‘ধনীরা দুলালরা কেন জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডে, ভাবতে হবে রাষ্ট্রকে’ (ভিডিও)

0

Jongiবিশ্বব্যাপী জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী বেসরকারি সংস্থা মার্কিন সংস্থা ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ’-এর ওয়েবসাইটে গুলশানের রেস্তোরাঁয় ‘হামলাকারীদের’ ছবি প্রকাশ করার পর তাদের পরিচয় বেরিয়ে আসছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।[ads1]

ঢাকায় ইংরেজি মাধ্যমের নামি স্কুল স্কলাসটিকা কিংবা মালয়েশিয়ার মোনাশ ইউনিভার্সিটিতে তাদের লেখাপড়া। মাদ্রাসা থেকে পড়ে আসা ‘উগ্রপন্থি’ তারা নন।

যে পাঁচ জঙ্গির ছবি আইএসআইএল প্রকাশ করেছে, তাদের মধ্যে একজন নিব্রাস ইসলাম নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। ধনী পরিবারের সন্তান নিব্রাস ইসলাম পড়েছেন ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল টার্কিশ হোপ স্কুলে। সে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক মোনাশ ইউনিভার্সিটির মালয়েশিয়া ক্যাম্পাসে ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট সার্ভিসেসের কোষাধ্যক্ষ ছিল।

মোনাশে ভালো না লাগায় দেশে ফিরে নিব্রাস ভর্তি হন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার আগ্রহ ছিল ফুটবলে। ওয়ারি আর উত্তরায় বাড়ি আছে তার ব্যবসায়ী বাবার।

নিব্রাসের তিন চাচার মধ্যে একজন সরকারের উপ-সচিব, একজন পুলিশ কর্মকর্তা, আরেকজন বিজ্ঞানী।

আরও দুজনের পরিচয় ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন পরিচিতজনরা, তারা স্কলাসটিকা স্কুলের সাবেক ও বর্তমান ছাত্র। মীর সামেহ মুবাশ্বের ও রোহান ইমতিয়াজ নামের এই দুই তরুণ বেশ কিছুদিন ধরে নিখোঁজ বলে পরিবারের ভাষ্য।[ads2]

মুবাশ্বেরের বাবা মীর হায়াত কবির অ্যালকাটেল-লুসেন্ট বাংলাদেশের কর্মকর্তা। মা খালেদা পারভীন সরকারি কলেজের শিক্ষক। বড় ভাই পড়ছেন কানাডার টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে।

মুবাশ্বের ‘এ লেভেল’ পরীক্ষার আগে গত মার্চে নিখোঁজ হন বলে থানায় জিডি করা হয়। সে সময় সংবাদপত্রেও সেই খবর আসে।

আর রোহানের বাবা ইমতিয়াজ খান বাবুল ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক, বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল এবং বাংলাদেশ সাইক্লিস্ট ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি।

২০ বছর বয়সী রোহান স্কলাসটিকা শেষ করে পড়ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে। তার মাও নামি একটি স্কুলের শিক্ষক। পরিবারের অভিযোগ, জানুয়ারি থেকে রোহান নিখোঁজ, থানায় জিডিও হয়েছে।

সমাজের ধনীর দুলাল ইংরেজী মাধ্যমে পড়ুয়া এসব যুবকরা কেন কিভাবে এরকম ভয়ংকর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জীবন দিতে উজ্জীবিত হয়েছে সেটা এখন সমাজ বিজ্ঞানীদের ভাবতে হবে। তবে এ ব্যাপারে সরকারকেই কারণ চিহ্নিত করতে হবে এবং সামাজিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও পারিবারিক পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে বলে মনে করেন সচেতন নাগরিক সমাজ।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থট (বি আই আই টি) ‘র সহকারী পরিচালক হোসেন মোহাম্মদ শফিকুর রহমান রেডিও তেহরানকে বলেন, এসব কাজে কারা যুবকদের প্রলুব্ধ করছে তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব মূলত রাষ্ট্রের।

তিনি বলেন, উগ্র ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার সুযোগ বাংলাদেশের সমাজে ছিল না। এটা কারা কিভাবে আমদানি করছে সে ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় ও পারিবারিক পর্যায়ে সতর্কতা থাকা জরুরি।[ads2]

এ প্রসঙ্গে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর কবিরও মনে করেন, বিত্তবান পরিবারের যুবকদের সন্ত্রাসের পথে যাওয়া ঠেকাতে রাষ্ট্রকে অধিকতর সতর্ক হতে হবে। একই সাথে তাদের পরিবারকেও এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল হতে হবে।

ঢাকার কূটনীতিকপাড়া গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে শুক্রবার সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের পাঁচজন পুলিশের খাতায় জঙ্গি হিসেবে তালিকাভূক্ত ছিল বলে জানিয়েছেন, পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক। তাদের খোঁজা হচ্ছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি।

পুলিশ এই পাঁচজনের নাম বলেছে- আকাশ, বিকাশ, ডন, বাঁধন ও রিপন। তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানানো হয়নি।

আর আইএস এর বরাতে সাইট ইন্টেলিজেন্স পাঁচ হামলাকারীর নাম বলেছে- আবু উমায়ের, আবু সালমা, আবু রাহিক, আবু মুসলিম ও আবু মুহারিব।[ads2]

সূত্রঃ পার্সটুডে

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More