শূকর হালাল হবে না তেমনি মসজিদে নামাজ পড়ার সময়ে আল্লাহু আকবার বলে মসজিদের বহিরাগতদের আল্লাহু আকবার বলে হত্যা কোন ক্রমেরই ইসলাম সম্মত নয়। এরা ইসলামের ছদ্মবেশে ইসলাকে কলুষিত করার চেষ্টা করছে। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ইসলাম কোন ক্রমেই সমর্থণ করে না।
এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বন্ধে সরকারকে আরও জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে। আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে সরকারকে প্রমাণ করতে হবে বাংলাদেশ কোন জঙ্গি দেশ নয়। এ দেশকে জঙ্গি ষড়যন্ত্র মুক্ত রাখার জন্য সরকারের সঙ্গে জাতীয় মহলেরও সুদৃঢ় ঐক্য বজায় রাখতে হবে।[ads2]

.
ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তারা ইসলামের স্লোগান ব্যবহার করছে
মুফতি মুহাম্মদ ফয়জুল্লাহ
মহাসচিব, ইসলামী ঐক্যজোট

mufti-foyjullahগুলশানে যে ঘটনা ঘটেছে আমি মনে করি এটা রাজনৈতিক বিষয় না। এটা দেশের বিষয়, দেশ রক্ষার বিষয়। বাংলাদেশকে সফল দেশ বলবেন নাকি ব্যর্থ দেশ বলবেন এটা এমনই একটা বিষয়। অতএব এখানে দোষারোপ নয়, দোষারোপটা রাজনৈতিকও নয়। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে রক্ষা করতে হবে। কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে আমি সুনির্দিষ্টভাবে এখনও কিছুই বলতে পারব না। দেখতে হবে আমাকে। নারায়ে তাকবির ও জয়বাংলা বলে অনেক জায়গায় হামলা হচ্ছে। জয়বাংলা বলে হামলা করলেই সরকার দলের লোক হওয়া বোঝায় না, আবার ইসলামের স্লোগান দিযে কোন হামলা করলে সেটাও ইসলামের কাজ হয়ে যায় না। হতে পারে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের একটি উন্মত্ত চেহারা তুলে ধরা, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ধূরভিসন্ধি হিসেবে ইসলামের স্লোগান তারা ব্যবহার করতে পারে। আমরা মনে করি না যে এটার সাথে ইসলামের কোন শক্তি জড়িত। কোন ইসলামি শক্তি এভাবে অন্যায়ভাবে কাজ করতে পারে না। বুখারি শরিফের হাদিসে আছে, যে অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা কররে, সে মুসলিম বা অমুসলিম হোক জান্নাতের খোশবুও পাবে না।’

দেশের স্বাধীনতা ও ইসলাম রক্ষায় সবার ঐক্য এখন সময়ের দাবি
শাইখুল হাদিস মঞ্জুরুল ইসলাম
যুগ্ম মহাসচিব, জমিয়তের উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ

monjurul islamইসলাম শান্তির ধর্ম। মানবতার ধর্ম।ইসলাম অন্যায়ভাবে হামলা-হত্যাযজ্ঞ সমর্থন করে না। ইসলামের নামে কোন স্বার্থান্বেষী মহল ছক আঁকা পরিকল্পনায় হেঁটে স্বার্থ উদ্ধার করতে চাইলে সেটা হবে অনাকাঙ্ক্ষিত ও রহস্যজনক। দেশে শান্তি, নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হয় এমন কোন কাজ বা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা হুমকির সম্মুখীন হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত। আমি এ ঘটনায় মর্মাহত। জাতির ভবিষ্যতের ব্যাপারে শঙ্কিত ও ভীষণ উদ্বিগ্ন। দেশের স্বাধীনতা ও ইসলামের সৌন্দর্য রক্ষায় দলমত নির্বিশেষে সবার ঐক্য এখন সময়ের দাবি। একটা বিষয় ভেবে দেখার ও স্বচ্ছ হওয়ার ব্যাপারে সবার বিশেষ করে সরকারের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির কাছে আমরা দাবি রাখি, ইসলামকে কলুষিত করে কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটার পর কেউ দায় স্বীকার করলে বা কেউ কারও উপর দায় চাপিয়ে দিলে এ ধরনের ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান হবে না। যথাযথ তদন্তের পর চিহ্নিত অপরাধীকে শাস্তির সম্মুখীন করা হোক তাহলে আর দেশে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটবে না।[ads2]

প্রতিটি পরিবারকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে
মুফতি এনায়েতুল্লাহ
সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরাম

mufti anaytullahগুলশানে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি অন্য ঘটনাগুলোর মতই একটি ঘটনা। এমন ঘটনা ইতোপূর্বে আমেরিকায়ও হয়েছে। তুরস্কেও ঘটেছে। তবে বাংলাদেশের জন্য এটি নতুন। বিষয়টি দুঃখজনক। শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নয়, প্রতিটি পরিবারকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। দেশে ১৬ কোটি মানুষ। একটি পরিবারে ৪জন সদস্য থাকলে দেশে ৪ কোটি পরিবার আছে। এ ৪কোটি পরিবারকেই অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়ানোর জন্য নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। এ জাতীয় কোন ঘটনায় ঢালাওভাবে কারও উপর দোষ চাপিয়ে দেওয়া একটি রীতিমত হাস্যকর ব্যাপার। স্বার্থান্বেষী মহল এ থেকে স্বার্থ উদ্ধার করতে চায়। আমি আজ সকালেও বলেছি, এ ঘটনায় আমেরিকার সাহায্যের প্রয়োজন নেই। ৪ কোটি পরিবার সচেতন ও নৈতিকভাবে শিক্ষিত হওয়াই যথেষ্ট। পরিবারের অভিভাবকদের খোঁজ রাখতে হবে ছেলেমেয়ে কী করে? কাদের সাথে মিশে। অতীতে একসঙ্গে ৬৩ জেলায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তাদের বিচার হয়েছে। এদেরও বিচার হবে।[ads1]

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More